হাফভাড়ার আন্দোলন এবার চট্টগ্রামে

100

নিজস্ব প্রতিবেদক

সাম্প্রতিক সময়ে হাফভাড়ার দাবিতে সারাদেশে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নেমেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রামেও গত এক সপ্তাহ ধরে শিক্ষার্থীরা গণপিরিবহনে হাফভাড়ার দাবিতে আন্দোলন করছেন। নগরীর ওয়াসা, জিইসি ও ২ নং গেটসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধনে অংশ নিয়েছেন শিক্ষার্থী। বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশের বাধা ও শিক্ষার্থীদের আটকের মত ঘটনাও ঘটেছে।
গতকাল সোমবার নগরীর ওয়াসা মোড়ে গণপবিহনে হাফভাড়া ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। এতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। এর আগে গত ২৩ ও ২৫ নভেম্বর নগরীর ২নং গেটে হাফভাড়ার দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে গাড়িভাড়া বেড়েছে। এতে করে শিক্ষার্থীদের খরচও বেড়েছে। গণপরিবহন ব্যবহারকারী অধিকাংশই মধ্যবিত্ত-নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। সবাই টিউশনির টাকায় পড়ালেখার খরচ চালান। শিক্ষার্থীদের জন্য একটি বিশেষ টিকিটের দাবিও জানান। যা দিয়ে শিক্ষার্থীরা একটি নির্দিষ্ট খরচে গণপরিবহনে যাতায়াত করতে পারবেন।
অন্যদিকে সারাদেশে সড়কে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের প্রাণ ঝরছে। নানা অনিয়মের সুযোগে অল্পবয়সীরা গাড়ি চালানোর অনুমতি পাচ্ছে। ফলে সড়কে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের ঝুঁকি বাড়ছে। তাই শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে অর্ধেক ভাড়ার প্রজ্ঞাপণের পাশাপাশি নিরাপদ সড়কের দাবিও জানান তারা।
চট্টগ্রাম সরকারি মহসিন কলেজের ছাত্র প্রতিনিধি ও মহসিন কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম আহŸায়ক মায়মুন উদ্দিন মামুন পূর্বদেশকে বলেন, সিনিয়রদের কাছে শুনেছি চট্টগ্রামে শিক্ষার্থীদের হাফভাড়ার ব্যবস্থা ছিল। যা বর্তমানে বন্ধ হয়ে গেছে। যদিও বিআরটিসি বাসে শিক্ষার্থীদের জন্য ভাড়া অর্ধেক করা হয়েছে। কিন্তু সব শিক্ষার্থী তো আর বিআরটিসি বাসে যাতায়াত করতে পারে না। অধিকাংশ শিক্ষার্থীকে অন্যান্য গণপরিবহনে যাওয়া আসা করতে হয়। বিআরটিসি বাসের পাশাপাশি অন্যান্য গণপরিবহনেও হাফভাড়া নির্ধারণ করা প্রয়োজন।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি রায়হান উদ্দিন পূর্বদেশকে বলেন, শিক্ষার্থীদের হাফভাড়ার দাবি যৌক্তিক। তাই সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট শিক্ষার্থীদের দাবির সাথে একাত্মতা পোষণ করে আন্দোলনে অংশ নিয়েছে। আমরা গণপরিবহনে হাফভাড়া দিতে চাই। আমরা হাফ পাস চাই। পাশাপাশি সড়কে যেন নিরাপদভাবে চলতে পারি সে নিশ্চয়তা চাই। আমরা চাই না সড়ক দুর্ঘটনায় কেউ মারা যাক। সরকারের কাছে আবেদন, শিক্ষার্থীদের জন্য সরকার যেন হাফ পাসের ব্যবস্থা করে দেয়। পাশাপাশি জ¦ালানি তেলের দাম কমানোরও দাবি জানাচ্ছি। সরকার চাইলে শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ টিকিটের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। যেটি দিয়ে শিক্ষার্থীরা একটি নির্দিষ্ট খরচের বিনিময়ে গণপরিবহনে যাতায়াত করতে পারবে।
প্রসঙ্গত, জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির পর বাস ভাড়া পুনর্নির্ধারণ করা হয়। এরপর শিক্ষার্থীরা বেশ কিছুদিন ধরে হাফভাড়ার দাবিতে বিক্ষোভ করেন। এর মধ্যে সড়কে নটরডেম কলেজের এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনার পর আবারও সরব হয়ে ওঠেন শিক্ষার্থীরা। এর আগেও আন্দোলন করেছিলেন শিক্ষার্থীরা। তাদের এ আন্দোলন যেন চলছেই।