প্রেম নাকি পাপ

267

রাসু নামের হ্যান্ডসাম ছেলের সাথে প্রেম করেছে আমার এক দুরের সম্পর্কের শ্যালিকা।
ধরে নেয়া যাক, শ্যালিকার নাম জেরি।
তাদের প্রেমটা শুরু হয় এভাবে যে, একদিন জেরি স্কুলে যায়, গিয়ে রাসু ছেলেটার মুখোমুখি পড়ে।
আসলে গ্রামের স্কুল। দু’তিনটা নিম্নমানের বিল্ডিং মাঝে ফাঁকা মাঠ । তবে কোন প্রাচীর দ্বারা সিমাবদ্ধ নয়। তাই গেটও নেই। যে, যেদিক দিয়ে পারে, সে সেদিক দিয়ে আসে।
রাসু আর জেরির বাড়ি একই গ্রামে।
আবার আলাদাও বলা যায় কারণ মাঝখানে স্কুল।
স্কুলের উত্তরে, বাজারের কাছে রাসুর বাড়ি আর স্কুলের দক্ষিনে জেরির বাড়ি।
যে কারণে একই সময় স্কুলে প্রবেশ করলে মুখোমুখি পড়া অস্বাভাবিক নয়।
প্রথম দেখায় সেদিন তাদের কথা হয়নি ঠিকই । তবে প্রথম দেখায় জেরিকে ভালোলেগে যায় রাসুর।
পরে মাঝে মাঝে চোখাচুখি হয়। এভাবে অল্পদিনে আকর্ষণও বেড়ে যায়।
নবমশ্রেণির ক্লাসমেট হওয়ায় যা সুবিধাজনক ওয়াটার হিসেবে কাজ কলেছে।
বৈজ্ঞানিক ভাবে পরিক্ষা করে দেখা গেছে, নারী ও পুরুষ প্রতিদিন পরষ্পরের চোখের দিকে ১/২মিনিট তাকিয়ে থাকলে তাদের আকর্ষণ, ভালোলাগা, গভীরতা, মায়া বেড়ে যায় বহুগুণ।
তাই তাদেরও বেড়ে গেছে।
কিছুদিন পরেই প্রেমের প্রস্তাব দেয় রাসু।
তা একসেপ্টও করে জেরি। না করে বা উপায় কি! উঠতি একটা বয়স সে সময়। যেীবনের ছোঁয়া। আর রাসুর মতো হ্যান্ডসাম ছেলে যদি হয় তাহলে তো কথাই নেই।
এরপর ভালোই চলে তাদের প্রেমময় স্কুল জীবন। মাঝে মাঝে এখানে সেখানে ঘোরাঘুরি। বন্ধুত্বের ছলে আড্ডা।
পেরাইভেটের ছলে দেখা করা।
ক্লাস শেষে বা টিফিনে বা কোন সুবিধাময় ফাঁকা মুহুর্তে টার্স ফোনের যুগে একটু টারস করা। মানে বুঝেন তো?
কিস টিস এই আরকি!
এসব ছাড়া নাকি প্রেমই জমেনা। তাই জমিয়ে প্রেম করছিল দুজন।
শিক্ষকদের কাছে ধরা-টরা পড়েনি কোন দিন। বন্ধুদের কাছে একটু পড়েছিল বৈকি!
কিন্তু তাতে কি? মেীলিক জৈবিক তাহিদাই আসল! প্রেম ছাড়া কি বাঁচা যায়?
তাদের কথা, প্রেম করছি বেশ করছি।
করবোই তো।
কিন্তু বেশিদিন স্থায়ী হলো না তাদের মজার সময়।
হ্যান্ডসাম ছেলেরা তো আবার সুযোগ সন্ধানী। এক গেরস্তের ১টা ডাব খেয়ে আবার অন্য গেরস্তের খোজ করে। এই জায়গায় মেয়েরা ছেলে চিনতে ভুল করে আবার কেউ কেউ নিজেরাও তেমন।
যেমন আমার দেখা ১টা মেয়ে নাইনে দুটা, টেনে দুটার সাথে প্রেম করে ইন্টারে ১টাকে বিয়ে করেছে।
আবার আরেকটা মেয়ে তো সরাসরি বলেছে আমাদের, সে দুবছর পরপর বয়ফ্রেন্ড চেন্জ করবে। শুধু নাকি টাইম পাসের জন্যই প্রেম করে।
যাইহোক, স্কুলের গন্ডি পর্যন্ত যে অল্প সময় পেলো। গোপনে ইনজয় করে পার করেছে দুজন। পরে দুজনের টানাপোড়ন শুরু হলে একটু জানাজানি হয়। জেরির পরিবারও বিষয়টাতে অবগত হয়।
গ্রাম্য পরিবারের বাবারা তো প্রেম শব্দ শুনলেই মনে করে পাপ। বয়সের দোষ। কোন ভাবেই এ সব মানা যায় না। জেরির বাবা মাও মানল না।
বোঝানোর চেষ্টা করে মেয়ে কে। মেয়ে তো বোঝেনা।
সে রাসুর জন্য পাগল। শুধু সে এবং তার মনই জানে রাসুকে ছেড়ে থাকা কতটা অসম্ভব।
আর কেউ না বোঝাই স্বাভাবিক ও বাস্তবতা। তাই তার বাবা অন্য একটা ছেলের সাথে বিয়ে ঠিক করে ফেলে দ্রুতই।
এখানে বলি,
বর্তমান প্রেমিক/প্রেমিকার ছন্দ,
নিজের পছন্দে বিয়ে করলে নিজের গালফেন্ড/বয়ফ্রেন্ডকে পাবে।
আর বাবা মার পছন্দে করলে অন্যের গালফ্রেন্ড/বয়ফ্রেন্ডকে পাবে। তাই জাগো প্রেমিক/
প্রেমিকা জাগো, বাবা মার থেকে ভাগো। বা প্রেমিক/প্রেমিকা নিয়ে ভাগো।
এই স্লোগান মাথায় নিয়েই হয়তো জেরি ভেগে গেলো রাসুর কাছে।
কিন্তু বাবা মায়েদের কি সহজে মেনে নেয়ার কথা?
মোটেও না।
কিছু বাবা জীবনেও আর খোজ করা বা সমোঝতা করে না। আবার অনেকে করে এবং পরে মেনেও নেয়।
আর কেউ কেউ জোর করে ফিরিয়ে আনে, যেমন জেরির বাবা।
তিনি তার মেয়েকে ফিরিয়ে আনেন।
কিছুদিন পর আবার সে পালিয়ে যায়।
তখন কি করা যায়? পিতার তো একটা আত্বসম্মান আছে।
আবার তিনি নিয়ে আসেন, আর যেতে না দিয়ে জোর করে বিয়ে দিয়ে দেন।
স্বামীর বাড়ি গিয়ে হয়তো সব ভুলে যাবে, জেরি ঠিক হবে, এমনটা ভাবে তার পরিবার।
হুম! ধারনা সঠিক। তবে সব মেয়ের ক্ষেত্রে নয়। খুব জেদি ও হার না মানা মেয়েদের কাছে ব্যতিক্রম।
কিছু দিন থাকতে থাকতে প্রায় ছয় মাস ছিল এরপর আবার পালিয়ে যায় সেই রাসুর কাছে। এবার আর কিছুই করলনা তার বাবা।
বিয়ে করে ফেলেছে তারা তখনি। তারপর তারা এখন একসাথেই আছে।
জানিনা তাদের মনে প্রশান্তি না অশান্তি বিরাজ করছে!
তবে এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে হ্যাপি ইন্ডিং লাভ। প্রেমিক প্রেমিকার জয়। এ সব প্রেমের ভবিষ্যত অস্তিত্ব কী? তা সময়ই বলে দেবে। সেই অপেক্ষায় থাকুন।