৪ কিলোমিটার সংযোগ সড়কের কার্পেটিং শুরু আনোয়ারায়

140

খালেদ মনছুর, আনোয়ারা

বঙ্গবন্ধু টানেলের দ্বিতীয় টিউবের কাজ শেষ হয়েছে গত ৮ অক্টোবর। নির্ধারিত সময়ের আগেই টানেলের সব কাজ শেষ হবে বলে জানিয়েছেন টানেল কর্তৃপক্ষ। অর্থাৎ ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসের আগেই খুলে দেয়া হবে যান চলাচলের জন্য। এ লক্ষ্যে এখন পুরোদমে শুরু হয়েছে দুই প্রান্তের এপ্রোচ সড়কের কার্পেটিংয়ের কাজ।
কর্ণফুলী টানেলের দুই প্রান্তে মোট ৫ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার এপ্রোচ সড়ক রয়েছে। এর মধ্যে আনোয়ারা প্রান্তে এপ্রোচ সড়ক রয়েছে চার কিলোমিটার। ফ্লাইওভার রয়েছে ৭০০ মিটার। ফ্লাইওভারের কাজ শেষ হওয়ার পর এখন এপ্রোচ সড়কের কার্পেটিংয়ের কাজ চলছে। চার লেনের ২২.৪০ মিটার প্রস্থ এ এপ্রোচ সড়কের দুই তিন স্তরের মেকাডমের কাজ শেষে মূল বিটুমিনের কার্পেটিংয়ের কাজ করা হবে। আগামী ২০২২ সালের জুন মাসের মধ্যে যান চলাচলের উপযোগী করা হবে বলে জানান দায়িত্বরত প্রকৌশলীরা।
সরেজমিন দেখা যায়, বঙ্গবন্ধু টানেলের আনোয়ারা প্রান্ত কাফকো এবং সিইউএফএল’র মাঝামাঝি তুলাতলী বিলে। মাঝখানে সিইউএফএল’র সার সরবারহের ব্যারেল থাকায় টানেলের মুখ থেকে বন্দর পুলিশ ফাঁড়ির পূর্ব পাশ পর্যন্ত ৭০০ মিটার ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হচ্ছে। তারপর থেকে চার কিলোমিটর এপ্রোচ সড়ক চাতরী চৌমুহনী বাজারের দক্ষিণ পাশে গিয়ে পিএবি সড়কের সাথে সংযুক্ত হয়েছে। দীর্ঘদিন বালি ভরাট এবং কালভার্টের কাজ শেষে এখন শুরু হয়েছে কার্পেটিংয়ের কাজ। ইতিমধ্যে দৃশ্যমান হয়েছে চার কিলোমিটার সড়ক। টানেলের মুখ থেকে প্রায় ৭০০ মিটার ফ্লাইওভারের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এখন ফ্লাইওভার দিয়েই চলছে টানেলের ভারি যানবাহন।
এদিকে টানেলকে ঘিরে পিএবি সড়কের ওয়াই জংশন থেকে কালাবিবির দীঘির মোড় পর্যন্ত ছয় লেন সড়কের নির্মাণ কাজ চলছে দ্রæত গতিতে। ৩৯০ কোটি টাকা ব্যায়ে এ সড়কের নির্মাণ কাজ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এনডিএ। এর মধ্যে ২৯০ কোটি টাকা মূল সড়ক নির্মাণের কাজ। বাকি ১০০ কোটি টাকা জমি অধিগ্রহণসহ বিবিধ ক্ষতিপূরণের। বর্তমানে ৮ কিলোমিটার মাটি ভরাটের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ১৬টি কালভার্টের নির্মাণ কাজও চলছে সমানতালে। ২০২২ সালের ডিসেম্বরের আগেই ছয় লেন সড়কের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ)।
সমীক্ষা মতে, বঙ্গবন্ধু টানেল খুলে দেয়ার পর টানেল দিয়ে বছরে প্রায় ৬৩ লাখ যানবাহন চলাচল করবে। এত বেশি যানবাহনের চাপ সামাল দিতেই টানেলকে ঘিরে আনোয়ারায় গড়ে তোলা হচ্ছে সড়ক নেটওয়ার্ক। সরু সড়কগুলো প্রশস্থকরণের কাজ চলছে। কালাবিবির দীঘির মোড় থেকে আনোয়ারা সদর পর্যন্ত ১৮ ফুট সড়ককে ছয় ফুট বাড়িয়ে ২৪ ফুটের কাজ চলছে। এছাড়া কালাবিবির দীঘি থেকে বাঁশখালী পর্যন্ত ছয় লেনের আরো একটি প্রকল্প বাস্তবায়নের পরিকল্পনা করছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। সেন্টার শাহাদত নগর থেকে পারকি সৈকত পর্যন্ত সড়কের দুই পাশ প্রশস্থকরণের কাজ করা হচ্ছে। এছাড়া আনোয়ারা হাসপাতাল থেকে পেশকার হাট পর্যন্ত সড়ক নতুন করে নির্মাণ করা হচ্ছে। যা পিএবি সড়কে চলাচলকারী যানবাহনগুলো বাইপাস সড়ক হিসেবে ব্যবহার করতে পারবে।
কর্নফুলী টানেল নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান (সিসিসির) সাব ঠিকাদার ও উপজেলা আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, টানেলকে ঘিরে সারাদেশের মত আনোয়ারার মানুষও স্বপ্ন দেখতো। এ স্বপ্ন এখন বাস্তবে রূপ নিচ্ছে। এজন্য আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই। টানেলের দ্বিতীয় টিউবের পর এখন এপ্রোচ সড়কের কার্পেটিংয়ের কাজ শুরু হয়েছে। টানেল চালু হলে আনোয়ারায় ব্যাপক উন্নয়ন সংঘটিত হবে।
বঙ্গবন্ধু টানেলের প্রকল্প পরিচালক (পিডি) ইঞ্জিনিয়ার হারুনুর রশিদ বলেন, টানেলের দ্বিতীয় টিউবের কাজ শেষ হলেও এখনো অনেক কাজ বাকি। সেখান থেকে বোরিং মেশিনটা বের করতে সময় লাগবে চার মাস। আনোয়ারা প্রান্তে এপ্রোচ সড়কের কাজ চলমান রয়েছে। আশা করি, আমরা নির্ধারিত সময়ের আগেই সব কাজ সম্পন্ন করতে পারব।