৪৪তম জাতীয় ক্রিকেট প্রতিযোগিতা অভিভাবকহীন চট্টগ্রামের বিদায়

17

 

চট্টগ্রাম জেলা বা বিভাগের কোন টিম বাইরে খেলতে যাবার আগে জেলা ক্রীড়া সংস্থার পক্ষ থেকে প্রেস রিলিজ পাঠানো হয় পত্রিকা অফিসে, খেলোয়াড় কর্মকর্তাদের নামতো থাকেই, টিমের ছবিও থাকে অনেক সময়- এটাই রেওয়াজ। এবারই ছিল ব্যতিক্রম- ৪৪তম জাতীয় ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় হবিগঞ্জ যাত্রার খবরটি কাউকে জানায়নি সিজেকেএস ক্রিকেট কমিটি। এ লুকোচুরির কারণ কি? গোপনে টিম যাবে কেন? সিজেকেএস ক্রিকেট কমিটির একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, টিম ম্যানেজার দেয়া হয়েছে জি এম হাসানকে।
তিনি যাবেন না, প্রক্সি দেয়ার জন্য গেছেন শওকত হোসেন, সফরসঙ্গী এনামুল হক। উক্ত কর্মকর্তা প্রশ্ন তোলেন- তার কনসেন্ট না নিয়ে জেলা সিনিয়র ক্রিকেট দলের ম্যানেজার দেয়া হলো কেন? গুটিকয়েক ছাড়া ক্রিকেটের উর্বর ভূমি চট্টগ্রামে কি আর কোন লোক নাই ক্রিকেট টিমের ম্যানেজার হওয়ার মত? নাকি নিজের কোরামের মানুষ ছাড়া আর কাউকে সুযোগ দেয়া যাবে না? অথচ মাত্র মাসখানেক আগে সিজেকেএস’র বয়সভিত্তিক ক্রিকেট ইতিহাসে সবচেয়ে বড় সাফল্য ২০২২ অনূর্ধ্ব-১৬ জোন (চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগ) চ্যাম্পিয়ন হয়েছে যে দল, সে দলের ম্যানেজারকে ডিস্টার্ব করে ব্যর্থ বানানোর জন্য রেওয়াজ ভঙ্গ করে একজন সহকারি ম্যানেজার পাঠিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করেছিল এই চক্রটিই। কোরামের লোকদের প্রোভাইড করার নোংরা তৎপরতার কারণে চট্টগ্রামের ক্রিকেট কাদের হাত দিয়ে কোথায় চলে যাচ্ছে তা আমাদের ক্রীড়াঙ্গনের অভিভাবক, সিজেকেএস সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের গভীরভাবে ভেবে দেখা দরকার বলে মনে করেন চট্টগ্রামের ক্রিকেটামুদে মানুষ এবং সংগঠকমহল।
দলের একজন সদস্য আক্ষেপের সুরে বলেন, রাশেদ আজগর চৌধুরী বা পরবর্তীতে আব্বাস ভাইদের আমরা কর্মকর্তা হিসেবে দেখেছি, তারা কিভাবে খেলোয়াড়দের এবং টিমকে উজ্জীবিত করেন। আর এখন? টিমের দায়িত্বশীল কারা? জেলার টিমের দায়িত্ব নিয়ে তারা আসেন কিন্তু টিম ফেলে ব্যক্তিগত কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। দলে তার গ্রহণযোগ্যতা কতটুকু? নিজেই তো দায়িত্বশীল নন, খেলোয়াড়দের কাছ থেকে দায়িত্বশীলতা কিভাবে আদায় করবেন? যাই হোক, কিশোরগঞ্জ আর মাদারীপুরকে হারায় চট্টগ্রাম এবং খেলার স্কোর কার্ডও আমরা পাই যা নিউজ আকারে ফলাও করে ছাপা হয়। কিন্তু গতকাল ভেন্যুর শেষ ম্যাচের খবর আমাদের মেইলে না আসায় নিশ্চিত হলাম- দল হেরেছে, চট্টগ্রামের পথে ফিরে আসছে। কারণ সিজেকেএস’র এ ক্রিকেট কমিটির আমলে এ ধরণের ঘটনা অনেক ঘটেছে- জিতলে নিউজ, না জিতলে খবর নাই।
ভেন্যু চ্যাম্পিয়ন হয়ে পরের রাউন্ডে যাওয়া হল না চট্টগ্রাম জেলা দলের। প্রথম দুই ম্যাচ জয়ের পর শেষ খেলায় হেরে ৪৪তম জাতীয় ক্রিকেট প্রতিযোগিতা থেকে বিদায় নিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা দল। গতকাল হবিগঞ্জ আধুনিক স্টেডিয়ামে তারা নারায়ণগঞ্জ জেলা দলের কাছে ৫০ রানে পরাজিত হয়। আগে ব্যাট করে নারায়ণগঞ্জ ৫০তম ওভারের শেষ বলে সবকটি উইকেট হারিয়ে ২০৪ রান সংগ্রহ করে। দলের পক্ষে ফয়সাল সর্বোচ্চ ৬২ রান করেন। চট্টগ্রামের পক্ষে অধিনায়ক কাজী কামরুল ৫টি উইকেট তুলে নেন। জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভাল করলেও মিডল অর্ডারের ব্যর্থতায় চট্টগ্রাম ৩৪.৪ ওভারে ১৫৪ রানে অলআউট হয়। দলের উইকেটরক্ষক ব্যাটার কপিল উদ্দিন ৫০ রান করেন। নারায়ণগঞ্জের সাইদ ২৯ রানে ৪টি উইকেট পান।
এদিকে চট্টগ্রাম ভেন্যুতে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে দিনাজপুর জেলা দল। গতকাল তারা মানিকগঞ্জ জেলা দলকে পাঁচ উইকেটে হারিয়েছে। এর আগে প্রথম খেলায় তারা লালমনির হাট জেলা দলকে ৫ উইকেটে ও দ্বিতীয় খেলায় নরসিংদিকে ৭৪ রানে হারায়।