যৌন নির্যাতন পরবর্তী ডাক্তারী পরীক্ষা ও নানাবিধ সমস্যা প্রসঙ্গে

193

জিয়া হাবীব আহ্সান, এডভোকেট

আমরা জানি যে, পারিবারিক সহিংসতার প্রধান ৪ টি ধরন রয়েছে যা শারীরিক, মানসিক, অর্থনৈতিক ও যৌন নির্যাতন। যৌন নির্যাতন নারীর জন্য এক চরম অভিশাপ। এ ধরনের নির্যাতনের শিকার নারীরা লোক লজ্জার ভয়ে বলতেও পারেন না আবার সইতেও পারে না। যৌন নির্যাতনের মধ্যে ধর্ষণ নারীর জীবনের স্বাভাবিক চলাফেরার বিরুদ্ধে এক হুমকি। ধর্ষণের পর নারীরা যখন এর প্রতিকার করতে চায়, ধর্ষকের শাস্তি চায়, তখন তাদের আরেক জটিলতার সম্মুখীন হতে হয়। মামলা করতে গেলে ডাক্তারী পরীক্ষা করতে হবে এবং সার্টিফিকেট ছাড়া মামলা পরিচালনায় নানা প্রতিবদ্ধকতার সৃষ্টি হয়। এ ক্ষেত্রে ডাক্তারী পরীক্ষা সম্পর্কে একটু আলোচনা করা দরকার। ডাক্তারী পরীক্ষাকে ইংরেজিতে বলা হয় মেডিকোলিগ্যাল। এ ডাক্তারী পরীক্ষা চার ধরনের হয়। প্রথমত ; শারীরিক পরীক্ষা, শারীরিক পরীক্ষায় নির্যাতনের শিকার নারীর শরীরে নির্যাতনের কোন চিহ্ন পাওয়া যায় কি না সে জন্য কাপড় খুলে শরীরের সমস্ত অঙ্গসমূহ খুব ভালভাবে দেখা হয়। অর্থাৎ তার শরীরে কোন জোর-জবরদস্তি, কামড়, আঁচড় বা জখম এই ধরনের কোন চিহ্ন পাওয়া যায় কি না। এ পরীক্ষা করতে গিয়ে নারীদের নানাবিধ সমস্যায় পড়তে হয়। ধর্ষণের শিকার নারীকে পর্যায়ক্রমে সেই অপমান ও নির্যাতন প্রমাণ করতে গিয়ে বার বার হোঁচট খেতে হয় এবং লজ্জায় পড়তে হয়। পর্যাপ্ত মহিলা চিকিৎক না থাকায় পুরুষ ডাক্তার কর্তৃক ডাক্তারী পরীক্ষায় অনেক ভিকটিম এতে অনীহা প্রকাশ করেন। দ্বিতীয়ত ; প্যাথলজী পরীক্ষাঃ ধর্ষণের শিকার নারী বা শিশুকে প্যাথলজী পরীক্ষা করা হয়। অর্থাৎ ধর্ষণকারীর কোন আলামত যেমন বীর্য বা অন্যকোনো আলামত সনাক্ত হয় তবে নিশ্চিতভাবে বলা হয় সেই ব্যক্তি তাকে ধর্ষণ করেছে। তৃতীয়ত রেডিওলজী পরীক্ষা:- নির্যাতনের শিকার ব্যক্তির বয়স প্রমাণের জন্য এক্সরে পরীক্ষা করতে হয়। বর্তমান আইন অনুযায়ী ১৬ বছরের নিচে কোন মেয়ের যৌন সম্পর্ক স্থাপনের অনুমতি বা সম্মতি প্রদানের কোন ক্ষমতা নাই। ১৬ বছরের নিচে কোন মেয়ে ইচ্ছা বা অনিচ্ছাকৃতভাবে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করলে তা ধর্ষণ বলে গণ্য হবে। চতুর্থত ; রাসায়নিক পরীক্ষা :- নির্যাতনের শিকার নারীর পরনের কাপড়ে কোন আলামত বা চিহ্ন আছে কি না তা পরীক্ষার জন্য রাসায়নিক পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়।
মেডিকোলিগ্যাল বা ডাক্তারী পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তা :
ধর্ষণের ঘটনা বা অপরাধ প্রমাণ করার জন্য ব্যতিক্রম ব্যতীত একমাত্র বৈজ্ঞানিক সাক্ষ্য হচ্ছে ডাক্তারী পরীক্ষা । ঘটনা ঘটার ২৪ ঘন্টার মধ্যে ডাক্তারী পরীক্ষা করা উচিৎ, তা না হলে অনেক আলামত বা চিহ্ন নষ্ট হয়ে যেতে পারে । ধর্ষণের শিকার নারী কতক্ষণ পূর্বে, কতটা এবং কিভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তা পরীক্ষা করে ডাক্তার সনদপত্র প্রদান করে। ধর্ষণের শিকার একজন নারী তার ঘটনা প্রমাণের জন্য ডাক্তারী পরীক্ষা জরুরি তাই সত্যতা প্রমাণের জন্য ডাক্তারী পরীক্ষা এত বেশী গুরুত্বপূর্ণ। তবে মহামান্য উচ্চ উচ্চ আদালতের নজিরে বলা আছে, ‘শুধুমাত্র ডাক্তারী পরীক্ষা না হওয়ার কারণে ধর্ষণ প্রমাণ হয়নি বা আসামী ধর্ষণ করেনি এ অজুহাতে সে (আসামী) খালাস পেতে পারে না’।
ডাক্তারী পরীক্ষা করার প্রচলিত নিয়ম :
থানায় মামলা দায়ের করার পরে সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তা আদালতের অনুমতি নিয়ে নির্যাতনের শিকার নারীকে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য ডাক্তারের নিকট নিয়ে আসেন। সব পরীক্ষাই হয় জেলা পর্যায়ের হাসপাতালে ও মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগে। সিভিল সার্জনের তত্ত¡াবধানে জেলা পর্যায়ে আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) এবং একজন সিনিয়র নার্স বা মহিলা ডাক্তারের উপস্থিতিতে পরীক্ষা করেন। জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির সদস্য হিসেবে মামলা প্রমাণের জন্য সিভিল সার্জন দায়বদ্ধ থাকেন। আদালতের আদেশ থাকলেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পরীক্ষা করাতে রাজী হন। ডাক্তারী পরীক্ষার সনদপত্রটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট থানায় প্রদান করেন। নির্যাতনের শিকার ব্যক্তি বা তার আত্মীয় স্বজনের নিকট সনদপত্র দেয়া হয় না। অথচ ভিকটিম বা বাদী পক্ষ এর একটি কপি পেতে হকদার। পুলিশ ফরোয়াডিং ছাড়া ডাক্তারী পরীক্ষায় অস্বীকৃতি জানালে ডাক্তারের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেওয়া যাবে ।
উপরোক্ত নিয়মের সমস্যা সমূহ :
দূরবর্তী অঞ্চলের ধর্ষণের শিকার নারীকে জেলা পর্যায়ের হাসপাতালে পরীক্ষা করানো অধিকাংশ ক্ষেত্রে কঠিন হয়ে পড়ে। সচরাচর যানবাহন না পাওয়া, দূরত্ব বেশী হওয়া এবং ডাক্তারের সংখ্যা কম হওয়া বিশেষ কারণ। ক্ষতিগ্রস্থ নারীর ডাক্তারী পরীক্ষা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে করানো না হলে অপরাধ প্রমাণের জন্য চিহ্ন এবং ক্ষতির পরিমান নির্ণয় করা যায় না। ফলে আসামী পক্ষ সুবিধা পায়। আদালতের আদেশপত্রের প্রয়োজনীয়তার জন্য ডাক্তারী পরীক্ষা দ্রæত করানো সম্ভব হয় না। বর্তমানে ওসিসি তে সরাসরি ডাক্তারী চিকিৎসা ও পরীক্ষার ব্যবস্থা আছে। সনদ শুধু থানায় প্রদান করার নিয়ম থাকায় নির্যাতনের শিকার নারী ফলাফল সম্পর্কে সম্পূর্ণ অজ্ঞ থাকে। ডাক্তারী পরীক্ষার রিপোর্ট সময়মতো পেতে অসুবিধা হলে নারীর ন্যায় বিচার প্রাপ্তিতে মারাত্বক হুমকি হয়ে দাঁড়ায়। বর্তমানে এ ব্যাপারে সে সংকট দূরীকরণের জন্য গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সার্কুলার রয়েছে।
ও.সি.সি ওয়ার্ড : জেলার প্রধান সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সমূহে ও.সি.সি. (ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার) ওয়ার্ড আছে। যেখানে নির্যাতিতাদের চিকিৎসা, ডাক্তারী পরীক্ষা সহ মামলা দায়েরের সু ব্যবস্থা আছে।
পরীক্ষায় অস্বীকৃতি জানালে সংশ্লিষ্ট ডাক্তারের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়া যাবে। চিকিৎসককে সব কথা খুলে বলতে হবে : মনে রাখতে হবে চিকিৎসকের কাছে যাবার পর তিনি ভিকটিমকে সাহায্য করতে চাইবেন এবং সে কারণেই ধর্ষিতার কাছ থেকে ঘটনার বিস্তারিত জানতে চাইবেন। কোন রকম দ্বিধা না করে চিকিৎসক যা জানতে চাইবেন তা জানাতে হবে।
ধর্ষণের শিকার হলে করণীয় কি ?
প্রমাণ বা সাক্ষ্য সংরক্ষণ করতে হবে। ঘটনার শিকার হবার পর যে অবস্থায় যত সম্ভব সে অবস্থায়ই থাকতে হবে। পরিচ্ছন্ন হবার জন্য নিজেকে অতিদ্রæত বা তখনই ধৌত করা বা গোসল করার প্রয়োজন নেই। ঘটনার শিকার হওয়ার সময় যে কাপড় ছিল তা প্রমাণ হিসেবে সংরক্ষণ করতে হবে এবং কাগজের ব্যাগে (প্লাস্টিক নয়) রেখে দিতে হবে। ডাক্তারী চিকিৎসা ও পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে।
থানায় অভিযোগ করতে হবে :
যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আপনার নিকটবর্তী থানায় অপরাধ সম্পর্কে অভিযোগ করুন। আপনার অভিযোগ ঠিকমত লিপিবদ্ধ হয়েছে কি না তা দেখে নিন। এ সম্পর্কে নিশ্চিত হবার জন্য, যদি সম্ভব হয়, তবে একজন আইনবিদকে আপনি সাথে নিতে পারেন। ভারপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার আপনাকে যে প্রশ্ন করবেন তার সঠিক উত্তর দিতে চেষ্টা করুন। আপনার পরিধেয় কাপড় ও অন্যান্য সাক্ষ্য সাথে রাখুন। এসবই ভারপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসারকে অনুসন্ধানের কাজে সাহায্য করবে। আপনি যদি চান মহিলা পুলিশ অফিসারের সাথে এ ঘটনা সম্পর্কে আলোচনা করতে পারেন। আপনি যদি গোপনীয়তা রক্ষা করতে চান তবে পৃথকভাবে পুলিশ অফিসারের কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করেন তবে ম্যাজিষ্ট্রেট কোর্টে পিটিশন মোকদ্দমা দায়ের করতে পারেন । মনে রাখবেন, এ ব্যাপারে শুধুমাত্র ঘটনার শিকারগ্রস্ত মহিলাই নয়, তার পক্ষ থেকে যে কেউই, যিনি অপরাধ সম্পর্কে জানেন, তিনিই এ অভিযোগ দায়ের করতে পারবেন। আপনার অভিযোগের প্রেক্ষিতে ভারপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার আপনাকে মেডিক্যাল পরীক্ষা করার জন্য নিয়ে যাবেন এবং তিনি চিকিৎসকের কাছ থেকে ধর্ষণ সম্পর্কিত রিপোর্ট সংগ্রহ করবেন, এসম্পর্কিত বিভিন্ন সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করবেন। ধর্ষিতা নিজেও সরাসরি মেডিক্যাল, ডাক্তারী পরীক্ষা ও চিকিৎসার জন্য নিজেকে উপস্থাপন করতে পারেন। পুলিশ ফরোয়াডিং ছাড়া ডাক্তারী জন্য বেশ কিছু বেসরকারি সাহায্য সংস্থা আছে। চিকিৎসকের সাহায্য পেতে সহায়তা করুন। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব থানায় রিপোর্ট করতে বলুন। তার মানসিক অবস্থা ও অনুভূতির দিকে খেয়াল রেখে তাকে শিশু হিসেবে বিবেচনা করে তার সাথে শিশুর মতই ব্যবহার করুন । সে যে তার কোনো আঘাত বা অপব্যবহার থেকে নিরাপদ-এই বিশ্বাস তার মাঝে জাগিয়ে তুলুন।
চিকিৎসক ভিকটিমকে পরীক্ষা করবেন :
ডাক্তার ভিকটিমের পরিধেয় কাপড় দেখতে চাইবেন, কেন না তা দেখা ও পরীক্ষা করা তার অত্যন্ত প্রয়োজন। কাজেই চিকিৎসকের কাছে যাবার আগে নিজেকে যতদূর সম্ভব ধৌত করবেন না এবং সে সময় অর্থাৎ অপরাধ সংঘটনের সময় ধর্ষিতা যে কাপড়ে ছিলেন সে কাপড়ে যেতে যেন দ্বিধা না করেন। এ ঘটনা যদি ভিকটিমকে মানসিকভাবে অসুস্থ করে তোলে তবে তা দূর করার জন্য চিকিৎসককে ওষুধ দিতে বলতে পারেন। পরবর্তী মাসিক যদি সময়মত না হয় তবে সাথে সাথেই চিকিৎসকের সাথে দেখা করা উচিত হবে।
একজন মানবাধিকার কর্মী বা সমাজকর্মী হিসেবে আপনি কিভাবে একজন প্রশ্ন : ধর্ষিতাকে সাহায্য করতে পারেন? :
উত্তর : ধর্ষণ হচ্ছে অত্যন্ত অবমাননাকর ও ভীতিকর অভিজ্ঞতা। মানবাধিকার কর্মী, সমাজ কর্মী, স্বাস্থ্য কর্মী, পুলিশ অফিসার, পরামর্শদাতা, আত্মীয়-পরিজন অথবা বন্ধু-বান্ধব যারাই এ অপরাধের শিকারগ্রস্ত একজন মহিলাকে সহায়তা করবেন তারা সহানুভুতি এবং ইতিবাচক মনোবৃত্তি নিয়েই তার সাথে আলোচনা করুন। এ ব্যাপারে গোপনীয়তা রক্ষা করুন এবং তার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করুন। এ অপরাধের একজন শিকারগ্রস্ত মহিলার পক্ষে সরাসরি ‘ধর্ষিতা হয়েছে’ কথাটা বলা সম্ভব নয়। তিনি স্বভাবতই শারীরিক আক্রমণ সম্পর্কে আলোচনা করতে দ্বিধাবোধ করবেন। সুতরাং আপনার নিজস্ব কৌতুহল মিটাবার জন্য প্রশ্ন করবেন না। সতর্কতার সাথে তার প্রতিটি কথাকে গুরুত্ব দিয়ে মনোযোগের সাথে শোনার চেষ্টা করুন। এ সময় তার প্রিয়জনের সাহচর্য প্রয়োজন, কাজেই তাকে একাকী থাকতে বারণ করুন। তাকে পরামর্শ নেবার ব্যাপারে সাহায্য করুন। এ বিষয়ে পরামর্শ দান বা সহায়তা করা।
ধর্ষণ ও সহিংসতার শিকার নারী ও শিশুর ডাক্তারী পরীক্ষা :
“ধর্ষণ এবং অন্যান্য সহিংসতার শিকার কোন নারী ও শিশু পুলিশের মাধ্যমে অথবা নিজেই সরকারি কিংবা সরকার কর্তৃক স্বীকৃত যে কোন বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পরিচালনাধীন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে কর্তব্যরত মেডিকেল অফিসারের কাছে গেলেই তাৎক্ষণিকভাবে তিনি তাকে যথানিয়মে পরীক্ষা করবেন। ডাক্তারী পরীক্ষার পর পরীক্ষক ডাক্তার মেডিকেল সার্টিফিকেট সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক ও নিকটস্থ থানায় প্রেরণ করাসহ যাকে পরীক্ষা করা হবে তাকেও ১(এক) কপি প্রদান করবেন। চিকিৎসক এবং তার সহকারীগণ ধর্ষণ ও সহিংসতার শিকার নারী ও শিশুকে প্রয়োজনীয় সেবা প্রদান করবেন (তথ্যসূত্র- সচিব, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় ; স্বাপকম/ জি আর- ১৯/৯৭/৯৩/১, আশ্বিন, ১৪০৯/১৬, সেপ্টেম্বর, ২০০২ )।
উপরের আলোচনা থেকে ধর্ষিতার চিকিৎসা, ডাক্তারী পরিক্ষা, আলামত সংগ্রহ ও আইনী ব্যবস্থা সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত ধারণা পাওয়া যায় ।