সীতাকুন্ডের পেট্রোল পাম্পের ১১ কর্মচারী কারাগারে

17

সীতাকুন্ড প্রতিনিধি

সীতাকুন্ডে ৯ পর্যটকের ওপর হামলার ঘটনায় দায়ের হওয়া একটি মামলায় বিএন সোনারগাঁও পেট্রোল পাম্পের সুপার ভাইজারসহ ১১ কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত বুধবার মধ্যরাতে উপজেলার বাড়বকুন্ড নড়ালিয়া এলাকার সোনারগাঁও পেট্রোল পাম্পে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, রাঙ্গামাটি ও কক্সবাজার ভ্রমণ শেষে ঢাকার উদ্দ্যোশে রওনা হন একসাথে আসা ৯ পর্যটক। গত বুধবার রাত আনুমানিক একটার দিকে সীতাকুন্ডের বাড়বকুন্ড নড়ালিয়া অতিক্রমকালে তেল নেওয়ার জন্য বিএন সোনারগাঁও পেট্রোল পাম্পে প্রবেশ করেন। পর্যটকরা পাম্পে প্রবেশ করে হাতে সিগারেট জ্বালানো অবস্থায় বাথরুম খুঁজতে থাকে।
এসময় পেট্রোল পাম্প কর্মচারীরা সিগারেট বন্ধ করে বাথরুমে যেতে বলেন এবং সেদিকে অকটেক-পেট্রোল মজুদ আছে বলে বিষয়টি অবগত করেন। পর্যটকরা এসময় উত্তেজিত হয়ে এক কর্মচারীকে গালমন্দ করেন। এরপরই পাম্পে থাকা কর্মচারী, ট্রাক চালক ও হেলফাররা লোহার হ্যামার এবং লাঠি-সোঁটা দিয়ে পর্যটকদের মারধর করে। পরে পর্যটকদের একজন ৯৯৯ নম্বরে ফোন করলে সীতাকুন্ড থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের উদ্ধার করেন। পুলিশ মারধরের ঘটনায় জড়িত ওই পেট্রোল পাম্পের ১১ জন কর্মচারীকে আটক করে। বৃহস্পতিবার সকালে ৯ পর্যটকের একজন মইন হাসান খান বাদী হয়ে ১১ জনের নাম উল্লেখ করে আরো ৮/৯ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে হত্যা চেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। পুলিশ মামলা পরবর্তী আসামিদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠিয়ে দেন।
হামলার শিকার কয়েকজন পর্যটক জানান, আমরা ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটি, নটরডেম কলেজসহ বিভিন্ন কলেজ ও ইউনিভার্সিটির ছাত্র। রাঙ্গামাটি, কক্সবাজার সফর শেষে গত বুধবার রাতে চারটি মোটরসাইকেল নিয়ে আমরা ৯ জন ঢাকায় ফিরছিলাম। রাত ১টার দিকে গাড়ির তেল নেওয়ার জন্য সীতাকুন্ডের বাড়বকুন্ড নড়ালিয়া বিএন সোনারগাঁও পেট্রোল পাম্পে দাঁড়ায়। এসময় মোটরসাইকেল থেকে নেমে একজন শৌচাগার ব্যবহার করতে চান। তখন পাম্পের এক কর্মচারী তার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন এবং তাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে করতে মারতে আসেন। পরে তার সঙ্গে ম্যানেজারসহ পাম্পের সব কর্মচারী যোগ দেন। মারামারির একপর্যায়ে অন্য একটি গাড়ির চালক মারামারির কিছুটা দৃশ্য মোবাইল ফোনে ভিডিও করেন। হামলাকারীরা মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে কয়েকটি মোবাইল ফোনও কেড়ে নেন। পরে আমরা ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিয়ে বিষয়টি অবগত করলে সীতাকুন্ড থানা পুলিশ এসে আমাদের উদ্ধার করেন।
এসব বিষয়ে বিএন সোনারগাঁও পেট্রোল পাম্পের পরিচালক মো. মুসলিম উদ্দিন বলেন, ৪টি মোটরসাইকেল নিয়ে ৯ জন যুবক পেট্রোল পাম্পে প্রবেশ করেন তেল নেওয়ার জন্য। এ সময় তারা সিগারেট হাতে বাথরুমে যেতে চান। আমাদের এক কর্মচারী সিগারেট বন্ধ করে বাথরুমে যেতে বলাতে তারা আমরা কর্মচারীর উপর হামলার চেষ্টা করেন। পরে সব কর্মচারী এক হয়ে তাদের প্রতিহত করেন। আমার মনে হচ্ছে পাম্পে যখন তারা প্রবেশ করেন, তখন তারা স্বাভাবিক ছিলেন না, নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ছিল। ঐ সময় তারা বিভিন্ন পদ-পদবীর লোকের ভয়ভীতিও দেখান পেট্রোল পাম্পে থাকা কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের।
সীতাকুন্ড মডেল থানার ওসি মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমরা ৯৯৯ থেকে কল পেয়ে পেট্রোল পাম্প থেকে পর্যটকদের উদ্ধার পরবর্তী চিকিৎসা ও থাকার ব্যবস্থা করি। এ ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে ঘটনাস্থল থেকে ১১ জনকে আটক করি। পরে হত্যা চেষ্টার অভিযোগে এক পর্যটকের দায়ের করা মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে তাদের জেল হাজতে পাঠানো হয়।