হঠাৎ মারমুখি হলো কেনো ?

26

নিজস্ব প্রতিবেদক

নগরীর কাজির দেউড়ি মোড়ে গত সোমবার বিকালে পুলিশের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয় বিএনপি নেতাকর্মীরা। বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ এবং ১০ দফা দাবিতে যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসাবে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করেছিল বিএনপি। সমাবেশ চলাকালে মিছিল সহকারে যোগ দিতে যাওয়া নেতাকর্মীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় চারটি মামলা দায়ের হয়েছে। নমনীয় নীতিতে চলা বিএনপির সাথে হঠাৎ কেন পুলিশের সংঘর্ষে? এই প্রশ্ন এখন অনেকের মাঝে।
কোনো ধরনের সংঘাতে না জড়িয়ে আন্দোলনকে এগিয়ে নিতে চায় বিএনপি। সাম্প্রতিক বিএনপির কর্মসূচিগুলোতেও সেটার প্রয়োগ দেখা গেছে। বিশাল জনসভা বা সমাবেশ করলেও সেগুলোতে কোনো ধরনের ঝামেলার সৃষ্টি হয়নি। এমনকি প্রশাসনের পক্ষ থেকে যে জায়গায় অনুমতি দেয়া হয়েছে, সেখানেই তারা কর্মসূচি পালন করেছে। যুগপৎ আন্দোলনের কর্মসূচির অংশ হিসাবে ধারাবাহিক কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নেমেছে দলটি। আগামী ২৫ জানুয়ারি দেশের সব বিভাগীয় শহর ও জেলায় সমাবেশ কর্মসূচি দিয়েছে। ধারাবাহিক কর্মসূচি নিয়ে এগুনো দলটির নেতাকর্মীরা চট্টগ্রামে হঠাৎ করেই পুলিশের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হন। এজন্য বিএনপির পক্ষ থেকে পুলিশের উপর দোষ চাপানো হচ্ছে। অন্যদিকে পুলিশ বলছে বিনা উস্কানিতেই এমন ঘটনা ঘটেছে।
হঠাৎ কেন এমন ঘটনা ঘটলো জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহŸায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, পূর্ব পরিকল্পিতভাবে পুলিশ এ ঘটনার সূত্রপাত ঘটিয়েছে। মামলা দেয়ার পরিকল্পনায় পুলিশ ইচ্ছেকৃতভাবে করেছে। আমরা প্রত্যেকটা কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে করে আসছি। সোমবারও শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ সমাবেশ চলছিল। পুলিশের হামলার কারণে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ সংঘর্ষে রূপ নিয়েছিল।
অতি উৎসাহী কিছু পুলিশ সদস্যের কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করেছেন মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর। তিনি বলেন, পুলিশের মধ্যেও কিছু অতি উৎসাহী পুলিশ আছে। তারা ইচ্ছেকৃতভাবে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। শান্তিপূর্ণ সমাবেশ আমরা চালিয়ে যাচ্ছিলাম। এর মধ্যে হঠাৎ করে পুলিশ হামলা করে, তারপর সংঘর্ষ শুরু হয়। পুলিশ সহনশীল হলে এ ঘটনা এড়ানো যেতো। যখন সংঘর্ষ শুরু হয়ে যায়, তখন তো আমাদের পক্ষে সেটা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয় না। অন্যদিকে পুলিশের দাবি, বিনা উস্কানিতেই এমন ঘটনার সূতপাত হয়েছে। কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহেদুল কবির বলেন, বিএনপি কার্যালয়ে সমাবেশের সময় বিএনপির নেতাকর্মীরা বিনা উস্কানিতেই পুলিশের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন। ট্রাফিক পুলিশের একটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় পাঁচ পুলিশ সদস্য গুরুতর আহত হয়েছেন।
উল্লেখ্য, সরকারবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে সোমবার বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে বিএনপি। মিছিল নিয়ে সমাবেশে যেতেই সোমবার বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে কাজীর দেউড়ি এলাকায় পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে চলা এই সংঘর্ষে পুলিশ সদস্য ও বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়। ঘটনাস্থল থেকে ২০ জনকে আটকের পর যাচাই-বাছাই শেষে ১৬ জনকে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ।
এ ঘটনায় চারটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলাগুলোতে কেন্দ্রীয় বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, নগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন ও সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্করসহ ২৫৮ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত পরিচয়ের ১৩শ জনকে আসামি করা হয়েছে।