সাতকানিয়ায় বোরো কাটা শুরু, ফলনে খুশি চাষীরা

15

সাতকানিয়া প্রতিনিধি

সাতকানিয়া উপজেলায় অন্যান্য বছরের চেয়ে এ বছর অনেক আগে বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। একারণে কৃষক-কৃষানিরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। মাঠের ধান সোনালি রং ধারণ করেছে। বোরো রোপণ করতে সার, কীটনাশক ইত্যাদি মিলিয়ে উৎপাদন খরচ ছিল কৃষকের সামর্থ্যরে বাইরে। বোরো ধান রোপণ থেকে শুরু করে ধান পাকা পর্যন্ত ক্ষেতে প্রাকৃতিক পানির চেয়ে মেশিনের মাধ্যমে তোলা পানিই বেশি ছিল। বাজারে ধানের দাম বেশি থাকায় উৎপাদন খরচ পুষিয়ে লাভের মুখ দেখায় স্বস্তিতে কৃষক।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, সাতকানিয়া ১৭টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা এলাকায় বোরো রোপণের অর্জিত লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭২৫০ হেক্টর। বোরো আবাদ হয়েছে ৭৩০০ হেক্টর জমিতে। হাইব্রীড জাত ৩৪০০ হেক্টর এবং উফসী জাত ৩৯০০ হেক্টরসহ মোট ৭৩০০ হেক্টর।
সরজমিনে ঘুরে দেখা যায়, সাতকানিয়ার ১টি পৌরসভা ও ১৭ ইউনিয়নের ধানি বিলে শুধু পাকা ও আধা পাকা সোনালি ধান দখিনা বাতাসে দোল খাচ্ছে। অল্প কিছুদিনের মধ্যে ক্ষেতের সমস্ত ধান পেকে যাবে। যে সমস্ত কৃষক আগে বোরো রোপণ করেছিলেন এখন শুধু তারাই ধান কাটছেন। আবার অনেকে শিলাবৃষ্টি ও ঘুর্ণিঝড়ের ভয়ে কম পাকা ধানও কেটে ফেলছেন।উপজেলার সোনাকানিয়ার গারাংগিয়া গ্রামের বোরো চাষী মোহাম্মদ আলী, হাতিয়ারকুলের কৃষক জাহাঙ্গীর আলম, তাঁতী পাড়ার মো. ইউসুফ জানান, তাদের রোপিত বোরো ধানের ক্ষেতের সব ধান পেকে গেছে। রঙ্গীপাড়ার কৃষক মোহাম্মদ মহি উদ্দীন, শমশু মিয়া, আবুল বশর জানান, এ বছর মাঠে রোগ বালাই কম ও ফলন হয়েছে বেশি। মাঠে ধান কাটতে যাওয়া পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডের মোহাম্মদ আবুল হোসেন জানান, ধান রোপণ করার সময় মুজুরি খরচ, সার, কীটনাশক, আগাছা পরিষ্কার ও ধান কাটাসহ খরচ যা হয়েছে উৎপাদিত ধান বিক্রি করে খরচ উঠে অনেক লাভবান হবেন।
সাতকানিয়া উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা এস এম জহির বোরো চাষে বাম্পার ফলনের কথা স্বীকার করে জানান,এবছর কৃষকরা ব্রি ধান ২৮, ব্রি ধান ৪৮, ব্রি ধান ৫৫, ব্রি ধান ৫৮, ব্রি ধান ৬৭, ব্রি ধান ৭৪, ব্রি ধান ৮৮, ব্রি ধান ৮৯, ব্রি ধান ৯২, ব্রি ধান ১০০ (বঙ্গবন্ধু), বিনা ধান ২৫, হাইব্রীড-স্বর্ণা গোল্ড, রাজকুমার, ফলন২, এসিআই-১, হীরা-২, ছক্কা, ব্র্যাক-৭৭৭, সিনজেন্টা ১২০৫, তেজ গোল্ড, হীরা-১৯, হীরা-৬,ইত্যাদি জাতের ধান রোপণ করছেন। এখন ধানের পাকা অবস্থা বিরাজমান। যে সমস্ত কৃষক উপজেলার মাঠ সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে বোরো ধান রোপণ করেছেন তাহাদের ফলন আশা করি চাহিদার চেয়ে আরও কয়েকগুণ বেশি ফলন হবে। ধানের বাজার মূল্য বেশি হওয়ার কথা স্বীকার করে তিনি জানান, আগের চেয়ে বর্তমানে ধানের বাজারদর বেশি। তাই বোরো চাষীরা অনেক লাভবান হবেন।
সাতকানিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো.মনিরুজ্জামান জানান, সাতকানিয়ায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আবাদ বেশি হয়েছে। ফসলের অবস্থা এখনও পর্যন্ত ভাল। ফলন তুলনামূলক ভালো হওয়ার আশা করছি।