বেসামাল নিত্যপণ্যের বাজার কর্তৃপক্ষের টনক নড়বে কবে?

32

এস.এম.রাহমান জিকু

বেঁচে থাকার মিছিলে নিত্যপণ্যের বাজার অনিয়ন্ত্রনে দেশের সাধারণ মানুষ দিশেহারা। সমাজে বসবাসরত সাধারণ মানুষ অর্থাৎ মধ্যবিত্ত শ্রেণি থেকে শুরু করে নিম্ন-নিম্নবিত্ত শ্রেণির নাগালের বাইরে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার। যেখানে সাধারণ মানুষের ঠিকে থাকা দুর্লভ হয়ে পড়েছে। বস্তুতপক্ষে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কবলে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার জিম্মি হয়ে আছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিত্যপণ্যের বাজার নিয়মিত খতিয়ে দেখা অত্যাবশ্যক হয়ে পড়েছে। এভাবে অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের দখলে বাজার নিয়ন্ত্রিত হলে, সাধারণ শ্রমজীবী মানুষের দুর্দশা কোনোভাবেই লাঘব সম্ভব নয়।
সম্প্রতি অনিয়ন্ত্রিত বাজার ব্যবস্থার বেশ কিছু খবরও জাতীয় পত্রিকার শিরোনামে লক্ষ্য করা গেছে। তন্মধ্যে অনন্য আলোচিত একটি শিরোনাম হচ্ছে- ‘যতক্ষণ অভিযান, ততক্ষণ বাজার নিয়ন্ত্রন’ এ-থেকে বুঝা যায় যে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে আরও বেশি কার্যকরি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। প্রয়োজনের তাগিদে অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের উপর জরিমানার পাশাপাশি সশ্রম কারাদÐ আরোপ করতে হবে। কর্তৃপক্ষের যথাযথ নজরদারিতে নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে। সম্প্রতি জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে বেশ কিছু নিত্যপণ্যের বাজার মূল্যের উর্ধ্বগতি চিত্রÑ
২০২২ সালের (রমজান) বাজার মূল্য – ২০২৩ সালের (রমজান) বাজার মূল্য। ১ বছরের ব্যবধানে নিত্যপণ্যের বাজার দরে উর্ধ্বগতি চোখে পড়ার মতো পরিবর্তিত হয়েছে। নিত্যপণ্যের বাজার মূল্যের একাংশ উল্লেখ্য- ভোজ্য তেল (লিটার) ১৫৪ টাকা থেকে বেড়ে ১৯০ টাকা, ছোলা (কেজি) ৭০ টাকা থেকে বেড়ে ৯৫ টাকা, ডিম (ডজন) ১১০ টাকা থেকে বেড়ে ১৪০ টাকা, মুরগি (ব্রয়লার/কেজি) ১৫০ টাকা থেকে বেড়ে ৩০০ টাকা, গরুর মাংস (কেজি) ৬৫০ টাকা থেকে বেড়ে ৮০০ টাকা, চিনি (কেজি) ৮০ টাকা থেকে বেড়ে ১২০ টাকা, ডাল (কেজি) ১১৫ টাকা থেকে বেড়ে ১৩৫ টাকা, খেজুর (মানভেদে/কেজি) ১৫০-৩০০ টাকা থেকে বেড়ে ৩০০-৬০০ টাকা, চাল (সরু) ৬০ টাকা থেকে বেড়ে ৮৫ টাকা, আটা (খোলা/কেজি) ৩৫ টাকা থেকে বেড়ে ৬০ টাকা হয়েছে ইত্যাদি। অনিয়ন্ত্রিত বাজার মূল্যের এমন উল্লম্ফন গতিতে সাধারণ মানুষের জীবন মান চরম বিপর্যয়ে।
সম্প্রতি প্রকাশিত (১৬ মার্চ ২০২৩) জাতীয় পত্রিকা প্রথম আলো’র এক মতামত জরিপে হবিগঞ্জের দিনমজুর জমির আলী বলেন, ‘পেটে পাথর বান্ধা ছাড়া গতি নাই। একদিন কাজ করলে ৬০০-৬৫০ টাকা পাওয়া যায়। কিন্তু তাতে পোষানো যায় না। সবকিছুর দাম বেড়ে গেছে।… আমরা কম দামের মোটা চাইল খাই। এটাও ৫৫ থিকা ৬০ টেকা কেজি।’
এমতাবস্থায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে যথাযথ নজরদারি ও কার্যকরি পদক্ষেপ গ্রহণ করার মধ্যে দিয়ে দ্রæত ব্যবস্থা নিতে হবে। এছাড়াও একদিনের অভিযানের মধ্য দিয়ে বাজার নিয়ন্ত্রন কর্মসূচি শেষ না করে, বছরে (মাসব্যাপী) বাজার নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি বাস্তবায়িত হলেই কেবল সাধারণ মানুষের দুর্দশার টানাপোড়েন লাঘব সম্ভব হবে। সর্বোপরি নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সঠিক এবং যথাযথ নজরদারি নিশ্চিত করতে হবে। তবেই সাধারণ মানুষ নিত্যপণ্যের বাজারে স্বস্তি ফিরে পাবে।
শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম কলেজ