সেই ওসি মিজানকে গ্রেপ্তারে পরোয়ানা

45

নিজস্ব প্রতিবেদক

কলেজছাত্রীকে হোটেল কক্ষে আটকে রেখে ধর্ষণ চেষ্টা মামলার প্রধান আসামি পুলিশের সাবেক ওসি জিএম মিজানুর রহমানের জামিন বাতিল করে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। গতকাল রোববার বিকালে চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল- ৭ এর বিচারক ফেরদৌস আরার আদালত তার জামিন বাতিল করে এ পরোয়ানা জারির আদেশ দিয়েছেন।
এ বিষয়ে আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মুজিবুর রহমান ফারুক বলেন, আসামি বার বার আদালতে গরহাজির থাকার কারণে আদালত তার জামিন বাতিল করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ১২ জুলাই ফয়’স লেক এলাকা থেকে নগরীর নামকরা এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রী ও তার বন্ধুকে তুলে নিয়ে ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলার কসবা থানার তৎকালীন ওসি (তদন্ত) মিজানুর রহমান ভয়ভীতি দেখান। এরপর জিজ্ঞাসাবাদের কথা বলে গাড়িতে তুলে নগরীর চকবাজারে একটি হোটেলে নিয়ে যায়। সেখানে ছেলেমেয়ে দুজনকে আলাদা কক্ষে আটকে রেখে মেয়েটিকে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা করলে মেয়েটি বাথরুমের কাঁচ ভেঙ্গে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। পরে হোটেলের লোকজন তাকে উদ্ধার করে বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়। এ ঘটনায় ওই বছরের ১৬ জুলাই মেয়েটির বাবা হুমায়ন কবির বাদি হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় ওসি মিজানসহ তিনজনকে আসামি করে দু’টি মামলা দায়ের করেন। বাকি দু’আসামি ওই হোটেলের কর্মচারী।
আদালত থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, হুমায়ন কবিরের দায়ের করা দু’টি মামলার মধ্যে একটি ছিল নারী নির্যাতন দমন আইনের ৭/৯ (৪)-খ ধারায়। আরেকটি, জোরপূর্বক মেয়েটিকে তুলে নিয়ে মিথ্যা পরিচয় দিয়ে খালি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করানোর অভিযোগে। এ মামলা দন্ডবিধির ৪২০, ১৭০ ও ৩৮৬ ধারায় দায়ের করা। প্রথম মামলায় ২০১১ সালের ১ ডিসেম্বর ট্রাইব্যুনালে ওসি মিজানসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। এরপর শুরু হয় সাক্ষ্যগ্রহণ। গতকাল ছিল মামলার ধার্য তারিখ।
এদিকে ঘটনার পর প্রায় সাড়ে তিনমাস পলাতক থাকা ওসি মিজানুর রহমান ২০১১ সালের ৩১ অক্টোবর চট্টগ্রাম মহানগর মুখ্য হাকিমের আদালতে হাজির হলে বিচারক তাকে জেলহাজতে পাঠান। হাইকোর্টের আদেশে ২০১২ সালের জুলাই মাসে তিনি জামিনে মুক্তি পান। ওসি মিজানের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠার পরই তাকে বরখাস্ত করা হয়েছিল পুলিশ বিভাগ থেকে।