প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি

69

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনলজি বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের এক ছাত্রীকে ভবন মালিক মারধর করার প্রতিবাদে মুখে কালো কাপড় বেঁধে মানববন্ধন করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার চত্বরে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। মানববন্ধন শেষে মৌন মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত ভবন মালিককে আগামী তিন দিনের মধ্যে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা, ওই ভবনে বসবাসরত ছাত্রীদের নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য আবাসিক হলে আসনের ব্যবস্থা করা ও ওই ভবনে ভবিষ্যতে যেন কোন শিক্ষার্থীর না ওঠে তার ব্যবস্থা করা, নারী শিক্ষার্থীদের আবাসনের সমস্যা শতভাগ দূর করা, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও আশপাশের ভবন মালিকদের নিয়ে ভাড়াসহ অন্যান্য বিষয়ে নির্দিষ্ট নীতিমালা তৈরি করা, ক্যাম্পাসের আশেপাশের শিক্ষার্থীরা বসবাসরত ভবনগুলোর হোল্ডিং নম্বর, মালিকের বিবরণসহ পূর্ণাঙ্গ একটি ডাটাবেজ তৈরি করে প্রক্টরের কাছে সংরক্ষিত করে রাখা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের নাইমুর রহমানের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য দেন একই বিভাগের একই বর্ষের ফারজানা আমিন সনিয়া, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে একই বর্ষের মুনাব্বির আহমেদ ও মো. শিপন।
শিক্ষার্থীরা বলেন, এ ঘটনা পর থেকে প্রতিটি শিক্ষার্থীর সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের প্রতিবাদ শুধু ফেসবুকে স্ট্যাটাস-কমেন্টে সীমাবদ্ধ। নিজের সঙ্গে কোনো দুর্ঘটনা ঘটা ছাড়া আমাদের টনক নড়ে না। কাজেই পরবর্তীতে যাতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে সে জন্য সতর্ক হতে হবে। গত ১৮ দিনে দেশে ২২টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে, যা আসলেই দুঃখজনক। ঘটনাটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হলে হয়তো অনেক শিক্ষার্থীদের সাড়া পাওয়া যেত।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এসএম মনিরুল হাসান সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের। অভিযোগটি গতকালই পুলিশের কাছে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ অভিযোগটি গ্রহণ করেছে। বিষয়টা তারা দেখছে।
এর আগে গত সোমবার দুপুরে বাড়ি ভাড়ার অগ্রিম জামানতের টাকা ফেরত চাইতে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ ক্যাম্পাস এলাকার নিরিবিলি হাউজ নামে একটি ভবন মালিক মো. নুরুল ইসলামের (৫০) মারধরের শিকার হয়েছেন বলে ওই ছাত্রী অভিযোগ করেন। এ ঘটনায় ওইদিন বিকালে হাটহাজারী মডেল থানা পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগী ছাত্রী। অভিযোগপত্রে তিনি উল্লেখ করেন, ‘আমি ওই ভবনের ভাড়া বাসায় ছয় মাস ছিলাম। গত ডিসেম্বরে আমি বাসাটি ছেড়ে দিয়েছিলাম। ওই সময় জামানত হিসেবে দেওয়া চার হাজার টাকার মধ্যে দুই হাজার টাকা বুঝিয়ে দেয়া হয়েছিল। বাকি টাকা ১৫-২০ দিন পরে নিতে বলেন ভবন মালিক নুরুল ইসলাম। সোমবার আমি ভবন মালিকের বাসায় গেলে তিনি জামানতের বাকি টাকা ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানান ও গালমন্দ করেন। তখন আমি প্রতিবাদ করলে, তিনি আমাকে মারধর শুরু করেন। আমার চুলের মুঠি ধরে কিলঘুষি মারেন, চোখের চশমা ভেঙ্গে ফেলেন, শ্বাসরোধ করেন এবং ডান হাতের কবজিতে কামড় বসিয়ে দেয়। আমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম থাকায় বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রে চিকিৎসা নিয়ে হাটহাজারী মডেল থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছি।’