হেফাজতে ইসলামের সাবেক প্রচার সম্পাদক গ্রেপ্তার

38

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সদ্য বিলুপ্ত কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার সম্পাদক মাওলানা জাকারিয়া নোমান ফয়েজীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকালে কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলার একটি গ্রাম থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে চট্টগ্রাম জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি দল।
সন্ধ্যা ৬টায় চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উত্তর) আফজারুল হক টুটুল মুঠোফোনে মাওলানা জাকারিয়া নোমান ফয়েজীকে চকরিয়া থেকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। হেফাজত নেতা মাওলানা জাকারিয়া নোমানকে চকরিয়া থেকে গ্রেপ্তারের পরপর চট্টগ্রামে নিয়ে আসা হয়েছে বলে জানা গেছে।
চলতি বছরের মার্চ মাসের শেষ দিকে হাটহাজারীতে সংগঠিত সহিংসতার ঘটনায় ইন্ধনদাতা হিসেবে তার নাম রয়েছে এমনটা জানিয়ে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার এস এম রশিদুল হক গণমাধ্যমকে বলেন, হেফাজতে ইসলামের প্রতিষ্ঠাতা সাবেক আমীর আহমদ শফীকে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় পিবিআইর তদন্তে তার নাম রয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃত মাওলানা জাকারিয়া নোমান ফয়েজীর পিতা মরহুম আল্লামা নোমান ফয়েজী। তিনি হাটহাজারী মাদ্রাসার শূরা সদস্য, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের বিলুপ্ত কমিটির উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও হাটহাজারী উপজেলার আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া হামিয়াচ্ছুন্নাহ মেখল মাদ্রাসার পরিচালক ছিলেন। চলতি বছরের গত ২২ মে আল্লামা নোমান ফয়েজী রাজধানীর উত্তরায় একটি বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন।
এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, হেফাজতের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার সম্পাদক মাওলানা জাকারিয়া নোমান ফয়েজী হাটহাজারীর সহিংসতার মামলার এজহারভুক্ত আসামি। তিনি চকরিয়ায় আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গত ২৬ মার্চ হেফাজতের তাÐবের পাঁচ দিন পর গত ৩১ মার্চ চট্টগ্রামের হাটহাজারী থানা ভবনে হামলা, ভ‚মি অফিসে ভাঙচুর, ডাকবাংলোয় আগুন, পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় ৬টি মামলা করে পুলিশ। এর ২৭ দিন পর হেফাজতের সাবেক আমীর জুনায়েদ বাবুনগরীর নাম উল্লেখ ২টিসহ মোট তিনটি মামলা করা হয়। এসব মামলায় জাকারিয়া নোমান ফয়েজীকে তালিকাভুক্ত আসামি করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতা করে ২৬ মার্চ জুমার নামাজের পর ঢাকার বায়তুল মোকাররম মসজিদ এলাকায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও সরকারি দলের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। ওই ঘটনার জের ধরে প্রতিবাদে হাটহাজারীতে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের সাথে পুলিশের সঙ্গে রক্ষক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। এ সময় পুলিশের ছোড়া গুলিতে একটি কাপড়ের দোকানের একজন দর্জি ও ৩ জন মাদ্রাসার ছাত্রসহ মোট ৪ জন নিহত হন।
নিহতের জেরে বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা হাটহাজারী থানা, ডাকবাংলো, সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) ও সদর ইউনিয়ন ভ‚মি অফিসে হামলা চালান। তারা হাটহাজারী-খাগড়াছড়ি সড়কের ওপর দেয়াল তৈরি করে ২ দিন অবরোধ করে রাখেন।