কন্টেইনার বিস্ফোরণেও জারগুলো পুড়ল না কেন?

153

নিজস্ব প্রতিবেদক

সীতাকুন্ডের বিএম কন্টেইনার ডিপোতে রক্ষিত ছিল ২৭টি হাইড্রোজেন পারঅক্সাইডের কন্টেইনার। যার মধ্যে একটি কন্টেইনার বিস্ফোরিত হলেও বাকি ২৬টি অক্ষত ছিল। তবে আগুনে পুড়েছে কন্টেইনারগুলো। শুধুমাত্র একটি ছাড়া বাকি কন্টেইনারগুলো বিস্ফোরিত না হওয়া এবং ভয়াবহ আগুনেও নীলরঙের ক্যামিকেল ভর্তি জারগুলো পুড়ে না যাওয়ায় সন্দেহ বেড়েছে। যে কারণে এটি নাশকতা কিনা তা খতিয়ে দেখার দাবি জানিয়েছে বিএম ডিপো কর্তৃপক্ষ।
বিএম কন্টেইনার ডিপোর পরিচালক মুজিবুর রহমান বলেন, ‘একটি কন্টেইনার বিস্ফোরিত না হলে কোনোভাবেই মানুষ হতাহত হতো না। ডিপোতে ক্যামিকেল ভর্তি ২৭টি কন্টেইনার থাকলেও আগুনে একটি ছাড়া বাকি কন্টেইনারগুলো কেন বিস্ফোরণ হয়নি সে প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হবে। এটি কোনো নাশকতা কিনা প্রশাসনকে খতিয়ে দেখার অনুরোধ জানাচ্ছি। তাছাড়াও বিস্ফোরিত কন্টেইনার ছিন্নবিচ্ছিন্ন হলেও কন্টেইনারের ভেতরে থাকা ক্যামিকেলভর্তি জারগুলো ফেটে গেলেও ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়নি। এতবড় আগুনেও প্লাস্টিকের জারগুলো পুড়ে যায়নি।আমাদের ধারণা সাবোটাজ করে কোনোপক্ষ ঘটনাটি ঘটিয়েছে।’
সরেজমিনে দেখা যায়, আগুন কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসার পর ডিপোর মাঠেই ছড়িয়ে ছিল বেশকিছু নীলরঙের জার। কন্টেইনারে থাকাবস্থায় প্রতিটি জারে ৩০ কেজি ক্যামিকেল ছিল। বেশিরভাগ জারের গায়ে ফাটাছেঁড়া থাকলেও এগুলো আগুনে পুড়েনি। কন্টেইনার বিস্ফোরণের পর স্প্রিন্টারের আঘাতে বহু লোক হতাহত হলেও জারগুলো পুড়ে না যাওয়ায় হতবাক হয়েছেন অনেকেই। উদ্ধারকাজে থাকা ব্যক্তিরাও এতবড় ভয়াবহ আগুনে জারগুলো না পুড়ে অক্ষত থাকায় হতবাক হয়েছেন। ইতোমধ্যে জারগুলো না পোড়ার কারণ অনুসন্ধানে নেমেছে কয়েকটি সংস্থা। সাধারণ মানুষের মধ্যে এ নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে।
সীতাকুন্ড এলাকার বাসিন্দা আব্দুর রশিদ বলেন, আগুনে যেভাবে কন্টেইনার বিস্ফোরিত হয়ে এত মানুষ হতাহত হয়েছে সেখানে কন্টেইনারের ভেতর থাকা জারগুলো টুকরো টুকরো হয়ে যাওয়ার কথা। এক্ষেত্রে তা হয়নি। আবার প্লাস্টিক জারগুলো আগুনেও পুড়েনি। এটি নিছক দুর্ঘটনা নয়, কেউ ইচ্ছে করে এ ঘটনাটি ঘটিয়েছে কিনা তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের প্রফেসর ড. এ.এইচ রাশেদুল হোসাইন পূর্বদেশকে বলেন, হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড বাতাসের সাথে সম্পর্ক হলেই নিজেই জ্বলবে। যে জারগুলো পুড়েনি বলা হচ্ছে সেগুলো হয়তো আগুনে উত্তপ্ত হয়নি। পানি ছিটানোর কারণে ঠান্ডাও থাকতে পারে। বিস্ফোরণের পর জারগুলোতে ফায়ার সার্ভিসের পানি থাকায় হয়তো আগুন তেমন ক্ষতি করতে পারেনি। তবে এতবেশি আগুনেও জারগুলো পুড়েনি কেন তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।