সন্দ্বীপে বেড়িবাঁধ ভেঙে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

44

ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে সৃষ্ট জোয়ারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নতুন বেড়িবাঁধ ভেঙে সন্দ্বীপের সারিকাইত ইউনিয়নের একটি ওয়ার্ডের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে কয়েকটি কাঁচা ঘর-বাড়ি ভেসে গেছে। তবে তার আগেই এসব ঘরে বসবাসরত মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়।
গতকাল শনিবার দুপুরে সারিকাইত ১নং ওয়ার্ডের সায়েদ স’মিল এলাকায় বাঁধ ভেঙে যাওয়ার খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেন সারিকাইত ইউপি চেয়ারম্যান ফখরুল ইসলাম পনির। তিনি বলেন, ফণির প্রভাবে প্রবল জোয়ারে সাগরের মুখে থাকা বাঁধ ভেঙে ১নং ওয়ার্ড প্লাবিত হয়েছে। এতে ক্ষয়ক্ষতির ব্যাপারে তাৎক্ষণিক কিছু জানা যায়নি।
খবর পেয়ে সংসদ সদস্য মাহফুজুর রহমান মিতা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন। তিনি ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
এদিকে গতকাল সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত সন্দীপজুড়ে প্রচন্ড বেগে দমকা ও ঝড়ো হাওয়া বয়ে গেছে। দমকা হাওয়ার সাথে থেমে থেমে ভারী ও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিপাত হয়। এতে ব্যাপক গাছপালা উপড়ে গেছে। অনেক গাছ ভেঙে বসতবাড়ির ক্ষতি করেছে। এ পর্যন্ত দ্বীপের ১৫টি ইউনিয়নের প্রায় ৫০টি কাঁচা ঘরের ক্ষতি হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে কোথাও প্রাণহাণির ঘটনা ঘটেনি। জীবনযাত্রা ছিল অস্বাভাবিক। স্কুল-কলেজ ও দোকান-পাট ছিল বন্ধ। স›দ্বীপের সাথে দেশের অন্য এলাকার যোগাযোগ ছিল বিচ্ছিন্ন।
এদিকে রাতে সৃষ্ট উঁচু জোয়ারে লোকালয়ে পানি প্রবেশের আতংকে আছেন কালাপানিয়া ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের জনগন। তাই খাদেমুল ইসলাম মাদ্রাসার পাশে বেড়িবাঁধের বাইরে বসবাসরত লোকেরা শনিবার বিকেলে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে মাটি কেটে বাঁধ সংস্কার কাজ সম্পন্ন করেছে বলে জানা গেছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নুরুল হুদা জানান, পূর্ব প্রস্তুতি থাকায় এখানে তেমন ক্ষতি হয়নি, তবে উরিরচর ইউনিয়নে ১০-১২টি এবং সন্দ্বীপের নদী তীরবর্তী এলাকায় বেশ কিছু কাঁচা ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ইউনিয়নসমূহ থেকে এখনও ক্ষয়ক্ষতির সঠিক হিসাব পাওয়া যায়নি।
ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় উপজেলা প্রশাসন গত ৩০ এপ্রিল থেকে জরুরি কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে কাজ শুরু করে। গত ৩-৪ দিন ধরে সিপিপি’র স্বেচ্ছাসেবক ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয় গ্রহণের জন্য মাইকিং করা হয়। তবে ব্যাপক প্রচারণার পরও খুব কম সংখ্যক মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে যান। শুধুমাত্র নদী তীরবর্তী এলাকার ও বিচ্ছিন্ন ইউনিয়ন উরিরচরের কিছু মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেন।