বোয়ালখালীকে ঘিরে নগরে সরগরম আওয়ামী লীগ

74

রাহুল দাশ নয়ন

চট্টগ্রাম-৮ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন নোমান আল মাহমুদ। গত ২৫ মার্চ আওয়ামী লীগের সংসদীয় বোর্ডের সভা থেকে এ সিদ্ধান্ত আসার পর দলটির নেতাকর্মীদের মধ্যে উচ্ছ¡াস বেড়েছে। নোমান আল মাহমুদের মনোনয়ন লাভকে তৃণমূলের মূল্যায়ন হয়েছে বলেই মনে করছেন নেতাকর্মীরা। এনিয়ে নগর আওয়ামী লীগের রাজনীতি বেশ সরগরম।
আগামী দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে এই উপ-নির্বাচন নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হতে সহায়ক হবে বলেই মনে করছেন নেতাকর্মীরা। গত ২৬ মার্চ মহানগর আওয়ামী লীগের ইফতার মাহফিলে নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার নির্দেশনাই দিয়েছেন চট্টগ্রামের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ আন্দোলন-সংগ্রামে সবচেয়ে একটি সুসংগঠিত সংগঠন। চট্টগ্রামে যারা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আছেন তাদের প্রতি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের আস্থা আছে। তবে কোনোভাবেই বিভেদ ও মতভিন্নতা যাতে মাথাচাড়া না দেয়, সেদিকেও মহানগর আওয়ামী লীগের বর্তমান নেতৃত্বকে সতর্ক থাকতে হবে। চট্টগ্রামের তৃণমূলের নেতাকর্মীদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মূল্যায়ন করেন। চট্টগ্রাম থেকেই ত্যাগী ও পরীক্ষিত তৃণমূল নেতাকর্মীরা সামনে এগিয়ে আসবেন। এই বিশ্বাসবোধ থেকে তৃণমূলের কর্মী নোমান আল মাহমুদকে চট্টগ্রাম-৮ আসনের নৌকা প্রতীক দিয়েছেন। সকল বিভেদ-বিভ্রান্তি বা ভিন্নতা ভুলে নোমান আল মাহমুদকে বিজয়ী করার জন্য তৃণমূল নেতাকর্মীরাই অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।
এদিকে বোয়ালখালী-চান্দগাঁও আসনে নোমান আল মাহমুদ মনোনয়ন পাওয়াকে কেন্দ্র করে উদ্দীপ্ত আ.জ.ম নাছির উদ্দীন বলয়। এই অংশটি নোমানের মনোনয়ন লাভের পর থেকে সাংগঠনিকভাবেই উজ্জীবিত। নোমান আল মাহমুদ মনোনয়ন লাভের পরপরই অভিনন্দন জানিয়েছেন শিক্ষা উপ-মন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে দ্বিধাবিভক্ত চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে নোমান আল মাহমুদ কোন পক্ষের তার চেয়েও বড় বিষয় হলো তার মনোনয়নে তৃণমূল খুশি এবং নৌকাই দলের ঐক্যের প্রতীক। সে কারণে ভেতরে যা-ই থাক প্রার্থীকে জেতানোর দলীয় উৎসবে বিভাজনের সুযোগ নেই। সবাই উদ্দীপ্ত, উজ্জীবিত নৌকার মনোনীত প্রার্থীর ব্যাপারে।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এই আসনে নির্বাচন ঘিরে দলীয় নেতাকর্মীরা নিজেদের মধ্যে ঐক্যের প্রমাণ দিতে চাইছেন। দলীয় প্রার্থী নোমান আল মাহমুদ নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ.জ.ম নাছির উদ্দীনের পক্ষের লোক হলেও তিনি সবাইকে সাথে নিয়ে এ আসনে জয় পেতে তৎপর। গতকাল মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সময় নাছির বিরোধী হিসেবে পরিচিত বেশ কয়েকজন নেতাকেও সাথে পেয়েছেন নোমান।
মনোনয়নপত্র জমা শেষে নোমান আল মাহমুদ বলেন, আমি সবাইকে সাথে নিয়ে নির্বাচনে জয়ী হতে চাই। ইতোমধ্যে যারা মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন তারাও আমার সাথে আছেন। সকল মনোনয়ন প্রত্যাশী আমাকে সহযোগিতা করলে এ আসনের উন্নয়নে সর্বোচ্চ সহায়তা করবো।
শুধু মহানগর নয়, দলীয় প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী যুদ্ধে মাঠে নেমেছেন দক্ষিণ, উত্তর জেলা ও বোয়ালখালী উপজেলা আওয়ামী লীগ। গতকাল মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সময় উত্তর, দক্ষিণ ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা উপস্থিত ছিলেন। বোয়ালখালী আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল আমিন ও সাধারণ সম্পাদক সদ্য নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান রেজাউল করিম নির্বাচনী কর্মকাÐে নোমানের সাথেই আছেন।
এদিকে গতকাল রাতে চট্টগ্রাম-৮ আসনের প্রয়াত সংসদ সদস্য মোছলেম উদ্দিন আহমদের বাসায় যান আওয়ামী লীগ প্রার্থী নোমান আল মাহমুদ। এসময় তিনি দীর্ঘক্ষণ সেখানে অবস্থান করে মোছলেম উদ্দিন আহমদের স্ত্রী শিরিন আহমদের সাথে কিছুক্ষন আলাপ করেন। নোমান আল মাহমুদ মনোনয়ন পাওয়ার পর শিষ্টাচার দেখাতেই মোছলেম উদ্দিন আহমদের বাসায় যান। শিরিন আহমদের সাথে আলাপকালে তিনি প্রয়াত নেতা মোছলেম উদ্দিন আহমদের অসম্পন্ন কাজগুলো সম্পন্ন করবেন বলেও প্রতিশ্রুতি দেন। এসময় নোমান আল মাহমুদের সাথে আ.জ.ম নাছির উদ্দীনও ছিলেন।