বাবা-ভাইকে খুঁজে ফিরছে ফারিয়া

2

কাপ্তাই প্রতিনিধি

কাপ্তাইয়ে বাদশা মাঝির টিলা এলাকায় বিস্ফোরণের ঘটনায় ভাগ্যক্রমে বেঁচে যায় নিহত মো. ইসমাইল মিয়ার শিশু কন্যা ইসরাত জাহান ফারিয়া (৭)। স্থানীয় দারুল আরকাম মাদ্রাসার দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী ফারিয়া। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় পাশের বাড়িতে প্রাইভেট পড়তে যাওয়ায় রক্ষা পায় সে। গত রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টায় কাপ্তাই হ্রদ সংলগ্ন বাদশা মাঝির টিলায় ইসমাইল মিয়ার ঘরে হঠাৎ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণে নৌকার মাঝি মো. ইসমাইল মিয়া (৪৫) ও তার পুত্র মো. রিফাত (৬) নিহত হন। এছাড়া গুরুতর আহত হন ইসমাইলের স্ত্রী সখিনা বেগম (৩৫)। এ অবস্থায় ইসমাইল-সখিনার কন্যা ফারিয়া বাবা ও ভাইকে খুঁজে ফিরছে। গত সোমবার ইসমাইল মিয়ার বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, নির্বাক ফারিয়া বসে আছে। মায়ের কথা জিজ্ঞাসা করতেই সে শুধু বলছে, আমার মা অসুস্থ, হাসপাতালে আছেন। বাবা আর ভাইয়ের কথা বললে, সে কিছুই বলছে না, শুধু তাকিয়ে থাকে। স্থানীয়রা জানান, ইসমাইল মিয়া হতদরিদ্র একজন নৌকার মাঝি। নৌকা চালিয়ে দৈনিক যা আয় করতেন, তা দিয়ে কোনভাবে সংসার চলত। তাদের সম্পদ বলতে কিছুই নেই। ফারিয়ার মায়ের অবস্থা সংটাপন্ন। তার বাঁচা-মরা নির্ভর করছে মহান আল্লাহর ওপর। এ অবস্থায় অবুঝ ফারিয়ার ভবিষ্যৎ কি হবে? তার লেখাপড়াসহ ভরণপোষণ কি করে চলবে? এসব নিয়ে চিন্তিত প্রতিবেশিরা। তারা চান প্রশাসন ফারিয়ার দায়িত্ব নিক।
এদিকে বিস্ফোরণের ঘটনায় ইসমাইলের ঘরের সবকিছু এখনো ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে। রান্না ঘরে রক্তের দাগ লেগে আছে। চা এবং রান্না করার চাল পড়ে আছে। রান্না ঘরেই চা বানাতে চুলায় আগুন জ্বালানোর পরই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে। অপরদিকে বিস্ফোরণের ঘটনা তদন্তে একাধিক সংস্থা কাজ করছে। তবে গতকাল পর্যন্ত ঘটনার কোন ক্লু পায়নি বলে জানিয়েছে কাপ্তাই থানার ওসি মো. জসিম উদ্দিন। তিনি বলেন, তদন্ত চলছে, তদন্ত শেষ হলে বিস্তারিত জানা যাবে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে ঘটনার অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে এএসপি (কাপ্তাই সার্কেল) রওশন আরা রব জানান, তেমন অগ্রগতি নেই। তদন্ত চলছে।