ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি

22

ফেনী সোনাগাজী উপজেলার মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত হত্যার ঘটনায় তৎকালীন ওসি মোয়াজ্জেমের ভূমিকা নির্ধারণে বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবি করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সম্প্রতি এই হত্যা মামলার পিবিআই-এর দেওয়া অভিযোগপত্র থেকে ওসিকে বাদ দেওয়ার ঘটনাটি প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।
শুক্রবার (৩১ মে) এক বিবৃতিতে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘‘নুসরাত হত্যাকান্ডের পর পিবিআই উল্লেখযোগ্য তৎপরতার সঙ্গে তদন্ত শেষ করে অভিযোগপত্র জমা দিলেও এর পরিপূর্ণতা ও বস্তুনিষ্ঠতা সম্পর্কে আমরা আশ্বস্ত হতে পারছি না। কারণ নুসরাত যৌনহয়রানির শিকারের ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের পর সোনাগাজী থানার সাবেক ওসির প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকার কথা গণমাধ্যমসূত্রে দেশবাসী জানতে পেরেছে। ওসির বিরুদ্ধে ‘হত্যাকান্ডটিকে আত্মহত্যা বলে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা’ এবং ‘হত্যাকারীদের সুরক্ষা প্রদানে যোগসাজশের’ সুনির্দিষ্ট অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে।’’
ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলাটি যথেষ্ট নয় উল্লেখ করে ড. ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, ‘নুসরাতকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় আইনকানুনের ধার ধারেননি ওসি। জিজ্ঞাসাবাদের যে ভিডিও এই পুলিশ কর্মকর্তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছেন, তাতে দেখা গেছে কোনও নারী পুলিশ সদস্য সেখানে উপস্থিত ছিলেন না। একের পর এক বিব্রতকর প্রশ্ন করে তাকে রীতিমতো হেনস্থা করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘একজন প্রভাবশালী যৌন নির্যাতনকারীর বিরুদ্ধে মামলা করার পর নুসরাতকে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে পুলিশ প্রশাসন। এমনকি মাদ্রাসার ছাদে তার হাত পা বেঁধে আগুন দিয়ে গুরুতর আহত করার ঘটনাকে আত্মহত্যার চেষ্টা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টাও করেছেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা। ঘটনার পরম্পরা বিবেচনায় নিলে, ওসির সঙ্গে ঘাতকদের যোগসাজশ ও অপরাধীদের সুরক্ষা দেওয়ার প্রয়াসের অভিযোগ অমূলক বলার সুযোগ নেই।’
বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করে তিনি ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, ‘দেশে নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা ভয়াবহ ও গভীরতম উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। আইনের কঠোরতম প্রয়োগ নিশ্চিত করা না গেলে এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের কোনও সম্ভাবনা নেই। এমন অবস্থায় নুসরাতের নৃশংস হত্যাকান্ডের ঘটনায় দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের নিরপেক্ষ বিচারবিভাগীয় তদন্তের বিকল্প নেই।’