হঠাৎ চন্দনাইশে ডায়রিয়ার প্রকোপ

44

চট্টগ্রামের চন্দনাইশে করোনা ভাইরাসের রোগী বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি গত ১ সপ্তাহ ধরে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আশংকাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। গত ৫ দিনে চন্দনাইশ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩৫ জন, দোহাজারীতে ২১ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়েছে।চিকিৎসকদের মতে করোনো ভাইরাসের ৫টি লক্ষণের মধ্যে ডায়রিয়া ১টি লক্ষণ। রমজানে বাইরের ইফতারি খাওয়া, হঠাৎ তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে ডায়রিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানান চিকিৎসকরা। প্রতিদিন বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। গত ২২ এপ্রিল দোহাজারীতে ১৫, চন্দনাইশে ৭, ২১ এপ্রিল চন্দনাইশে ১০, ২০ এপ্রিল ৬, ১৯ এপ্রিল ৮, ১৮ এপ্রিল ৪ জনসহ ৩৫ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়েছে। চন্দনাইশ ও দোহাজারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জায়গা না থাকায় রোগীরা ঠাঁই নিয়েছেন হাসপাতালের মেঝেসহ আশপাশের বারান্দায়। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে ডায়রিয়ার প্রকোপে বিপাকে পড়েছেন চিকিৎসকরা। পুরুষ ও মহিলা ওয়ার্ডে বিছানা সংকুলান না হওয়ায় বাধ্য হয়ে তাদের হাসপাতালের মেঝে, বারান্দায় শুয়ে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। চন্দনাইশ ও দোহাজারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, গত ১ সপ্তাহ ধরে হঠাৎ ডায়রিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন প্রায় ২০ জন। প্রতিদিন আউটডোরে চন্দনাইশ ও দোহাজারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অন্যান্য সময়ের তুলনায় ডায়রিয়া রোগী ৩ গুণ, তথা ২’শ জনের মধ্যে ৬০ থেকে ৭০ জন ডায়রিয়া রোগী। এদের মধ্যে শিশুসহ সকল বয়সের ডায়রিয়া রোগী রয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য প.প.কর্মকর্তা ডা. শাহীন হোসাইন চৌধুরী। বর্তমানে চন্দনাইশ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি আছেন ১৫ জন, দোহাজারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১২ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি রয়েছে।
২২ এপ্রিল বিকালে সরেজমিন চন্দনাইশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায় , পুরুষ ও মহিলা ওয়ার্ডে ডায়রিয়া রোগীদের জন্য কোন আলাদা বেড না থাকলেও কর্নার চালু করা হয়েছে। এ হাসপাতালে গত এক সপ্তাহে প্রায় ৩৫-৪০ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে। এ ছাড়া বর্হিবিভাগে চিকিৎসা নিয়েছে আরো প্রায় ১০০-১২০ জন। প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন অনেকে। অপরদিকে দোহাজারী হাসপাতালে গত এক সপ্তাহে প্রায় ৭০ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। এ ছাড়া বর্হিবিভাগে শতকরা ৮০ জন ডায়রিয়া রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আবু তৈয়ব। এ দুই হাসপাতালে বেডের অপ্রতুলতার কারণে বাধ্য হয়ে রোগীরা মেঝেতে অবস্থান নিয়েছেন। কঠোর লকডাউনের কারণে যানবাহনের অভাবে গ্রাম থেকে রোগীরা হাসপাতালে আসতে নানা দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। চন্দনাইশে অশঙ্কাজনক করোনা ভাইরাস সংক্রমণের মধ্যে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় প্রাথমিকভাবে রোগীদের খাবার স্যালাইন খাওয়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। সাথে ডাবের পানি। চন্দনাইশ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ শাহীন হোসাইন চৌধুরী বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে এ দুই হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা দিনের পর দিন বেড়ে চলছে। এতে সাধারণ মানুষের ভীত হবার কোন কারণ নেই। ডায়রিয়ার কারণ হিসেবে আমরা মনে করছি, মৌসুম পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সিজনাল ভাইরাস আর ভ্যাপসা গরম এজন্য দায়ি। সবাই যদি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকে এবং প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে, তাহলে খুব তাড়াতাড়ি এ থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে।