রেস্তোরাঁয় বাজবে গান, বিনোদন ক্যালেন্ডার ঘোষণা সৌদির

44

সৌদি আরবে রেস্তোরাঁয় গান বাজানোর অনুমতি দিয়ে একটি রাজ আদেশ জারি করা হয়েছে। মঙ্গলবার রিয়াদের এক জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে এই ডিক্রির ঘোষণা দেন দেশটির বিনোদন কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী এবং সৌদি রাজদরবারের উপদেষ্টা তুর্কি আল শেখ। ২০১৯ সালের বিনোদন ক্যালেন্ডার ঘোষণা করতে ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের নেতৃত্বে চলমান সংস্কার কর্মসূচির আওতায় এসব আয়োজনের ঘোষণা দেওয়া হয়।
কট্টর রক্ষণশীল ভাবমূর্তি থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছে সৌদি আরব। যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান এরই মধ্যে বিভিন্ন সামাজিক বিধিনিষেধ শিথিল করেছেন। অনুমতি দিয়েছেন নারীদের গাড়ি চালানোর, ধর্মীয় পুলিশের ক্ষমতা খর্ব করা হয়েছে। লিঙ্গবৈষম্য কমানোর কিছু চেষ্টাও করেছে দেশটি। এসব সংস্কারের মাধ্যমে নাগরিকদের বিদেশে ব্যয় করা অর্থ দেশেই রাখার চেষ্টা করছে সৌদি আরব। পরিকল্পনা করছে বিদেশিদের আকৃষ্ট করার ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির। এর আগে দেশটির কর্মকর্তারা বলেছেন, বর্তমানে সৌদি নাগরিকেরা প্রতিবছর বিনোদনের জন্য বিদেশে গিয়ে দুই হাজার কোটি মার্কিন ডলার ব্যয় করে। এর এক-চতুর্থাংশ নিজেদের দেশেই রাখতে চাওয়ার লক্ষ্যের কথা জানান তারা। গত বছর সৌদি বিনিয়োগ কর্তৃপক্ষ এক দশকের মধ্যে অবকাঠামো খাতে ২৪ হাজার কোটি সৌদি রিয়াল বিনিয়োগের ঘোষণা দেয়। এর মাধ্যমে সৌদির জিডিপিতে বছরে ১৮শ’ কোটি সৌদি রিয়াল যোগ করা ছাড়াও ২০৩০ সাল নাগাদ দুই লাখ ২৪ হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়।
মঙ্গলবার রিয়াদের সংবাদ সম্মেলনে তুর্কি আল শেখ বলেন, ‘আজ থেকে আমরা দেশের রেস্তোরাঁয় গান ও সংগীত বাজানোর লাইসেন্স দেওয়া শুরু করব’। ২০১৯ সালের বিনোদন ক্যালেন্ডার ঘোষণা করে এই বছর বেশ কয়েকটি আয়োজনের ঘোষণা দেন তিনি। রিয়াদভিত্তিক আরব নিউজের খবরে বলা হয়েছে, এসব আয়োজনের মধ্যে রয়েছে, গাড়ি দৌড়, জাদু প্রদর্শনী, থিয়েটার পারফরম্যান্স, টেলিভিশনে প্রচারিত গেম শো, ভাসমান রেস্তোরাঁ এবং ১৩টি স্থানে খোলা মাঠে সিনেমা প্রদর্শন। অবসর নেওয়া ফুটবল তারকা ডেভিড বেকহ্যাম ও জিনেদিন জিদানের মতো খেলোয়াড়দের নিয়ে প্রদর্শনী ফুটবল ম্যাচ আয়োজনের কথাও জানান তিনি।

রাজপুত্র, মন্ত্রী আর তারকাদের উপস্থিতিতে সংবাদ সম্মেলনে তুর্কি আল শেখ বলেন, ‘আশা করি ন্যাশনাল কোম্পানি, ব্যাংক, ব্যবসায়ী, শিল্পী এবং সব খাত একসঙ্গে এগিয়ে আসবে। সুবর্ণ সুযোগ আসছে’। তুর্কি আল শেখ বলেন, বিনোদনে বিশ্বের শীর্ষ দশ গন্তব্যের একটি হতে চায় সৌদি আরব। আর এশিয়ার মধ্যে শীর্ষ চারে থাকতে চায় বলে জানালেও এজন্য কোনও সময়সীমা নির্ধারণ করেননি তিনি। সংস্কার কার্যক্রম অব্যাহত রাখলেও ভিন্নমতালম্বীদের দমন চালিয়ে যাচ্ছে সৌদি সরকার। নারী অধিকার কর্মী, বুদ্ধিজীবীদের আটক অব্যাহত রেখেছে তারা।