বিএনপির সমাবেশ কোথায় হবে

27

পূর্বদেশ ডেস্ক

রক্তক্ষয়ী সংঘাতের পর বিএনপির সমাবেশস্থল নিয়ে একটা আপাত সুরাহার পথ উন্মুক্ত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। নয়াপল্টন না সোহরাওয়ার্দী এ নিয়ে বাদানুবাদ, হুমকি, পাল্টা হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে তৈরি হয় এক ধরনের ভীতিকর পরিস্থিতি। এ পরিস্থিতিতে গত বুধবার নয়াপল্টন পরিণত হয় রণক্ষেত্রে। ঘটনায় একজন নিহত ও বহুজন হতাহত ও গ্রেপ্তারের পর গতকাল বিএনপি নেতৃবৃন্দের সাথে ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের কার্যালয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ২ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বিএনপি নয়া পল্টনের বিকল্প হিসাবে কমলাপুর স্টেডিয়ামে সমাবেশের অনুমতি চেয়েছে। অন্যদিকে বিএনপিকে মিরপুরের বাংলা কলেজ মাঠে সমাবেশ করার প্রস্তাব দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে সেখান থেকে বেরিয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু সাংবাদিকদের কাছে বৈঠকের আলোচনার বিষয়বস্তু তুলে ধরেন।
বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, বিএনপির পক্ষ থেকে কমলাপুর স্টেডিয়ামে সমাবেশ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আরামবাগ ও সেন্ট্রাল রোডসহ কয়েকটি জায়গার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছিল। অপর দিকে ডিএমপি কমিশনার মিরপুরের সরকারি বাঙলা কলেজ মাঠে সমাবেশ করার প্রস্তাব দিয়েছেন। এখন দুটি মাঠই তারা পরিদর্শন করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে পরিস্থিতি সম্পর্কে জানাবেন। তার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, কোথায় সমাবেশ হবে।
পরে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদও সাংবাদিকদের একই কথা বলেছেন। বিএনপির সমাবেশস্থল নিয়ে সৃষ্টি হওয়া দ্বন্দ্ব আগামীকালই কেটে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির গণসমাবেশের কর্মসূচি আছে। এ গণসমাবেশ কোথায় হবে, তা নিয়ে বিতর্ক-আলোচনার মধ্যেই গতকাল বিকেলে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষে নয়াপল্টন রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সংঘর্ষে মকবুল আহমেদ নামে বিএনপির এক কর্মী নিহত হন। আহত হন দলটির অর্ধশত নেতা-কর্মী।
সংঘর্ষের পর বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অভিযান চালায় পুলিশ। সেখান থেকে দলের কেন্দ্রীয় নেতা রুহুল কবির রিজভী, আমানউল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, খায়রুল কবির, শহীদ উদ্দীন চৌধুরী, শিমুল বিশ্বাস, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আবদুল কাদের ভূঁইয়াসহ কয়েক শ নেতা-কর্মীকে আটক করে পুলিশ। পরে এ ঘটনায় বিএনপির পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মীকে আসামি করে তিনটি মামলা দিয়েছে পুলিশ।
এদিকে গতকাল সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তল্লাশি চালায় পুলিশ। দুপুরে ওই কার্যালয়ে যেতে চাইলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে কাকরাইলের নাইটিঙ্গেল মোড় থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। বিকেল চারটার দিকে বিএনপির কার্যালয়ের সামনের সড়ক যান চলাচলের জন্য ছেড়ে দেওয়া হলেও ওই এলাকায় বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন রয়েছে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামগতকাল বিকেলে গুলশানে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনেই ১০ ডিসেম্বর বিভাগীয় গণসমাবেশ করবেন তারা। তবে এর মধ্যে গ্রহণযোগ্য বিকল্প জায়গার প্রস্তাব দেওয়া হলে বিবেচনা করবেন।
ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাওয়া বিএনপির এই প্রতিনিধিদলে বরকত উল্লাহ বুলু ছাড়াও দলের ভাইস চেয়ারম্যান এ জে মোহাম্মদ আলী, আহমেদ আজম খান, এ জেড এম জাহিদ হোসেন ও বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক আইনজীবী কায়সার কামাল ছিলেন।