অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন করোনায় আক্রান্ত

68

রাজধানীর মুগদা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তার নমুনা পরীক্ষার ফল আসার পর গতকাল সোমবার বিকালে কোভিড-১৯ আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য নিবেদিত হাসপাতালটির নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মনিলাল আইচ এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘সর্বশেষ নমুনা পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে, স্যার কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়েছেন’। অধ্যাপক মামুনের সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘তাকে আইসিইউতে রেখে অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে, অবস্থা স্ট্যাবল রয়েছে’।
নভেল করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে রোববার রাতে হাসপাতালে ভর্তি হন মুনতাসীর মামুন। পরে রাতেই তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। ডা. মনিলাল জানান, ৬৯ বছর বয়সী এই অধ্যাপকের হৃদরোগের পাশাপাশি শ্বাসকষ্টও রয়েছে। তার যে শারীরিক অবস্থা তাতে আশঙ্কামুক্ত বলা যাচ্ছে না।
অধ্যাপক মুনতাসীরের পারিবারিক বন্ধু কবি তারিক সুজাত জানিয়েছেন, গত ১৮ এপ্রিল মা জাহানারা খান কোভিড-১৯ আক্রান্ত হলে তাকে রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করতে যান অধ্যাপক মামুন। কোভিড আক্রান্ত মায়ের সংস্পর্শে আসায় তার মধ্যেও হয়তো কোভিডের সব লক্ষণ দেখা যাচ্ছে।
তবে গতকাল সোমবার সকালে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক জানিয়েছেন,
প্রায় সেরে উঠছেন জাহানারা খাতুন।
মুনতাসীর মামুনের মুক্তিযুদ্ধের ওপর অনেক গবেষণাধর্মী কাজ রয়েছে। একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দাবির আন্দোলনে সম্পৃক্ত এই অধ্যাপক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্যও দিয়েছেন। সাম্প্রদায়িকতা-মৌলবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন সক্রিয় রয়েছেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটিতেও। বর্তমানে কমিটিতে সহ-সভাপতির পদে আছেন তিনি। খবর বিডিনিউজের
একাত্তরের গণহত্যা নিয়ে গবেষণা করেছেন অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন। তার প্রচেষ্টায় ২০১৪ সালের ১৭ মে খুলনায় প্রতিষ্ঠা পায় গণহত্যা নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর। একাত্তরের ২৫ শে মার্চের কালোরাত্রির গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির জন্য লড়ছেন তিনি। স্বাধীন বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত ডাকসুর প্রথম নির্বাচনে সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন মুনতাসীর মামুন। একই সময়ে তিনি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতি সংসদের সভাপতি।
অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন জাতীয় জাদুঘরের ট্রাস্টি বোর্ড এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ও জাতীয় আর্কাইভসের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ছিলেন। ঢাকা নগর জাদুঘরের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা তিনি। ঢাকার ইতিহাস চর্চার জন্য মুনতাসীর মামুন প্রতিষ্ঠা করেছেন সেন্টার ফর ঢাকা স্টাডিজ (ঢাকা চর্চা কেন্দ্র)। তিনি বাংলা একাডেমির একজন ফেলো।