আওয়ামী লীগের অর্ধডজন নেতার লবিং-তদবির

53

রাহুল দাশ নয়ন

বোয়ালখালী উপজেলা পরিষদে শূন্য হওয়া চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ১৬ মার্চ। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই প্রার্থীদের নড়াচড়া বেড়েছে। ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী অধিকাংশ নেতা ঢাকায় অবস্থান করছেন। এখনো আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন ফরম বিতরণ শুরু না হলেও নেতাদের মনজয় করতে চেষ্টা চালাচ্ছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। বিশেষ করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এবং বোয়ালখালী আসনের সংসদ সদস্য মোছলেম উদ্দিন আহমদের আর্শীবাদ নিয়েই বোয়ালখালী উপজেলার মনোনয়ন ভাগিয়ে নিতে মরিয়া প্রার্থীরা। মনোনয়ন প্রত্যাশী সম্ভাব্য প্রার্থীরা হলেন- বোয়ালখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল আমিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রাজা, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান এসএম সেলিম, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবুল বশর, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি রেজাউল করিম বাবুল, দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এসএম বোরহান উদ্দিন ও প্রয়াত উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল আলমের ছেলে রাশেদুল আলম সুমন। আগামী ১৬ মার্চ বোয়ালখালী পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ সময় ১৯ ফেব্রুয়ারি, বাছাই ২০ ফেব্রুয়ারি এবং প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৭ ফেব্রুয়ারি। বোয়ালখালী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল আলম গত ২০ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেন। গত ৪ জানুয়ারি স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ সচিব মাহবুবা আইরিন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদ শূন্য ঘোষণা করা হয়। সর্বশেষ ২০১৯ সালের ২৪ মার্চ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
বোয়ালখালীর ভোটাররা বলেন, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বোয়ালখালী আসনের সংসদ সদস্য মোছলেম উদ্দিন আহমদ দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। কে মনোনয়ন পাচ্ছেন তা অনেকখানি নির্ভর করছে উনার ইচ্ছের উপর। এই সাংসদের অনুসারীদের মধ্যেই মনোনয়ন পাওয়ার দৌড় বেশি। এছাড়াও বোয়ালখালীর একটি ইউনিয়নে রাঙ্গুনিয়া সংসদীয় আসনের ভোটার থাকায় তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদেরও অবস্থান আছে। যে কারণে দুই নেতার পছন্দের উপর নির্ভর করছে কে মনোনয়ন পাবে। যদিও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেয়ার এখতিয়ার স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সভাপতি শেখ হাসিনার।
বোয়ালখালী আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল আমিন চৌধুরী পূর্বদেশকে বলেন, ‘দলের সভাপতি হিসেবে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছে আছে। আমার পরিবারের অগ্রাধিকার বেশি থাকবে। আমার নেতাও আমাকে ডেকে নিয়ে প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ দিয়েছেন। কাগজপত্র জোগাড় করতে বলেছেন। আমি মনোনয়ন পেলে অবশ্যই নির্বাচন করবো।’
বোয়ালখালী উপজেলার পরিষদের নির্বাচিত ভাইস চেয়ারম্যান ও বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এসএম সেলিম বলেন, ‘অবশ্যই মনোনয়ন চাইবো। যোগ্যতার মাপকাঠি হিসেবে মনোনয়ন দিলে অবশ্যই নির্বাচন করবো। আপাতত দলের সিদ্ধান্তের প্রতি আমার আস্থা আছে। বাকিটুকু নেত্রীর সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করছে। বর্তমানে আমিই সিনিয়র।’
দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আব্দুল কাদের সুজন বলেন, ‘আমি বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করলেও সর্বশেষ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির সভায় সকল বিদ্রোহী প্রার্থীদের ক্ষমা করে দেয়া হয়েছে বলে গণমাধ্যমে জেনেছি। যতটুকু জানি বিদ্রোহীরা পদেও আসতে পারবেন। এখন নেত্রী আমাকে মূল্যায়ন করলে আমি অবশ্যই প্রার্থী হবো।’
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এসএম বোরহান উদ্দিন বলেন, ‘নেত্রী স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে চান। স্মার্ট বাংলাদেশের অন্যতম সারথী তরুণরা। বোয়ালখালীতে আমাকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দিলে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে সহায়ক হবে। মনোনয়ন পেলে নির্বাচিত হয়ে এলাকার উন্নয়নে কাজ করবো। আমি দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতির মাঠে সক্রিয় থাকায় বোয়ালখালীর কোথায় কি সমস্যা তা জানা আছে। উন্নয়নে মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করবো।’
প্রসঙ্গত, বোয়ালখালীতে দুই লাখ ১৬ হাজার ৮১৭ জন ভোটার আছেন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার এক লাখ ১৫ হাজার ৯২ জন ও মহিলা ভোটার এক লাখ এক হাজার ৭২৫ জন।