‘যুক্তরাষ্ট্রে ৬ মাসের মধ্যেই হামলা চালাতে পারে আইএস’

2

আফগানিস্তানে সক্রিয় জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) মাত্র ছয় মাসের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রে হামলা চালানোর সক্ষমতা অর্জন করতে পারে এবং তাদের তা করার ইচ্ছাও আছে বলে ধারণা যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দাদের।
মঙ্গলবার মার্কিন কংগ্রেসে দেওয়া সাক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা নীতি বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি কলিন কাহল এ কথা বলেছেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। দুই দশকব্যাপী যুদ্ধে হেরে অগাস্টে আফগানিস্তান থেকে পাতাতাড়ি গুটিয়ে চলে আসার পর এখনও যুক্তরাষ্ট্র দেশটিকে নিজেদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি মনে করছে, কালের এই মন্তব্যে তেমনটাই প্রতিধ্বনিত হয়েছে। এর আগেও যুক্তরাষ্ট্রের নানা কর্মকর্তা আফগানিস্তানের জঙ্গি সংগঠনগুলো নিয়ে তাদের শঙ্কার কথা জানিয়েছিলেন।
আফগান যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে জয় পাওয়া তালেবানের সঙ্গে জঙ্গি গোষ্ঠী আইএসের ঘোর শত্রুতা আছে। যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান থেকে চলে আসার পর আইএসের একের পর এক আত্মঘাতী বোমা ও অন্যান্য হামলায় জর্জরিত দেশটির আইন-শৃঙ্খলা ঠিক রাখতে তালেবানকে প্রচুর খাটতে হচ্ছে। আফগানিস্তানে আইএস মূলত দেশটির সংখ্যালঘু শিয়া স¤প্রদায়ের ওপর বোমা হামলা চালাচ্ছে। তারা এমনকী পূর্বাঞ্চলীয় শহর জালালাবাদে তালেবান মিলিশিয়া বাহিনীর এক সদস্যেরও শিরñেদ করেছে।
মার্কিন সেনেটের আর্মড সার্ভিসেস কমিটিকে দেওয়া সাক্ষ্যে কাহল বলেছেন, অগাস্টে যুক্তরাষ্ট্র চলে আসার পর আফগানিস্তানে আইএসের সঙ্গে তালেবানের কার্যকরভাবে লড়ার সক্ষমতা আদৌ আছে কিনা, তা স্পষ্ট নয়। আফগানিস্তানে দুই দশকের যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রকে তালেবানের পাশাপাশি আইএস ও আল-কায়েদার মতো জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধেও লড়তে হয়েছিল। “আমাদের মূল্যায়ন হচ্ছে আইআইএস-কে (আইএস) এবং তালেবান একে অপরের ঘোর শত্রু। সুতরাং আইএসকে ধাওয়া করার ব্যাপারে তালেবানের প্রবল আগ্রহ থাকার কথা। কিন্তু তাদের সে সক্ষমতা আছে কিনা, তা দেখতে হবে,” বলেছেন কলিন কাহল। আফগানিস্তানে আইএসের ‘কয়েক হাজার প্রশিক্ষিত সদস্য’ আছে বলে মার্কিন এ কর্মকর্তার ধারণা।
নতুন তালেবান সরকারের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি বলেছেন, আইএস জঙ্গিদের হুমকি মোকাবেলা করা হবে। আফগানিস্তান অন্য দেশে হামলা চালানোর ঘাঁটি হবে না। সেনেটে সাক্ষ্যে কাহল আফগানিস্তানে সক্রিয় আল কায়েদা নিয়েও কথা বলেছেন। তার ভাষ্য অনুযায়ী, তালেবানের সঙ্গে সখ্য থাকায় আল কায়েদা আরও জটিল সমস্যা তৈরি করেছে। এই সখ্যতার কারণেই ২০০১ সালে নিউ ইয়র্ক ও ওয়াশিংটনে আল কায়েদার হামলার পর আফগানিস্তানে অভিযান শুরু করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। তালেবান আল-কায়েদা নেতাদের আফগানিস্তানে আশ্রয় দিয়েছিল। কলিন কাহল বলছেন, আফগানিস্তানের বাইরে এসে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর হামলা চালানোর সক্ষমতা ফের অর্জনে আল কায়েদার ‘এক থেকে দুই বছর’ লাগতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, আফগানিস্তান থেকে আসা হুমকির ব্যাপারে সতর্ক থাকতে যুক্তরাষ্ট্র দেশটিতে গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত রাখবে, যার মাধ্যমে আল কায়েদা ও আইএসের মতো গোষ্ঠীগুলোর হুমকিকে শনাক্ত করা যাবে।