বিএনপি নেতাকর্মীদের গণগ্রেপ্তারের অভিযোগ

37

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) নির্বাচনকে সামনে রেখে গণগ্রেপ্তারের অভিযোগ করেছে বিএনপি। তাদের দাবি, নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডে নেতাকর্মীদের বাসায় বাসায় সাদা পোশাকধারী পুলিশ অভিযান চালিয়ে গতকাল রাত ৯টা পর্যন্ত অন্তত ৪০ জন নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। একই সাথে বিভিন্ন নেতার বাসা বাড়িতে তল্লাশির নামে অভিযান চালানো হচ্ছে।
মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেনের মিডিয়া সেলের সদস্য সচিব ইদ্রিস আলী বলেন, নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডে গণগ্রেপ্তার করছে পুলিশ। অভিযানকালে নেতাকর্মীদের বাসা-বাড়িতে তল্লাশির নামে পরিবারের সদস্যদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করছে। নেতাকর্মীদের ভোটকেন্দ্রে যেতে বাধা এবং ভয়ভীতি দেখানো জন্য প্রশাসন এই হয়রানি চালিয়ে যাচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি। এ ধারা অব্যাহত থাকলে নির্বাচনে এজেন্টও দিতে পারবে না বিএনপি। তিনি সরকারের কাছে গণগ্রেপ্তার বন্ধের দাবি জানান।
বিএনপির মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেনের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট ও নগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর বলেন, আমাদের দলীয় কার্যালয়ের সামনে ছাত্রলীগের কর্মীরা মিছিল করে উস্কানিমূলক স্লোগান দিচ্ছে। তারা দলীয় কার্যালয়ের মাঠের পোস্টার-ব্যানার ছিড়ে ফেলছে। বিভিন্ন ওয়ার্ডে পুলিশ বাসায় বাসায় তল্লাশির নামে হয়রানি করছে। নির্বাচনের নামে এ ধরনের প্রহসন চালিয়ে যাচ্ছে তারা।
দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহব্বায়ক ও নগর বিএনপির সদস্য আবু সুফিয়ান বলেন, আজকে (রবিবার) আমাদের অন্তত ৪০ জন নেতকার্মীকে আটক করে নিয়ে গেছে। এলাকাতে কোনো নেতাকর্মীকে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। নির্বাচনী এজেন্টদের ঘরে ঘরে গিয়ে তল্লাশি করছে। আমরা নির্বাচনে মাঠে আছি। হামলা-মামলা এগুলো আগেও ছিল। ভোটের মাঠকে অস্থিতিশীল করতে তারা এ ধরনের কাজগুলো করে যাচ্ছে।
চট্টগ্রাম নাগরিক ঐক্য পরিষদের সমন্বয়ক ও নগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক একরামুল করিম বলেন, এলাকাভিত্তিক আমাদের লোকদের এরেস্ট করা হচ্ছে। ৪০০ এর মতো নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট ইস্যু করেছে। আমার বাসায় দুইবার তল্লাশি চালিয়েছে পুলিশ। আমরা চেষ্টা করছি নির্বাচনে থাকার। কিন্তু এটা স্পষ্ট হয়ে গেছে এই অনির্বাচিত আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কখনো সুষ্ঠু নির্বাচন আশা করা যায় না। সামান্য একটা সিটি নির্বাচন নিয়ে তারা এতো কিছু করছে।
বিএনপির অভিযোগ, শনিবার রাত থেকে রবিবার দিনব্যাপী অভিযানে পুলিশ বক্সিরহাট ওয়ার্ড থেকে ধানের শীষের এজেন্ট রফিকুল আলম, নুরুল আলম মজনু, আইয়ুব আলী, কৃষক দলের কেন্দ্রিয় নেতা মোজাম্মেল হক মিন্টু, যুবদল নেতা মহিউদ্দীন খান রাজিব, মো. মামুন, আনোয়ার হোসেন, মো. আলী, জামালখান ওয়ার্ড থেকে নূর হোসেন, সরাইপাড়া ওয়ার্ড বিএনপির সা. সম্পাদক আশরাফ খান ও বিএনপি নেতা দিদারুল আলম, মো. সাইফুল, পাঠানটুলি ওয়ার্ড থেকে মাহাবুব আলম, চকবাজার ওয়ার্ড থেকে যুবদল নেতা আব্দুস সোবহান, রাসেল করিম, এনায়েত বাজার থেকে যুবদল নেতা মো. নওশাদ, দেওয়ান বাজার থেকে নূর হোসেন, পশ্চিম ষোলশহর ওয়ার্ড থেকে মহিউদ্দীন চৌধুরী জসু, মো. লোকমান, পূর্ব ষোলশহর ওয়ার্ড থেকে দিদারুল আলম, চান্দগাঁও ওয়ার্ড থেকে মো. হাসান, মো. মামুন, মোহরা ওয়ার্ড থেকে মো. গোলাপ, উত্তর পতেঙ্গা ওয়ার্ডে ধানের শীষের প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেনের গণসংযোগ শুরুর আগে মো. হারুন, মো. সোহাগসহ ৬ জন, বাকলিয়ায় যুবদল নেতা মো. ইউনুছ এবং বায়েজিদ থেকে আব্দুল করিমকে গ্রেপ্তার করেছে।
এর আগে গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, জসিমুল ইসলাম কিশোর, মোহাম্মদ আজীজ মো. রহিম, মো. আলমঙ্গীর. মনির হোসেন, জিয়া উদ্দীন বাবুল, মো. রাশেদুজ্জামান, তারেকুর রহমান রাকিব, সানাউল কাদের সানি. ইয়াকুব খান, মো. জাকির, আবু মানিক ও মো. হোসেন।