ব্রিজটির নির্মাণ শেষ হলে পাল্টে যাবে জনজীবন

0
ব্রিজটির নির্মাণ শেষ হলে পাল্টে যাবে জনজীবন

মো. শাফায়েত হোসেন, বান্দরবান

উন্নয়নের মহাসড়কে চলছে পাহাড়কন্যা বান্দরবান। যোগাযোগ, পর্যটন ও কৃষিখাতের অভ‚তপুর্ব উন্নয়ন হয়েছে। পাহাড়ে চোখে পড়ার মতো উন্নয়ন হয়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থার। এক উপজেলার সাথে আরেক উপজেলা, এক ইউনিয়ন থেকে আরেক ইউনিয়ন এবং এক পাড়া থেকে আরেক পাড়ায় যাতায়াতের পথও সুগম হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, পাহাড়ের এ পরিবর্তন তথা বান্দরবান জেলাকে উন্নয়নের মহাসড়কে নিয়ে যাওয়ার একমাত্র স্বপ্নদ্রষ্টা পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং। তার সুদক্ষ নেতৃত্বে বান্দরবান এগিয়ে গেছে বহুদূর।
বান্দরবানের লামা পৌরসভার শীলেরতুয়া-রূপসীপাড়ায় মাতামুহুরী নদীর উপর ১৮৪ মিটার দীর্ঘ গার্ডার ব্রিজ পাল্টে দিতে পারে রূপসীপাড়া ইউনিয়নের জনজীবন। ব্রিজটি নির্মাণ কাজ শেষ হলে এলাকার হাজার হাজার মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতিসহ ব্যবসা-বাণিজ্য, কৃষি উন্নয়নসহ জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন বাড়বে।
এদিকে শীলেরতুয়ার শিক্ষার্থী উসাসিং মারমা ও নুমেচিং মারমা জানান, কলেজে আসা-যাওয়ার সময় নদীতে নৌকা যোগে যাতায়াত করতে হয়। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমাদের পারাপার করতে হয়। এখন সরকার ব্রিজ করে দিচ্ছে, তাই আমরা খুব খুশি।
স্থানীয় কৃষক আহমদ হোসেন জানান, ব্রিজ ও পাকা সড়ক না থাকার কারণে তারা কৃষি পণ্য সঠিক সময়ে ন্যায্য দামে বিক্রি করতে পারেন না। শিম, বরবটি, পেঁপে এবং শসা জাতীয় কৃষিপণ্য যেখানে উৎপন্ন হয়, সেখান থেকে মজুরি দিয়ে প্রধান সড়কে আনতে অনেক টাকা খরচ হয়। এতে অনেক সময় তাদের পুঁজিও উঠে আসে না।শীলেরতুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা ক্রানুচিং মারমা জানান, শীলেরতুয়া থেকে রূপসীপাড়া যাতায়াতের জন্য একটি ব্রিজের খুব প্রয়োজন ছিল। স্থানীয় লোকজনের দাবির প্রেক্ষিতে এটি নির্মাণ হচ্ছে। ব্রিজ না থাকার কারণে এপার থেকে ওপারে যাতায়াত করা বর্ষাকালে খুব কষ্ট হতো। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে যাতায়াত করতে হতো। ব্রিজটি নির্মাণ হলে তাদের যাতায়াত আরও সুগম হবে।
অপরদিকে রূপসীপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাচিংপ্রু জানান, এখানকার মানুষের জীবন-জীবিকা কৃষিনির্ভর। ব্রিজের অভাবে কৃষিপণ্য বাজারজাত করতে কষ্ট হয়। স্থানীয়দের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে ব্রিজটি নির্মাণ কাজের টেন্ডার আহŸান করে এলজিইডি। ব্রিজটি রূপসীপাড়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের ভাগ্যের পরির্বতন ঘটাবে।
মেসার্স তমা কনস্ট্রাকশন’র সহকারী প্রকৌশলী রুবায়েত আলম জানান, করোনা পরিস্থিতির কারণে দীর্ঘদিন কাজ বন্ধ থাকার পর পুনরায় নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। কোন ধরনের সমস্যা না হলে আগামী ডিসেম্বরে কাজ শেষ করে এলজিইডিকে বুঝিয়ে দিতে পারবেন।
এ বিষয়ে এলজিইডি’র লামা উপজেলা প্রকৌশলী মো. মাহাফুজুল হক জানান, শীলেরতুয়া-রূপসীপাড়া ব্রিজটির দৈর্ঘ ১৮৪ মিটার। ২০১৭ সালে টেন্ডার আহব্বান করা হলে ১১ কোটি ৩৬ লাখ টাকা বরাদ্দ সাপেক্ষে কাজটি পায় তমা কনস্ট্রাকশন লি.। নির্মাণ কাজ চলমান আছে। ব্রিজের প্রায় ৮০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। বাকী কাজ আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করা সম্ভব হবে।