সমাজ থেকে শিক্ষা

7

 

আমরা প্রত্যেকে কোনো না কোনো সমাজ বাস করি। আর সমাজ থেকেই শিখি জীবনের ভালো-মন্দের দিকগুলো। এখান থেকেই ছোট একটা শিশু বড় হতে হতে অনেক কিছু শিখে নেয়। শিখে নেয় কিভাবে কথা বলতে হয়,কার সাথে মিশতে হয়। এখান থেকেই আবার খারাপও হওয়া যায়।কারণ এসব কিছু সমাজের কাউকে না কাউকে অনুসরণ করে শেখা হয়। এই সমাজ থেকেই তৈরি হয় জজ-ব্যারিস্টার, পুলিশ, চোর-ডাকাত থেকে শুরু করে যত পেশার মানুষ আছে সবাই। কিন্তু অনেক সময় যে সমাজে আমরা বেড়ে উঠি সেই সমাজ বিপদের সময় কোনো কাজে আসে না। বরং এই দুঃসময়ে অন্য সমাজের মানুষগুলো সাহায্যের হাত বাড়িয়ে এগিয়ে আসে। সেদিন প্রায় মৃত্যুর মুখে পড়েছিল আমাদের পরিবার। স্ব-সমাজ থেকে সাহায্যের বদলে পেয়েছি তাদের নিষ্ঠুর মনের প্রকাশ। অথচ এই সময় সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন কিছু দূরের মহান মানুষ। আমরা তাঁদের কাছে চির কৃতজ্ঞ। অন্তত সাহায্য করতে তো চেয়েছিলেন। কিন্তু সমাজের কেউ সেদিন দাঁড়াননি আমাদের পাশে। সেদিন মৃত্যুকে খুব কাছ থেকে দেখেছি। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের সেই মৃত্যুর মুখ থেকে আমাদের রক্ষা করেছেন। সেদিন পৃথিবীতে ভূ-কম্পন অনুভূত না হলেও মনে হয় সেদিন কেঁপে ওঠেছিল পৃথিবীটা। সেদিন একসাথে মৃত্যুর সাথে লড়াই করেছে আমাদের পুরো পরিবার। কোনো বাবা-মাই সন্তানের করুণ আর্তনাদ শুনতে চান না। এ রকম পরিস্থিতির মুখে সব বাবা-মাই জীবন্ত হয়ে পড়েন। আজকাল সমাজ থেকে মানবিকতা শব্দটি হারিয়ে গেছে। ক্রমশঃ হ্রাস পাচ্ছে সামাজিক দায়বোধ। পারস্পরিক স¤প্রীতি, সৌহার্দ্যের বদলে জন্ম নিচ্ছে পান থেকে চুন খসলেই রেষারেষি। এই রেষারেষি অনেক সময় মারাত্মক আকার ধারণ করছে। তাহলে আমরা সমাজ থেকে কি শিখলাম। তবে কী সমাজ আমাকে শিখিয়েছে মিথ্যের পিছু ছুটতে? জ্বলন্ত সত্যেকে ঢাকা দিতে? শিখিয়েছে তেলা মাথায় তেল দিতে? শিখিয়েছে চাপাবাজ মুখোশপরা কিছু কীট পতঙ্গকে সমাজে বাঁচিয়ে রাখতে? এই যদি হয় আজকের সমাজ তাহলে সামাজিক জীব হিসেবে আমাদের গর্ব করার কিছুই থাকল না।