ভোটকেন্দ্রে থাকবে নিরাপত্তা বাহিনীর ১৪,৩৭০ সদস্য

47

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের প্রচারণা শেষ হচ্ছে আজ। এখন ভোটগ্রহণের প্রস্তুতি চলছে কেন্দ্রে কেন্দ্রে। আজ নগরীর ৭৩৫টি ভোট কেন্দ্রে শুরু হচ্ছে ইভিএম সচেতনতায় মক ভোটিং। এবারের নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তায় পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, আনসার মিলিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য থাকবেন ১৪ হাজার ৩৭০ জন। এছাড়াও ২০ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও ৬৯ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন। ইতোমধ্যে ৩০৬টি সাধারণ ও ৪২৯টি গুরুত্বপূর্ণ ভোটকেন্দ্র চিহ্নিত করেছে নির্বাচন কমিশন। এসব কেন্দ্রে কোথায় কি পরিমাণ পুলিশ ও আনসার সদস্য নিয়োজিত থাকবে তাও নির্ধারণ করা হয়েছে।
গতকাল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে মতবিনিময় শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নূরুল হুদা সাংবাদিকদের বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখনো পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণে আছে। ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তায় প্রয়োজনীয় সংখ্যক নিরাপত্তা বাহিনী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ভোটকেন্দ্রগুলো ভোটগ্রহণের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে।’
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান পূর্বদেশকে বলেন, ‘এখনো পর্যন্ত ভোটের পরিস্থিতি ভালো আছে। ছোটখাট কিছু ঘটনা ঘটলেও তা কমে এসেছে। আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে যেখানেই সমস্যা হচ্ছে সেখানেই নজরদারি বাড়ানোর কথা বলেছি। এখন ভোটগ্রহণের পূর্ণ প্রস্তুতি চলছে। ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তায় পুলিশ, আনসার, র‌্যাব ও বিজিবি সদস্য মিলিয়ে প্রায় সাড়ে ১৪ হাজার সদস্য মোতায়েন থাকবে। ম্যাজিস্ট্রেট, মোবাইল টিম, স্ট্রাইকিং ফোর্সও ভোটের পরিবেশ নিয়ন্ত্রণে রাখতে কাজ করবে।’
জানা যায়, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ৭৩৫টি ভোটকেন্দ্রকে ঘিরে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রতিটি ওয়ার্ডে একজন করে মোবাইল ফোর্স, প্রতি তিনটি সাধারণ ওয়ার্ডে একটি স্ট্রাইকিং ফোর্স, প্রতি থানায় একটি করে রিজার্ভ স্ট্রাইকিং, প্রতিটি ওয়ার্ডে র‌্যাবের একটি টিম, প্রতি দুটি সাধারণ ওয়ার্ডে এক প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন থাকবে।
নির্বাচন সংশ্লিষ্টরা জানান, পুলিশের পক্ষ থেকে ৩০৬টি সাধারণ ও ৪২৯টি গুরুত্বপূর্ণ ভোটকেন্দ্র চিহ্নিত করা হয়েছে। সাধারণ ৩০৬টি কেন্দ্রে একজন উপ-পরিদর্শক অথবা সহকারী উপ-পরিদর্শক ও তিনজন কনস্টেবল মিলিয়ে পুলিশের চারজন সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। গুরুত্বপূর্ণ ৪৩৯টি কেন্দ্রে একজন উপ-পরিদর্শক অথবা সহকারী উপ-পরিদর্শক ও পাঁচজন কনস্টেবল মিলিয়ে পুলিশের ছয়জন সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। ৭৩৫টি ভোটকেন্দ্রে পুলিশ থাকবে তিন হাজার ৭৯৮জন। এছাড়াও মোবাইল টিমের সাথে ৪১০জন ও স্ট্রাইকিং ফোর্সের সাথে ১৪০জন পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। সবমিলিয়ে ভোটের মাঠেই পুলিশ থাকবে চার হাজার ৩৪৮জন।
আনসারের দুইজন অস্ত্রসহ পিসি-এপিসি ও দশজন লাঠিসহ অঙ্গীভূত আনসার মিলিয়ে প্রতিটি কেন্দ্রে মোট ১২জন করে দায়িত্ব পালন করবেন। সে হিসেবে আট হাজার ৮২০জন আনসার সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন। ৪১টি ওয়ার্ডের আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে ভ্রাম্যমান টিম হিসেবে ৪১ প্লাটুনে ৪৯২জন র‌্যাব সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। প্রতি প্লাটুনে ৩০জন হিসেবে ২৫টি বিজিবির টিম নির্বাচনী মাঠে থাকবেন। এছাড়াও ৬৯জন ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন নির্বাচনে।
এদিকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের প্রচারণা শেষ হচ্ছে আজ। নির্বাচনে অংশ নেওয়া সাতজন মেয়র প্রার্থীসহ ৪১টি সাধারণ ও ১৪টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডেও ২৩৬জন কাউন্সিলর প্রার্থী ব্যাপক প্রচারণা চালাচ্ছেন। শেষ সময়ে জমে উঠেছে নির্বাচনী প্রচারণা। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রার্থীরা নির্বাচনী প্রচারণায় সময় পার করছেন। নির্বাচনী মাঠে যেখানেই ঘাটতি লক্ষ্য করছেন সেখানেই দৌঁড়ঝাপ করছেন প্রার্থীরা। প্রচারণার মাঠে দাপট রেখেই প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে নির্বাচনী মাঠে লড়তে চায় সকল প্রার্থী। আজকে রাতে ভোটের প্রচারণা শেষ হলে ঘরে বসেই নির্বাচনী কর্মযজ্ঞে মাতবেন প্রার্থীরা।