৭৭ বছরের বৃদ্ধ পিতাকে মারধর, ছেলে কারাগারে

37

অভিযোগ খুবই গুরুতর। বাবা-মাকে আঘাত করেছে ছেলে। এতে আহত হন বাবা। বাবা-মায়ের সাথে সাথে ছোট বোনের উপরও চড়া ভাই। এ ঘটনায় ৭৭ বছরের বৃদ্ধ পিতা মামলা ঠুকলেন থানায়। পুলিশ ছেলেকে গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করল গতকাল বুধবার। ছেলের পক্ষে আইনজীবী জামিনের আবেদনও জানান। চট্টগ্রামের সিনিয়র জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বেগম আঞ্জুমান আরা’র আদালতে করা জামিনের এ আবেদনের উপর শুনানি অনুষ্ঠিত হওয়ার দিন ধার্য রয়েছে আজ বৃহস্পতিবার। ঘটনাটি ঘটেছে লোহাগাড়ার চুনতি এলাকায়। গত মঙ্গলবার বিকেল ৪টায় বাড়ির উঠোনে কাজ করার সময় ছেলে মোহাম্মদ হাসান তার পিতা মোহাম্মদ লোকমান হোসেনের উপর চড়াও হয়। এক পর্যায়ে তাকে গলা চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে মারার চেষ্টা চালায়। এসময় রেহেনা খাতুন স্বামীকে বাঁচানোর জন্য আসলে তাকে ধাক্কা মেরে ছুড়ে ফেলা হয় বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়। মা-বাবাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসলে মেজো মেয়ে নুরুন্নাহারও মোহাম্মদ হাসানের লাঠির আক্রমণের শিকার হন। এ ঘটনায় বৃদ্ধ মোহাম্মদ লোকমান চিকিৎসার জন্য লোহাগাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন।
এ ঘটনায় গতকাল বুধবার মোহাম্মদ লোকমান বাদী হয়ে ছেলের ঔদ্ধত্যপনার বিরুদ্ধে লোহাগাড়া থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ মোহাম্মদ হাসানকে গ্রেপ্তার করে চট্টগ্রাম সিনিয়র জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বেগম আঞ্জুমান আরা বেগমের আদালতে হাজির করলে বিচারক তাকে কারাগারে নিয়ে যাওয়ার আদেশ দেন।
এদিকে মোহাম্মদ হাসানের আইনজীবী আদালতের কাছে জামিনের আবেদন করেন। গতকাল এ নিয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত না হলেও আজ বৃহস্পতিবার মোহাম্মদ হাসানের জামিন আবেদনের শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
অন্যদিকে বৃদ্ধ মোহাম্মদ লোকমানের পক্ষেও আজ আইনজীবী দাঁড়াবেন ছেলের জামিনের বিরোধীতা করার জন্য। এ ধরনের ঘটনায় আসামি দ্রæত জামিন পেলে তা সমাজের মধ্যে আরও খারাপ দৃষ্টান্ত তৈরী হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম আদালতে দায়িত্বরত বিএসটিআই’র প্যানেল আইনজীবী আশরাফ উদ্দিন খন্দকার জানান, মা-বাবার গায়ে হাত দেবার সাহস যে ছেলে করেছে তার দৃষ্টান্তমূলক সাজা হোক। যাতে এ ধরনের জঘন্য কাজ বন্ধ হয় সমাজে।
এ বিষয়ে মোহাম্মদ লোকমান জানান, ছেলে আমাদেরকে ভরণ-পোষণ দেয় না। তার উপর মারধর করছে। এ বিচার কোথায় চাইব?
মামলাটি দায়ের করা হয়েছে ১৮৬০ সালের বাংলাদেশ দন্ডবিধির ৩২৩/৩০৭/৩৫৪/৫০৬, ২০১৩ সালের পিতা-মাতার ভরণ-পোষণ আইনের ৫(১) ধারায়।