‘মাইক্রোবাসের পেছনের সিটে বসায় বেঁচে গেছি’

81

পূর্বদেশ ডেস্ক

মিরসরাইয়ের খৈয়াছড়া ঝর্না দেখে ফেরার পথে মাইক্রোবাসের পেছনের আসনে বসেছিলেন তানভীর হাসান হৃদয়। গাড়িতে বমির ভাব হয় বলে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। ট্রেনের সঙ্গে তাদের মাইক্রোবাসের ধাক্কা লাগার পর বিকট শব্দে তার ঘুম ভাঙে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের মেঝেতে মাথায় ব্যান্ডেজ নিয়ে শুয়ে থাকা হৃদয় বলছিলেন, ‘আমিসহ চারজন পেছনে বসেছিলাম। হঠাৎ ধাক্কা আর বিকট শব্দ। ঘুম থেকে জেগে দেখি মাথায় তীব্র ব্যথা। পেছনের সিটে বসায় হয়ত বেঁচে গেছি।’ খবর বিডিনিউজের
উচ্চ মাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের এ শিক্ষার্থী জানালেন, তারা হাটহাজারী উপজেলার আমান বাজারের একটি কোচিং সেন্টার থেকে ‘পিকনিক’ করতে খৈয়াছড়া ঝর্নায় গিয়েছিলেন। ওই কোচিং সেন্টারের শিক্ষক-ছাত্রসহ ১৬ জন এ আয়োজনে ছিলেন।
চালক ও সহকারী মিলে মাইক্রোবাসটিতে মোট ১৮ জন ছিলেন। জুমার আজানের পর ফেরার সময় গাড়ির পেছনে ছিলেন তারা চারজন। এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় উপলক্ষে ছাত্র-শিক্ষকের তরুণ দলটি পিকনিক স্পট হিসেবে খৈয়াছড়া ঝর্নাকে বেছে নিয়েছিলেন। ফেরার পথে মিরসরাইয়ে একটি লেভেল ক্রসিংয়ে পার হওয়ার সময় তাদের মাইক্রোবাসে ট্রেনের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই ১১ জন প্রাণ হারান।
মাইক্রোবাসে থাকা বাকি সাতজনের মধ্যে ছয়জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আরেকজন সম্পর্কে নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যায়নি। হতাহতদের মধ্যে চালক ও সহকারী ছাড়া সবাই হাটহাজারীর আর অ্যান্ড জে কোচিং সেন্টারের শিক্ষার্থী ও শিক্ষক।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরো সার্জারি ওয়ার্ডের মেঝেতে হৃদয়ের পাশে আরও চারজন ভর্তি আছেন, যাদের অবস্থা এখনও আশঙ্কাজনক বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা। তারা বলেছেন, অন্যদের তুলনায় হৃদয়ের শারীরিক অবস্থা ভালো।
হাসপাতালে উপস্থিত হৃদয়ের চাচা আবদুস সাত্তার জানান, হৃদয় আমান বাজার এলাকার জিয়াউর রহমান কলেজে এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষে পড়েন। তারা অনেকে মিলে পিকনিকে গিয়েছিল। আমরা দুর্ঘটনার সংবাদ পেয়ে হাসপাতালে ছুটে এসেছি।
নিউরো সার্জারি বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. মো. কামাল হোসেন বলেন, আহতদের মাথায় গুরুতর আঘাত রয়েছে। হৃদয়ের শারীরিক অবস্থা কিছুটা ভালো। অন্যদের শরীরের অন্যান্য অংশেও কিছু ভাঙা রয়েছে। সিটি স্ক্যানের পর পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে।