কক্সবাজারে হোটেল-মোটেল জোনে টর্চার সেল, উদ্ধার ৪

31

কক্সবাজার প্রতিনিধি

কক্সবাজারের হোটেল-মোটেল জোনে টর্চার সেলের সন্ধান মিলেছে। যেখান থেকে চার জনকে জিম্মিদশা থেকে উদ্ধার করেছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। গত রোববার (৭ আগস্ট) রাত ১১টা থেকে গতকাল সোমবার ভোর ৪টা পর্যন্ত ঘটনাস্থলের আশপাশে অভিযান চালিয়ে দালাল সন্দেহে ১১ জনকে আটক করা হয়েছে।
গতকাল সোমবার দুপুরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেন ট্যুরিস্ট পুলিশের কক্সবাজার জোনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম। তিনি জানান, কক্সবাজার শহরের কলাতলীর কটেজ জোন এলাকায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান শুরু করা হয়। অভিযানকালে সাইনবোর্ড ছাড়া শিউলি কটেজ হিসেবে পরিচিত একটি প্রতিষ্ঠানে গেলে তালাবদ্ধ দেখা যায়। তালা খুলতে বলার পরও না খোলায় তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে দেখা যায়, সংঘবদ্ধ অপরাধীরা বিকল্প একটি পথে পালিয়ে যায়। এ সময় একটি কক্ষে জিম্মিদশা থেকে উদ্ধার করা হয় চার জনকে। একইসঙ্গে ওই কক্ষ থেকে নির্যাতন করার নানা উপকরণও জব্দ করা হয়। কক্সবাজারে এমন আরও সাইনবোর্ড বিহীন ২০-৩০টি কটেজ আছে। সংঘবদ্ধ একটি দুর্বৃত্তচক্র এই কটেজগুলোকে ‘টর্চার সেল’ হিসেবে ব্যবহার করে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা। কটেজ থেকে উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন- কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের দক্ষিণ ডিককূল এলাকার হেলাল উদ্দিনের ছেলে ইফাজ উদ্দিন ইমন (১৭), একই এলাকার বেলাল আহমদের ছেলে আব্দুল্লাহ আল মামুন (১৫), টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ এলাকার নূর মোহাম্মদের ছেলে দীল মোহাম্মদ (১৭) এবং চট্টগ্রাম জেলার সাতকানিয়া উপজেলার ফয়েজ আহমেদের ছেলে মো. ইমরান (১৯)।
পুলিশ জানিয়েছে, দীল মোহাম্মদ ও ইমরান উখিয়া উপজেলার পালংখালী স্টেশনের একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের কর্মচারী। তারা রোববার সকালে কক্সবাজার বেড়াতে এসে রাত্রিযাপনের জন্য ‘শিউলি’ নামের কটেজে উঠে। বাকি দুজন শহরে চিকিৎসা করাতে এসেছিলেন।
এ সময় আটককৃতরা হলেন- মো. আলমগীর (৪৫), মো. সেলিম (২০), আকাশ দাস (২৩), মো. জোবায়ের (২৮), মো. মামুন (২২), নাজির হোসেন (২৮), সেকান্দর আলী (২৮), মো. সোহেল (৩০), মো. জাহাঙ্গীর আলম(৩৩), মো. জসিম (২৭) ও মো. পারভেজকে (২৫)।
উদ্ধার ব্যক্তিদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, রোববার রাতে কক্সবাজার শহরের আবাসিক কটেজ জোনে কম ভাড়া কক্ষ খুঁজছিলেন তারা। এ সময় দালালরা তাদের এই কটেজে নিয়ে যায়। সেখানে লোকজন ছিল খুবই কম। পুরুষ পাঁচ থেকে ছয়জন আর নারী তিন থেকে চারজন।
একপর্যায়ে চারজনকে আটকে নারীদের সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় ছবি তুলে মোটা অংকের টাকা দাবি করা হয়। হাতিয়ে নেওয়া হয় সঙ্গে থাকা টাকা ও মোবাইল ফোন। পরে আরও টাকার জন্য তাদের ওপর নির্যাতন চালান হয়।
রেজাউল করিম জানান, এরকম আরও কয়েকটি কটেজে জিম্মি করে নির্যাতনের তথ্য রয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।