সরকার গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছে : তথ্যমন্ত্রী

6

নিজস্ব প্রতিবেদক

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, দারিদ্রতা কমছে, দেশের সমৃদ্ধির সাথে প্রতিটি মানুষের সমৃদ্ধি এবং স্বচ্ছলতা এসেছে। বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে বাংলাদেশের এই অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অনেকের পছন্দ হয় না। গতকাল শুক্রবার নগরীর দেওয়ানজী পুকুর পাড়ের বাসায় সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, কিছু কিছু পত্রিকায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে নেগেটিভ রিপোর্ট করা হয়। বিদেশ থেকে চিহ্নিত ব্যক্তিবিশেষ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে। কিন্তু এতে বাংলাদেশকে দমিয়ে রাখা যায়নি। ক‚টনীতিকদের আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানো সমীচীন নয়। প্রয়োজনে ক‚টনীতিকদের আচরণ সম্পর্কিত ভিয়েনা কনভেনশন তাদেরকে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হবে। আমরা বাজেটের জন্য ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে কারো দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াই না। বরং আমাদেরকে সাহায্য দেওয়ার জন্য তারা এখন অর্থের ঝুলি নিয়ে আমাদের কাছে আসে। আমাদেরকে খাটো করার সময় চলে গেছে।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজ করোনা মহামারি এবং বিশ্বমন্দা পরিস্থিতির মধ্যেও দেশ যেভাবে এগিয়ে চলেছে, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি যেভাবে অব্যাহত আছে, এটি পৃথিবীর বিভিন্ন পত্রপত্রিকা প্রশংসা করছে। স¤প্রতি বøুমবার্গ একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে, সেখানে তারা বলেছেন, করোনার মধ্যেও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার কারণে আগামী নির্বাচনে জননেত্রী শেখ হাসিনার জয়লাভের সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি বলেন, আপনাদের মনে আছে, যখন বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন করবে না বলে ঘোষণা দিয়েছিল, তখন কিছু বড় পত্রিকায় ব্যানার হেডিং দিয়েছিল ‘পদ্মা সেতু আর হচ্ছে না’। কিন্তু বাংলাদেশে পদ্মা সেতু হয়েছে নিজেদের টাকায়। দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে গণমাধ্যম ও সাংবাদিকরা ভ‚মিকা রাখে। গণমাধ্যমের ভ‚মিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গণমাধ্যম মানুষকে সঠিক তথ্য পেতে এবং সঠিক চিন্তা করার ক্ষেত্রে সহায়তা করে। একই সাথে মানুষকে বিশ্বপরিস্থিতিও জানাতে সহায়তা করে। আমাদের সরকার গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছে, তা অব্যাহত রাখতে আমরা বদ্ধপরিকর।
তিনি আরও বলেন, আমরা মনে করি, গণমাধ্যমের স্বাধীনতার সাথে রাষ্ট্রের বিকাশ, গণতন্ত্রের বিকাশ জড়িত। একই সাথে আমাদের সম্মিলিত দায়িত্বশীলতাও আছে। স্বাধীনতার নামে যদি আমরা কেউ অপসাংবাদিকতা করি, তাহলে দেশের আপামর জনগণ এবং সাংবাদিক সমাজ সেটিকে সমর্থন করে না। সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে সাংবাদিকতার নামে রাজনীতি করা সমীচীন নয়।
প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামানের গ্রেপ্তার বিষয়ে আমেরিকাসহ ১২টি দেশ বিবৃতি দিয়েছে- এ বিষয়ে সাংবাদিকদের তথ্যমন্ত্রী বলেন, ১২টি দেশের দূতাবাসের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি তাদের ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়েছে। ভারতের দিকে তাকিয়ে দেখেন, সেখানে কয়েকদিন ধরে বিবিসির কার্যালয়ে তল্লাশি করা হয়েছে, সেখানে কি এ ধরনের বিভিন্ন দেশ উদ্বেগ প্রকাশ, বিবৃতি দিয়েছে? দেওয়া হয়নি। কারণ ভারত বড় দেশ, ভারতের শক্তি-সামর্থ বেশি, সেজন্য সেখানে সাহস দেখাতে পারেনি।
ক‚টনীতিকদের সাথে ইফতারে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে তাদের সহায়তা কামনা করেছেন- এ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আমরাতো প্রথম থেকেই বলে আসছি, তারা জনগণের কাছে যান না। তারা বিদেশি ক‚টনীতিকদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে পদলেহন করেন। আমি আশা করেছিলাম, তারা দুস্থ মানুষের সাথে ইফতার করবেন, সেটি না করে ফাইভ স্টার হোটেলে বসে ক‚টনীতিকদের সাথে ইফতার করেছেন। সেখানে গিয়ে আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের জন্য অনুনয়-বিনয় করেছেন। এটি আসলে দেশবিরোধী এবং দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের শামিল।
তিনি বলেন, বিশ্বমন্দা পরিস্থিতির মধ্যে ইউকে এবং কন্টিনেন্টাল ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পণ্যের সঙ্কট হয়েছে। আমাদের দেশে কোনও পণ্যের সঙ্কট হয়নি। ইউরোপের সুপার মার্কেটে এক লিটারের বেশি ভোজ্যতেল, ছয়টার বেশি ডিম কিনতে দেওয়া হয় না একসাথে। কারণ সেখানে পণ্যের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে বিশ্বমন্দা পরিস্থিতির মধ্যে আমাদের দেশে পণ্যের মূল্য বেড়েছে, কিন্তু পণ্যের সঙ্কট তৈরি হয়নি। এখানেই হচ্ছে তাদের সাথে আমাদের পার্থক্য।
এ সময় চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহাতাব উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন, সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম, দক্ষিণ জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।