ঐতিহাসিক জব্বারের বলী খেলা আজ

12

ক্রীড়া প্রতিবেদক

ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে দেশের যুব সমাজকে সংগঠিত করতে ১৯০৯ সালে স্থানীয় বদরপাতি এলাকার আব্দুল জব্বার সওদাগর নগরীর লালদীঘি মাঠে আয়োজন করেন কুস্তি প্রতিযোগিতা। পরবর্তীতে তা আব্দুল জব্বারের বলী খেলা নামে পরিচিতি পায়। প্রতি বাংলা সনের ১২ বৈশাখ এ খেলা এবং একে ঘিরে জমজমাট বৈশাখী মেলা চলে ক’দিন।
বছর ঘুরে ঐতিহাসিক জব্বারের বলী খেলার ১১৫ তম আসর বসছে আজ ২৫ এপ্রিল লালদীঘি ময়দানে। এবারের বলী খেলায় সারাদেশ থেকে শতাধিক কুস্তিগির (বলী) অংশ নেবেন বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং মেলা ও প্রতিযোগিতা আয়োজক কমিটির চেয়ারম্যান জহর লাল হাজারী। এতে প্রধান অতিথি থেকে বলী খেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী এমপি।এবারের খেলায় আকর্ষণীয় ট্রফি ছাড়াও বলীদেরকে প্রাইজমানি দেওয়া হবে। গত আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন কুমিল্লার শাহজালাল বলী। এবারের বলী খেলার স্পন্সর হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছে চট্টগ্রামের প্রথিতযশা ক্রীড়া পৃষ্ঠপোষক এনএইচটি হোল্ডিংস লিমিটেড’র অঙ্গ প্রতিষ্ঠান এনএইচটি স্পোর্টস কমপ্লেক্স এন্ড জুস বার।
উৎসব মুখর পরিবেশে নগরীর লালদীঘি পাড়স্থ সিটি কর্পোরেশন পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে গত ১৯ এপ্রিল এবারের বলী খেলার ট্রফি এবং জার্সি উন্মোচন করেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা এম রেজাউল করিম চৌধুরী। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন এবারের জব্বারের বলী খেলার স্পন্সর প্রতিষ্ঠান এনএইচটি হোল্ডিংস লি. এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ তানসীর।
জব্বারের বলী খেলা উপলক্ষে গত ২৩ এপ্রিল বর্ণাঢ্য র‌্যালির আয়োজন করা হয়। রং-বেরং এর ব্যানার ফেস্টুনে সাজানো গাড়ি নিয়ে র‌্যালিটি বলী খেলার স্থান লালদীঘি মাঠ থেকে শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় লালদীঘি মাঠে এসে শেষ হয়।
এদিকে জব্বারের বলী খেলা উপলক্ষে তিন দিনব্যাপী বৈশাখী মেলায় দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্য, বিশেষ করে হস্তশিল্প প্রদর্শন ও বিক্রির জন্য অস্থায়ী দোকান স্থাপন করেছেন। শত শত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী তাদের হস্তশিল্পসহ গৃহস্থালীর নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বিক্রির জন্য এই মেলার অপেক্ষায় থাকেন, তেমনি বন্দরনগরী এবং আশেপাশের বাসিন্দারা তাদের রান্নাঘর ও গৃহস্থালীর প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে মুখিয়ে থাকেন এ মেলার জন্য।
ইতোমধ্যেই আন্দরকিল্লা মোড় থেকে কোতোয়ালী মোড় পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার সড়কজুড়ে অস্থায়ী দোকান বসিয়েছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত ব্যবসায়ীরা। তারা গৃহস্থালি ও রান্নাঘরের বাসন, মৃৎশিল্প, খেলনা, মিষ্টি, ঝাড়ু, পাটি, আসবাবপত্র, কাঠ ও বাঁশের তৈরি শো-পিস, বেতের জিনিসপত্র, গাছের চারা, মাছ ধরার জালসহ বিভিন্ন ধরনের হস্তশিল্প বিক্রি করছেন। প্রতিটি দোকানেই দর্শনার্থী এবং ক্রেতাদের প্রচুর ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে।