৯ মাসের মধ্যে শহীদ মিনারের কাজ শেষ করার তাগিদ

6

নগরীর মুসলিম হল ইনস্টিটিউট ভেঙ্গে অত্যাধুনিক সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স তৈরি হচ্ছে। কমপ্লেক্সে নির্মিত শহীদ মিনারের পাশে নির্মাণ করা হবে একটি উন্মুক্ত মঞ্চ। এখানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি সভা, সেমিনার আয়োজনেরও ব্যবস্থা থাকবে। সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্সের অধীনে অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণের কাজ শুরু হলেও শহীদ মিনারে হাত দেয়নি বাস্তবায়নকারী কর্র্তৃপক্ষ গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। বিষয়টি স্পর্শকাতর হওয়ায় সিটি মেয়র মো. রেজাউল করিমের সহায়তায় সংস্কৃতিকর্মী, মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের রাজনৈতিক, সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠনের প্রতিনিধিদের সাথে গতকাল রোববার এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় মেয়র নয় মাসের মধ্যে সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্সের নির্মাণ কাজ শেষ করার নির্দেশনা দেন। একইসাথে চসিক পরিচালিত মিউনিসিপ্যাল মডেল স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে ঢাকা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের আদলে একটি বিকল্প স্থাপনা নির্মাণের জন্য প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থাকে অনুমতি দেয়া হয়েছে। ১৫ অক্টোবরের মধ্যে কাজ শুরু করার নির্দেশ দিয়ে মেয়র বলেন, চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সংস্কার কাজ শেষ হবার পর বিকল্প শহীদ মিনার স্থাপনাটিও থেকে যাবে এবং সেইভাবেই এর স্থায়ী রূপ দেয়া হবে।
নির্মাণাধীন সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স নিয়ে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের এক পরিপত্রে বলা হয়, ‘প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও গবেষকদের তথ্য চাহিদা পূরণ হবে। শিক্ষার মান বৃদ্ধির পাশাপাশি চট্টগ্রাম মহানগরীর ঝিমিয়ে পড়া সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে প্রাণের সঞ্চার ঘটবে ।’
সভায় সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রাম সাংস্কৃতিক বলয় প্রকল্প বাস্তবায়নকল্পের পথে যখন চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রসঙ্গটি আসে তখন থেকেই মনস্থির করেছিলাম সবার সাথে বসে মতামত নিয়ে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবো। আমি শহীদ মিনারের সংস্কার চাই, মূল নকশানুযায়ী বিন্যাস ও সম্প্রসারণ চাই। তবে এটা ভাঙ্গা বা সরিয়ে ফেলতে মন সায় দেয়নি এবং দেবেও না। তিনি আরো বলেন, বাস্তবায়নাধীন সাংস্কৃতিক বলয় প্রকল্প চট্টগ্রামের সংস্কৃতিকর্মীদের দীর্ঘদিনের চাওয়া-পাওয়ার স্বপ্ন। এই স্বপ্নের শতভাগ পূরণ হলে চট্টগ্রামের শিল্প-সংস্কৃতির চাকা গতিশীল হবে। এই প্রকল্প কেবল একটি বহুমাত্রিক নন্দিত স্থাপনাই হবে না, এর সঙ্গে ইতিহাস ও ঐতিহ্যের নানা তথ্য-উপাত্ত, উপাদান, নিদর্শন এবং প্রামাণ্য শিল্পিত উপস্থাপনার সংযোজন হবে। তিনি মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণকারীদের বাস্তবায়নাধীন বলয়ের সাথে বিভিন্ন সংযোজন ও প্রস্তাবনায় সহমত প্রকাশ করে বলেন, একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে চট্টগ্রামে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর প্রতিষ্ঠা, চট্টগ্রামে মুক্তিযুদ্ধের নানামুখি ঘটনার স্মৃতি চিহ্ন সংরক্ষণ, বিট্রিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের কীর্তিগাঁথা ধারণ ও স্মরণের কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে নাগরিক সমাজের সহযোগিতা চাই।
এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন গণপূর্ত বিভাগের অতিরিক্ত প্রকৌশলী ওম প্রকাশ নন্দী। মতবিনিময়ে অংশ নেন, মুক্তিযোদ্ধা ও গবেষক ডা. মাহফুজুর রহমান, নাট্য ব্যক্তিত্ব আহমেদ ইকবাল হায়দার, চিটাগাং চেম্বারের সাবেক সচিব অভিক ওসমান, চসিক প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক, চসিক সাবেক জনসংযোগ কর্মকর্তা সাইফুদ্দিন আহমেদ সাকী, চবি সিনেট সদস্য মহিউদ্দিন শাহ আলম নিপু, শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম বাবু, সহ-সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির, দেওয়ান মাকসুদ আহমেদ, আব্দুল হালিম দোভাষ, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, মহানগর মুক্তিযোদ্ধা ডেপুটি কমান্ডার মো. শহীদুল হক চৌধুরী, নাট্য ব্যক্তিত্ব অধ্যাপক সঞ্জীব বড়ুয়া, গ্রুপ থিয়েটার সমন্বয় পরিষদের শেখ শওকত ইকবাল প্রমুখ।