স্বাক্ষর হলো বার্ন ইউনিটের চূড়ান্ত চুক্তি

18

নিজস্ব প্রতিবেদক

চীন সরকারের সহায়তায় চট্টগ্রামে একটি বার্ন ইনস্টিটিউট স্থাপনের চুক্তি সই হয়েছে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মধ্যে এই চুক্তি সই হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার এবং চীনের পক্ষে বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়নে বাস্তবায়ন চুক্তিতে সই করেন। তবে নকশায় কিছুটা পরিবর্তন আনতে শীঘ্রই কাজ শুরু হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহেদ মালেক, শিক্ষা উপমন্ত্রী মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. আজিজুর রহমান, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম, বার্ন চিকিৎসা সম্প্রসারণে সমন্বয়ক ডা. সামান্ত লাল সেন, চীন আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিতা সংস্থার ভাইস চেয়ারম্যান দেং বোকিং, ঢাকাস্থ চীন দূতাবাসের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এবং চীনের ৫ সদস্যের একটি এক্সপার্ট টিম উপস্থিত ছিলেন।
চুক্তির আওতায় চীন সরকারের সম্পূর্ণ অনুদানে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এই বার্ন ইনস্টিটিউট স্থাপিত হবে। এজন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের মেডিক্যাল যন্ত্রপাতি এবং আসবাবপত্র চীন সরকার অনুদান হিসাবে দেবে।
কাজটি সম্পন্ন করতে দুই বছরের মতো সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, ‘ঢাকার মতোই চট্টগ্রামেও আগুনজনিত বিভিন্ন দুর্ঘটনা নৈমিত্তিক ঘটে চলেছে। এজন্য চট্টগ্রামে ঢাকার মানের একটি বার্ন ইনস্টিটিউটের প্রয়োজন ছিল। ঢাকায় শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটের ৫০০ বেডই প্রায় পূর্ণ থাকে। ঢাকায় এই একটি বার্ন ইনস্টিটিউটের কারণে ঢাকার ওপর যে চাপ পড়ছে চট্টগ্রামে ১৫০ বেডের বার্ন ইনস্টিটিউট চালু হলে তা কিছুটা কমবে। এর পাশাপাশি শিগগিরই আমরা আরও নতুন করে ৫টি বিভাগে বার্ন ইনস্টিটিউট নির্মাণ কাজ হাতে নিয়েছি।’
সারা দেশে বার্ন চিকিৎসা সম্প্রসারণে সমন্বয়কের দায়িত্বে থাকা ডা. সামান্ত লাল সেন এ ব্যাপারে বলেন, ‘১ মার্চ চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিলো। চীনা প্রতিনিধি দল সকল আনুষাঙ্গিক কাজ সম্পন্ন করতে সময় নেয়। সব শেষ করে আজ (৩০ মার্চ) প্রকল্পের চূড়ান্ত চুক্তি সম্পন্ন হয়। তারা দ্রুত কাজ শুরু করবেন।’
এদিকে বার্ন ইউনিটের অবকাঠামো নির্মাণে কাজ শুরু প্রসঙ্গে চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান বলেন, ‘কাজ শুরু হতে সামান্য সময় লাগতে পারে। অবকাঠামো নির্মাণের জন্য নকশা এখনো নির্ধারিত হয়নি। আগে যে ডিজাইন দিয়েছেন সেটা আবার পরিবর্তন করবেন। তারপর কাজ শুরু হবে। তবে সবকিছু দ্রæত হবে।’
উল্লেখ্য, চমেক হাসপাতালে পেছনে গোয়াছি বাগান এলাকায় প্রায় এক একর জায়গায় নির্মাণ হবে এ বার্ন ইউনিট। প্রকল্পটিতে ১৫০টি শয্যা থাকবে। তার মধ্যে ২০টি আইসিইউ, শিশুদের জন্য ৫টি আইসিইউ, এইচডিইউ ২৫টি, অত্যাধুনিক অপারেশন থিয়েটার করা হবে ২টি। রোগী আনা-নেওয়ার সুবিধার জন্য তিনটি রাস্তা বানানো হবে। চট্টেশ^রী রোডের দিক থেকে একটি রাস্তা হবে। সেটি হবে বার্ন হাসপাতালের প্রধান রাস্তা। চমেক হাসপাতালের পেছনে ছাত্র হোস্টেলের দিক থেকে আসবে আরও একটি রাস্তা। সর্বশেষ রাস্তাটি হবে মিজান হোস্টেলের দিক দিয়ে। সেখানে মাঝখানে পাহাড় থাকায় তা ঘুরিয়ে ওয়ার সিমেট্রি হয়ে আনা হবে। হাসপাতালটি ৬তলা ভবনের করা হবে। প্রথম তলায় থাকবে ইমার্জেন্সি ওয়ার্ড এবং ওপিডি, দ্বিতীয় তলায় তিনটি ওটি (অপারেশন থিয়েটার) এবং নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ), তৃতীয় তলায় পুরোটা হাই ডিপেন্সি ইউনিট (এইচডিইউ), ৪র্থ, ৫ম ও ৬ষ্ঠ তলায় ওয়ার্ড এবং অফিস।