হোমিওপ্যাথির জনক ডা. হানিম্যান স্মরণে

220

চিকিৎসা জগতে ডা. হানিম্যানের আবির্ভাব ধূমকেতুর মতো। চিরাচরিত চিকিৎসা প্রথার বিরুদ্ধে অনুমান আর কল্পনায় ভরা, রক্ত-রস ঝরানো হৃদয়হীন পদ্ধতির বিরুদ্ধে তাঁর আপোসহীন সংগ্রাম। তারই ফলশ্রুতি হোমিওপ্যাথি। হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা জগতে বিপ্লব এনেছে, প্রচলিত ধ্যান ধারণার মূলে আঘাত হেনেছে। কাজেই হোমিওপ্যাথির বৈপ্লবিক চিন্তাধারা, তার মৌলিকতা, অন্যান্য চিকিৎসা পদ্ধতির সঙ্গে তার পার্থক্য পরিষ্কারভাবে হৃদয়ঙ্গম করা প্রত্যেক হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকের অবশ্য কর্তব্য। হোমিওপ্যাথিতে মানুষকে এক অখন্ড চৈতন্যময় সত্তা বলে বিবেচনা করা হয়। মানবদেহের বিভিন্ন অংশের সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে এক প্রাণবন্ত সত্তা, যাকে তার অংশ থেকে আলাদা করা যায় না। প্রতি অঙ্গের সাথে প্রতি অঙ্গ যেমন অচ্ছেদ্য বন্ধনে আবদ্ধ তেমনি প্রতি অঙ্গ তার সামগ্রিক সত্তার সাথে নিবিড়ভাবে সন্বন্ধযুক্ত। মানুষ যখন সুস্থ থাকে তখন সামগ্রিকভাবেই সুস্থ থাকে, একটা ভালো লাগা- বোধ তার সমস্ত সত্তায় মিশে থাকে। মানুষ যখন পীড়িত হয় তখন সামগ্রিকভাবেই পীড়িত হয়, শুধু তার হাত-পা, নাক বা মুখ পীড়িত হয় না। মানুষকে যদি রোগ মুক্ত করতে হয় তবে সামগ্রিকভাবেই করতে হবে, হাত-পা, নাক-মুখের চিকিৎসা করলে আরোগ্য লাভ হতে পারে না। অখন্ড ব্যক্তি সত্তাই হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসার মূল লক্ষ্য। শুধু মানুষ নয়, হোমিওপ্যাথিতে রোগ এবং ঔষধকে এক সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বিচার করা হয়। রোগ অখন্ড, রোগ সম্পূর্ণ। মানবদেহে রোগশক্তির প্রকাশ হয় দেহমনের অস্বাভাবিক লক্ষণ সমূহের দ্বারা সৃষ্ট এক সামগ্রিক মূর্তির মাধ্যমে। দু-একটি লক্ষণ রোগ নয়, যেমন মানুষের শুধু মাত্র হাত বা পা মানুষ নয়। ঔষধ ও তেমনি শুধু দু একটি লক্ষণ সৃষ্টি করে না, সৃষ্টি করে এক অখন্ড রোগ। মানুষের সজীব সত্তার অবস্থা ঔষধ প্রয়োগ সামগ্রিকভাবে পরিবর্তিত অবস্থাকে পরিবর্তিত করে পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে আনে। এভাবে আরোগ্যক্রিয়া সাধিত হয়। সমস্ত ক্রিয়াই সাধিত হয় অতীন্দ্রিয় স্তরে (উণঘঅগওঈ চখঅঘঊ)। পূর্ণ জীবন্ত মানুষই হোমিওপ্যাথির অধিকার। হোমিওপ্যাথি মনেকরে এ বিশ্ব প্রকৃতি শক্তির লীলাভূমি। এক মহাশক্তি থেকে এবং সে শক্তি দিয়েই এ বিশ্বব্রহ্মান্ডের উৎপত্তি। জীব ও জড়ে সে শক্তি নিহিত থাকে। মানুষের মধ্যে এ শক্তিই জীবনী শক্তি নামে অভিহিত। অন্তর্নিহিত এ শক্তি বলেই জীবের প্রাণক্রিয়া সাধিত হয়। দেহযন্ত্রে বিরামহীনভাবে ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া চলে। এ প্রতিক্রিয়ার সাম্যাবস্থাই (উণঘঅগওঈ ঊছটওখওইজওটগ) মানুষের সুস্থাবস্থা সূচিত করে। সাম্যাবস্থা বিঘ্নিত হলে রোগ হয়। দেহতন্ত্রে শৃঙ্খলা পুন: স্থাপিত হলেই রোগ আরোগ্য হয়। ভেষজ পদার্থে এ শক্তি নিহিত থাকে। সে শক্তিতে মুক্ত করে সুনির্দিষ্ট নীতি অনুসরন করে প্রয়োগ করলে দেহতন্ত্রের অবস্থার গুণগত পরিবর্তন হয় এবং রোগ আরোগ্য হয়। সমস্ত ক্রিয়াই অতীন্দ্রিয় স্তরে (উণঘঅগওঈ চখঅঘঊ) প্রাণসত্তার ক্রিয়ার দ্বারা সাধিত হয়। চিকিৎসা বিজ্ঞান প্রকৃতপক্ষে জীবনের গতিবিষয়ক বিজ্ঞান (ঝঈওঊঘঈঊ ঙঋ ঞঐঊ ঠওঞঅখ উণঘঅগওঈঝ)। হোমিওপ্যাথিতে মানুষের মনোজগৎ ও ভাবাবেগকে বিশেষ মূল্য দেয়া হয় এবং দেহস্তর থেকে এদের উন্নতর বলে মনে করা হয়। হোমিওপ্যাথি মনে করে মানুষের মানসিকতা ও ভাবাবেগই মানুষকে স্বকীয় বিশিষ্টতা প্রদান করে। ব্যক্তিমানসেই ব্যক্তিমানুষের সত্যিকারের পরিচয় পাওয়া যায়। এ জন্যই হোমিওপ্যাথিতে মানসিক (গঊঘঞঊখ ঝণগচঞঙগঝ) লক্ষণ এতই গুরুত্বপূর্ণ। হোমিওপ্যাথি মনে করে মানুষের বর্তমান পীড়া কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। মানব ইতিহাসের প্রথম যুগে যেসব রোগ মনুষ্যজাতিকে বিধ্বস্ত করেছিল সেগুলি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যায়নি। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নরূপে সেগুলির পুনরার্বিভাব হয়। বর্তমান রোগ আদি রোগেরই নবীনতম প্রকাশ। কাজেই মানুষকে সম্পূর্ণরূপে নীরোগ করতে হলে এ আদি রোগ বীজের (ঋটঘউঅঘঊঘঞঅখ ঈঅটঝঊঝ) সম্পূর্ণ বিনাশসাধন দ্বারাই তা করতে হবে। হোমিওপ্যাথি চিররোগ (ঈঐজঙঘওঈ উওঝঊঅঝঊ) নিরাময় করে এবং জন্মগত ও বংশগত রোগধারা থেকে ব্যক্তিমানুষকে মুক্ত করে। এভাবে এক সুস্থ, সবল, বীর্যবান জাতি গড়ে তুলতে হোমিওপ্যাথি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে থাকে। হোমিপ্যাথিতে প্রতিষেধক ব্যবস্থায় ও মৌলিকতা লক্ষণীয়। হোমিওপ্যাথি মানুষের ধাতুপ্রকৃতির গুণগত পরিবর্তন সাধন করে, রোগ প্রবণতা কমায়, প্রতিরোধ শক্তি বাড়িয়ে প্রাণসত্তাকে সঞ্জীবিত করে। এর ক্রিয়া মৃদু, অনুত্তেজক ও স্বাদগন্ধহীন। এতে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয় না। রোগী এক রোগ থেকে মুক্ত হয়ে আরেক রোগের শিকার হয় না। রোগমুক্তি হয় স্থায়ী, নির্দোষ ও কষ্টবিহীন। হোমিওপ্যাথি এক ফোঁটাও রক্তপাত ঘটায় না, কোন বমনকারী ঔষধ, জোলাপ, ঘর্মনি:সারক ঔষধ প্রয়োগ করে না। ঔষধের বাহ্য প্রয়োগের দরুণ বহি: প্রকাশিত রোগ অন্তর্মুখী করে না। এর প্রয়োগক্ষেত্র অনেক ব্যাপক ও গভীর। চিকিৎসা বিজ্ঞানের এমন উদ্ভাবনের জনক হানেমান।
আজ ১০ এপ্রিল আমাদের মহান শিক্ষক, হোমিওপ্যাথির জনক চিকিৎসা বিজ্ঞানী ডা. স্যামুয়েল ফ্রেডারিক হানেম্যানের ২৬৫তম জন্মতিথি। দুনিয়াব্যাপী হোমিও চিকিৎসা জগতের অগণিত অনুসারী, ছাত্র, শিক্ষক, ডাক্তার, শুভানুধ্যায়ী ও হোমিও পেশাজীবী সংগঠনসমূহ দিনটিতে যথাযোগ্য মর্যাদায় তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করছে। ১৭৫৫ সালের এদিনে বর্তমান পূর্বজার্মানীল মিৎসেনের স্যাকসন শহরে তাঁর জন্ম হয়। সে শহরে বসেই তিনি চালিয়ে ছিলেন তাঁর যুগান্তকারী পরীক্ষা-নিরীক্ষা। তাঁর পিতার নাম ক্রিশ্চিয়ান গট্ফ্রায়েড এবং মাতার নাম জেহানা ক্রিশ্চিয়ান হানেমান। পিতা চীনা মাটির চিত্রকার্য করে জীবিকা অর্জন করতেন। বাল্যকালেই তিনি অসাধারণ প্রতিভার পরিচয় দেন। চরম দারিদ্র তাঁর বিদ্যাচর্চার পথে প্রচন্ড প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করে। কিন্তু লেখাপড়া ছেড়ে দেয়ার কথা হ্যানেম্যান ভাবতেই পারেন না। তবুও তাঁর পিতা বিদ্যাচর্চার ব্যয়ভার বহন করতে সমর্থ— হলেন না। প্রতিভাবান প্রিয় ছাত্রহিসাবে শিক্ষকরাই বিনা ব্যয়ে হানেমানের শিক্ষার ভার গ্রহণ করতে রাজি হলেন। শিক্ষক গণের সনির্বদ্ধ অনুরোধ এবং পুত্রের বিদ্যার্জনের অদম্য- ইচ্ছা দেখে তিনি পুত্রকে তাঁদের হাতে সমর্পন করলেন। তাঁর হানেমানকে বিশ বছর পর্যন্ত নানা বিষয়ে শিক্ষা দিলেন । এ সময়েই হানেমান গ্রীক, হিব্রæ, জার্মানি, ফরাসি, ল্যাটিন, ইটালিক স্প্যানিস, আরবি, ইংরেজি প্রভৃতি ভাষায় এবং রসায়ন শাস্ত্র ও চিকিৎসাশাস্ত্রে গভীর ব্যুৎপত্তি লাভ করেন। তাঁর অলৌকিক প্রতিভা ও বিভিন্ন বিষয়ে অসাধারণ প্রজ্ঞা দেখে তৎকালীন স্বনামধন্য রেক্টার সাহেব তাঁকে প্রতিভা ও প্রজ্ঞার দুইশিরা বিশিষ্ট এক অসাধারণ মানব বলে অভিহিত করেছিলেন। হানেমানের পিতাও তাঁকে উচ্চ শিক্ষায় বাধা দিলেন না। পিতার উপদেশ ছিল, সমস্ত বিষয়ে নিজের স্বাধীন বিচারবুদ্ধি প্রয়োগ করবে, কোন কিছু যুক্তি গ্রাহ্য না হলে শুধুমাত্র বিশ্বাসের উপর ভর করে তা গ্রহণ করো না। এ উপদেশ হানেমানের জীবনকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছিল। পিতার আশীর্বাদকে সম্বল করে হানেমান ডাক্তারী পড়ার জন্য মিৎসেন থেকে লিপ্জিগ্ শহরে উপস্থিত হলেন। এ সময় তিনি ইংরেজি ও জার্মানি ভাষা শিক্ষা দিয়ে এবং ইংরেজি গ্রন্থ জার্মানীতে অনুবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন এবং নিজের পড়াশুনার ব্যয়ভার বহন করতেন। কঠোর পরিশ্রম ও অধ্যাবসায়ের বলে হানেমান ১৭৭৯ খৃ: আর্লাজেন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চিকিৎসাশাস্ত্রে এম.ডি. ডিগ্রি লাভ করেন। অত:পর তিনি স্যাক্সনীতে ফিরে আসেন এবং একটি ছোট শহরে হেট্সটাডে চিকিৎসা পেশায় আত্মনিয়োগ করেন। পরে ১৭৮৪ খৃ: দেশাউ নগরের গোমার্নের জেলা চিকিৎসাকর্তা নিযুক্ত হন। এখানে থাকাকালীন তিনি রসায়ন শাস্ত্র সম্পর্কে বিশেষভাবে আগ্রহী হয়ে উঠলেন। এখানেই তিনি প্রথম চিকিৎসাগ্রন্থ রচনা করেন। এ গ্রন্থে তিনি চিকিৎসাবৃত্তি সম্পর্কে স্বীয় অভিজ্ঞতা ব্যক্ত করেন। ১৭৯০ খৃ: চিকিৎসাশাস্ত্রের ইতিহাসে এক নব অধ্যায়ের সূচনা হল। হানেম্যান তখন কালেন (ঈটখখঊঘ) রচিত মেটেরিয়া মেডিকা গ্রন্থখানি জার্মান ভাষায় অনুবাদ করছিলেন। তিনি সবিস্ময়ে লক্ষ্য করেন যে, কম্পজ্বরের ঔষধরূপে ব্যবহৃত হয়ে থাকে যে সিল্কোনা তার জ্বর উৎপাদিকা শক্তি রয়েছে বলে উল্লেখ করা আছে। নিউটনের নিকট আপেল পতনের ঘটনা এবং গ্যালিলিওর নিকট পিসার ধর্মমন্দিরের লণ্ঠনের দোলনের ঘটনা ও বিজ্ঞানীয় ফ্যারাডের নিকট বিদ্যুৎ শক্তি চুম্বকত্ব সৃষ্টি করতে পারে। বিপরীতভাবে চুম্বক ও বিদ্যুৎ সৃষ্টি করার তত্ত্ব সত্যে প্রমাণিত হয়ে তিনি ডায়নামো আবিষ্কার করেছিলেন। তেমনিভাবে হানেমানের নিকট প্রমাণিত হলো, যে ভেষজ রোগ উৎপাদন করতে পারে সে ভেষজই রোগ নিরাময় ঘটাতে পারে। অর্থাৎ সিল্কোনার জ্বর উৎপাদিকা শক্তিই তার জ্বর নিরাময়ের শক্তি। তিনি সিল্কোনা সেবন করেই তিনি আরোগ্য লাভও করলেন। এভাবেই তিনি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের প্রাচীন চিকিৎসা শাস্ত্রের মধ্যে বিভিন্ন পদার্থের রোগাৎপাদিকা শক্তির পরিচয় সংগ্রহের উদ্দেশ্যে অনুসন্ধান কার্য শুরু করলেন এবং নিজের নিকট আত্মীয় স্বজনের ওপর সে সমস্তে ভেষজের পরীক্ষা করতে লাগলেন। এভাবেই তাঁর মতবাদকে সুস্পষ্ট রূপ দিতে শুরু করেন। তিনি তিন হাজার বছরের পুরনো চিকিৎসা প্রথার বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করলেন।
১৮১০ খৃ: হানেম্যান তাঁর অমর গ্রন্থ অর্গানন প্রকাশ করেন। এ গ্রন্থে তিনি হোমিওপ্যাথির নীতিসমূহকে সূত্রবদ্ধ করেন। ঘোষণা করলেন যথার্থ আরোগ্য কলা-হলো বিশুদ্ধ অভিজ্ঞতামূলক বিজ্ঞান। আরোগ্য কলার সর্বোত্তম পন্থাগুলো হলো সদৃশ্যনীতি সমন্বিত পদ্ধতি অর্থাৎ হোমিওপ্যাথি।
মৃদু, দ্রæু, নিশ্চিত ও স্থায়ী আরোগ্য প্রদানের নিমিত্তে রোগের প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে এমন একটি ঔষধ নির্বাচন করতে হবে যা যে রোগ নিরাময় করতে হবে তার সদৃশ একটি রোগ উৎপাদন করতে পারে।
এভাবে হানেম্যানের খ্যাতি চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ল। ১৮১০ খৃ: অনেকটা বিজয়ী বেশে তিনি আবার লিপ্জিগে ফিরে এলেন। ১৮১১ খৃ: হানেমান ‘মেটেরিয়া মেডিকা পিউরার’ প্রথম খন্ড প্রকাশ করেন। বহুলোক তাঁর মতবাদে আকৃষ্ট হয়ে শিষ্যত্ব গ্রহণ করল। ১৮২৮ খৃ: অমর গ্রন্থক্রনিক ডিজিসেস্ প্রকাশিত হলো। এতে তিনি চিররোগের কারণ, তাদের স্বরূপ ও চিকিৎসা ব্যবস্থা সম্বন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করেন। হানেমানের জীবনই হানেমানের বাণী। তাঁর জীবন সত্যের সন্ধানে অনলস জ্ঞান সাধনা। ১৮৪৩ খৃ: ২ জুলাই উননব্বই বৎসর বয়সে এ মহাসাধক শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
বস্তুত পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম মনীষীদের মধ্যে হানেম্যান অন্যতম। এমন অধ্যবসায়, কঠোর পরিশ্রম, চরিত্রের দৃঢ়তা, সত্যের প্রতি এমন অবিচল আস্থা, মানবপ্রীতি পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। নিজে প্রায় নব্বইটি ঔষধ পরীক্ষা করেছিলেন এবং ৭০টির বেশি মৌলিক রচনা প্রণয়ন করেন। গ্যালনের পর আর কোন চিন্তানায়ক চিকিৎসা বিষয়ক এত বই লেখেননি এবং আর কেউ চিকিৎসাকলার ওপর সামগ্রিকভাবে এত প্রভাব বিস্তার করেন নি। তিনি হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা জগতে এক ধ্রæব আলোক। যতদিন পৃথিবীতে রোগযন্ত্রণা থাকবে, ততদিন চিকিৎসা শাস্ত্রও থাকবে। আর ততদিনই মহাসাধক চিকিৎসা বিজ্ঞানী হানেম্যান মানুষের মাঝে বেঁচে থাকবেন।
লেখক : প্রাবন্ধিক