আমির হামজার ছেলেকে ‘তিরস্কার’

23

পূর্বদেশ ডেস্ক

স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য বাবা আমির হামজার বিষয়ে ‘অসত্য ও ভুল তথ্য দিয়ে’ আবেদন করায় উপ-সচিব মো. আছাদুজ্জামানকে ‘তিরস্কার’ করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা বলেন, “উপ সচিবের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার রায় হয়েছে। ওনাকে তিরস্কার দন্ড দেওয়া হয়েছে।” এর ফলে ওই উপ সচিব এক বছর কোনো পদোন্নতি ‘পাবেন না’ বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
মো. আছাদুজ্জামান ২৪তম বিসিএসের প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা। বর্তমানে উপ-সচিব পদমর্যাদায় খুলনা জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত। দুই সপ্তাহ আগেই এ ‘লঘুদন্ড’ দেওয়া হয়। এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটেও তা দেওয়ার কথা রয়েছে। খবর বিডিনিউজের
গত ১৫ মার্চ স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য ১০ ব্যক্তি ও এক প্রতিষ্ঠানের নাম প্রকাশ করা হয়েছিল। নাগরিক মহলে অচেনা আমির হামজার নাম সেখানে দেখে অনেকে বিস্ময় প্রকাশ করেন।
এ সময় বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনে উঠে আসে, ১৯৭৮ সালে একটি খুনের মামলার প্রধান আসামি ছিলেন আমির হামজা। ওই মামলায় তার যাবজ্জীবন সাজা হলেও পরে ‘রাজনৈতিক বিবেচনায়’ সাধারণ ক্ষমা পান তিনি। ২০১৯ সালে মারা যাওয়া আমির হামজাকে স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারি কর্মকর্তা ছেলে আছাদুজ্জামানের তৎপরতার কথাও আসে সংবাদ মাধ্যমে।
আবেদনে ‘অসত্য ও ভুল’ তথ্যের পাশাপাশি তথ্য ‘গোপন করায়’ দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান স্বাধীনতা পুরস্কারের তালিকা থেকে প্রয়াত আমির হামজাকে বাদ দেওয়া হয়।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক তখন বলেছিলেন, “যারা তথ্য গোপন করেছে, ভুল তথ্য, অসত্য দিয়েছে, সে ব্যাপারেও আমরা দেখব ইনশাআল্লাহ।”
রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ এই বেসামরিক পুরস্কারের ক্ষেত্রে ‘স্বাধীনতা পুরস্কার সংক্রান্ত নির্দেশাবলী’ অনুসরণ করার কথা। নির্দেশিকায় বলা হয়, মন্ত্রণালয় বা বিভাগের থেকে প্রস্তাবের ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয় বা বিভাগের সচিব প্রস্তাবে স্বাক্ষর করবেন। এ বছর আমির হামজার নাম সাহিত্যে স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য প্রস্তাব করেন বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ।
বাবার ফৌজদারি মামলার দন্ডপ্রাপ্তির বিষয়ে ‘তথ্য গোপন’ করে ‘স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২২’ দেওয়ার জন্য আবেদন করেন ছেলে মো. আছাদুজ্জামান। এ নিয়ে বিভাগীয় মামলা হয় এবং অভিযোগ বিবরণী জারি করা হয়।
ব্যক্তিগত শুনানিসহ সব ধরনের প্রক্রিয়া শেষে এ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তিরস্কার করে লঘুদÐ দেওয়া হয়।