আরবি হরফে বাংলা লেখার প্রয়াস

19

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৯৪৮ সালের ৮ এপ্রিল পূর্ববাংলা আইনসভার অধিবেশনে বাংলাকে কেবলমাত্র পূর্ববাংলার সরকারি ভাষারূপে ঘোষণা করা হয়। অথচ, রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের সাথে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দীনের চুক্তিমতো কথা ছিল বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার সুপারিশ করা হবে। খাজা নাজিমুদ্দীন রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদকে তার দেয়া ওয়াদা ভঙ্গ করেন।
এদিকে আবার পূর্ববাংলা সরকার নিয়োজিত ‘পূর্ববঙ্গ ভাষা কমিটি’ কর্তৃক ১৯৫০ সালের ৭ ডিসেম্বর পেশকৃত রিপোর্টে পূর্ববাংলার স্কুলে উর্দুকে দ্বিতীয় ভাষারূপে পাঠ্য করার সুপারিশ করা হয়। শুধু তাই নয়, ‘কেন্দ্রীয় পাকিস্তান শিক্ষা উপদেষ্টা বোর্ড’ পাকিস্তানের সব ভাষা আরবি হরফে লেখার সুপারিশ করে। পশ্চিম পাকিস্তানের সব ভাষা আগে থেকেই আরবি হরফে লেখার উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। এখন তারা বাংলা ভাষার হরফ পরিবর্তন করে আরবি হরফে লেখার উদ্যোগ গ্রহণ করে। পাকিস্তান সরকার পূর্ব বাংলায় আরবি হরফে বয়স্কদের বাংলা ভাষা শিক্ষাদানের জন্য বিশটি কেন্দ্র চালু করে এবং বেশ কিছুকাল ঐ অদ্ভুত কাজের জন্য প্রচুর অর্থ ব্যয় করে। সরকারের এ ধরনের উদ্যোগ প্রবল বিরোধিতার সম্মুখীন হয়ে অচিরেই ব্যর্থ হয়।
১৯৪৮ সালের পর থেকে ১৯৫১ সাল পর্যন্ত ছাত্ররা প্রতিবছর ১১ মার্চ ‘রাষ্ট্রভাষা দিবস’ পালন করত। বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার প্রশ্নে পাকিস্তান সরকারের নেতিবাচক মনোভাব বুঝতে পেরে পূর্ববাংলার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে জনমত সংগঠিত করার প্রচেষ্টা গ্রহণ করে। বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের মেনিফেস্টোতে অন্তর্ভুক্ত করে।