সংক্রমণরোধে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেসব বিষয়ে মনোযোগ দরকার

1

নিজস্ব প্রতিবেদক

অবশেষে প্রায় দেড় বছর পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলেছে। পৃথিবীর আর কোনো দেশে একনাগাড়ে এত দীর্ঘ সময়ের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়নি। স্কুল চলাকালীন সময় শিক্ষার্থীদের জন্য শ্রেণিকক্ষে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে, যা করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে অত্যন্ত জরুরি।
গবেষণায় দেখা গেছে, একটি জায়গায় যখন সবাই মাস্ক পরে তখন সংক্রমণ প্রতিরোধ করা যায় প্রায় ৯৫ শতাংশ। তবে এ ক্ষেত্রে সবাইকেই সঠিকভাবে সঠিক মাস্কটিই ব্যবহার করতে হবে। তিন স্তরের সার্জিক্যাল মাস্ক সবচেয়ে ভালো। তবে পাতলা কাপড়ের তিন স্তর বিশিষ্ট মাস্কও কার্যকরী।
তবে প্রশ্ন হলো, স্কুল-কলেজের সব শিক্ষার্থীই কি এ ধরনের মাস্কের ব্যবস্থা করতে পারবে? সবারই কি সেই আর্থিক সামর্থ্য আছে? সার্জিক্যাল মাস্ক ব্যয়বহুল এবং একবার মাত্র ব্যবহার্য। সেক্ষেত্রে কাপড়ের তৈরি মাস্ক ধুয়ে ব্যবহার করা যায় বার বার। আর সাশ্রয়ীও। যেসব শিক্ষার্থী সঠিক মাস্কের ব্যবস্থা করতে পারবে না তাদের এখন করণীয় কি?
এ বিষয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়েছেন যুক্তরাজ্যোর শেফিল্ড ইউনিভার্সিটির সিনিয়র রিচার্স এসোসিয়েট ডা. খোন্দকার মেহেদী আকরাম। গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, সরকার এবং স্কুল কর্তৃপক্ষের উচিত হবে সেসব শিক্ষার্থীদের জন্য কাপড়ের মাস্ক সরবরাহ করা। প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে ৩টি করে কাপড়ের মাস্ক সরবরাহ করা যেতে পারে। যা তারা ধুয়ে বার বার ব্যাবহার করবে। প্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকের সব শিক্ষার্থীকে মাস্ক কীভাবে ব্যবহার করতে হয় তার ওপর ক্লাস শুরুর প্রথম দিনই প্রশিক্ষণ দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, প্রতিটি শ্রেণিকক্ষকে এক একটি ‘বাবল’ হিসেবে গণ্য করতে হবে। একটি বাবলের শিক্ষার্থীরা আরেকটি বাবলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মিশতে পারবে না। সপ্তাহে দুইবার শিক্ষার্থীদের বাধ্যতামূলক র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন কোভিড টেস্ট করতে হবে। একটি বাবল বা শ্রেণিকক্ষের কোনো শিক্ষার্থীর করোনা পজিটিভ আসলে গোটা বাবলকে ‘রেড বাবল’ হিসেবে গণ্য করে ঐ বাবলের সবাইকে সপ্তাহে দুইবার কোভিড টেস্ট করাতে হবে। স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীদের জন্য এখন সবচেয়ে দরকার মাস্ক এবং র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন কীট। অবশ্যই সবাইকে দ্রুত ভ্যাকসিন দিতে হবে। যতদিন তাদের জন্য টিকার ব্যবস্থা না করা যায় ততদিন তাদেরকে ‘শিল্ডিং’ বা রক্ষাবলয়ের মধ্যে রাখতে হবে।
এ বিষয়ে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি পূর্বদেশকে বলেন, শিক্ষার্থীদের সবাইকে এখনও টিকার আওতায় আনা যায়নি। তাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সংক্রমণরোধে স্বাস্থ্যবিধির প্রতি অধিক গুরুত্ব দিতে হবে। এ ব্যপারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর ১৯ দফা নির্দেশনা দিয়েছে। ১৮ বছরের কম বয়সীদের টিকা দেওয়ার ব্যাপারে নির্দেশনা আসলে সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দেন তিনি।