আসামিরা পালিয়ে যান অভিযানের আগেই!

81

শীর্ষ ঋণখেলাপীদের গ্রেপ্তারে সিএমপি কমিশনারকে নির্দেশ দিয়েছেন অর্থঋণ আদালত। তাদের গ্রেপ্তারে পুলিশের ভূমিকা সন্তোষজনক নয়। অর্থঋণ আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলেও পুলিশ আসামিদের বেশিরভাগকেই গ্রেপ্তার না করায় মামলা জট তৈরি হচ্ছে। গত সোমবার আদালতের বিচারক মুজাহিদুর রহমান এ নির্দেশনা দিয়েছেন। আদেশের বিষয়টি অর্থঋণ আদালতের সেরেস্তাদার মোহাম্মদ মুক্তাদির মাওলা নিশ্চিত করেন।
অর্থঋণ আদালত থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি থেকে ৯ মাসে চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালত থেকে ১ হাজার ৩৭৩টি ওয়ারেন্ট ইস্যু করা হয়েছে। নির্দেশনায় বলা হয়, ‘ঋণখেলাপী বা আদায় কার্যকর করার লক্ষ্যে ২০০৩ সালে বিশেষ আদালত হিসেবে অর্থঋণ আদালত প্রতিষ্ঠা করা হয়। কিন্তু আদালতের পর্যবেক্ষণে এসেছে, শীর্ষ ঋণখেলাপীদের বিরুদ্ধে এই আদালত থেকে ইস্যুকৃত গ্রেপ্তারি পরোয়ানাগুলো যথাসময়ে তামিল না হওয়ায় দায়েরকৃত মামলাগুলো যথা সময়ে নিষ্পত্তি করা যাচেছ না।’
আদালতের আদেশে বলা হয়, ‘ঋণ খেলাপীদের গ্রেপ্তার না করায় বিশেষ আদালত প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য পূরণ হচ্ছে না। তাই এই আদালত থেকে ইস্যুকৃত চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের আওতাধীন থানাগুলোতে পেন্ডিং থাকা ওয়ারেন্টসমূহ তামিল নিশ্চিত করতে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারকে নির্দেশ প্রদান করা গেল।’
পূবালী ব্যাংকের সিডিএ শাখা সাজলি স্টিল ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেড কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারে পরোয়ানা জারি থাকাবস্থায় পূবালী ব্যাংক লি. এর পরিচালনা পর্ষদ ৭ শতাংশ সরল সুদে ৭ বছরে ২৩ টি ত্রৈমাসিক কিস্তিতে ৮ কোটি ৭২ লাখ ১ হাজার ৯২ টাকা পরিশোদের সুযোগ দিয়ে আদালতে সোলেনামা দাখিল করে। সুদ মওকুফ পূর্বক ঋণ পরিশোধের সোলেনামা সন্তোষজনক না হওয়ায় নামঞ্জুর করেছে আদালত। অর্থঋণ আদালত বলছেনে, ‘অর্থঋণ আদালত আইনের ৩৮ ধারা এবং ৪৫ ধারায় ডিক্রিকৃত টাকা পরিশোদের আপস মীমাংসার সুযোগ রাখা হলেও ৪৫(২) ধারায় আইনে নির্ধারিত সময় সীমার মধ্যে তা করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
আদালতের পর্যবেক্ষণে আরও বলা হয়, ‘আসামির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী তিনি ২০১১ সালেই ন্যুনতম ৫০০ কোটি টাকা মূল্যের সম্পত্তি অধিকারী ছিলেন। কিন্তু দীর্ঘ ১২ বছরেও তারা ব্যাংকের টাকা পরিশোধের কোন ইচ্ছা পোষণ করেনি। অধিকন্তু আদালতের সাথে প্রতারণা করেছেন।’ উক্ত আদেশের কপি পূবালী ব্যাংক এর চেয়ারম্যান বরাবর প্রেরণ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংককে নজরদারি বাড়ানোর তাগিদ দিয়ে আদালত বলেন, ‘খেলাপী ঋণ আদায়ে ব্যাংকগুলোর এরকম নমনীয়তা এবং উদাসীনতা ব্যাংকিং খাতকে নাজুক অবস্থায় নিয়ে গেছে। জাতীয় অর্থনীতির ভিত্তিকে দুর্বল করে দিচ্ছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নজরদারি বাড়ানো প্রয়োজন বলে মনে করছেন আদালত।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমশিনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর বলেন, ‘র্অথঋণ আদালতের আসামিরা তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তরে পরোয়ানা জারির বিষয়টি আগেই জেনে যায়। ফলে পুলিশি অভিযান পরিচালনার আগেই তারা পালিয়ে যান।’