বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী রাজনৈতিক ঐতিহ্য সমুন্নত রাখতে হবে

21

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধুর প্রাণের রাজনৈতিক সংগঠন। একটি বৈপ্লবিক ইতিহাসের সিংহপুরুষ বঙ্গবন্ধু এ সংগঠনকে সমগ্র বাঙালিজাতির প্রাণের সংগঠন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন। আজ হতে ৭৩ বছর পূর্বে পাকিস্তান মুসলিম লীগের পূর্ববঙ্গ অংশের নেতৃত্বকে ঢেলে সাজানোর লক্ষে প্রতিষ্ঠিত হয় আওয়ামী মুসলিম লীগ। একসময় আওয়ামী মুসলিম লীগ আওয়ামী লীগে রূপান্তরিত হয়। যার প্রথম কাÐারী মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী। এ সংগঠন হাঁটি হাঁটি পা পা করে এক সময় সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ক্যারেস্মেটিক নেতৃত্বের ছায়া পায়। ফলে ১৯৭০ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পাকিস্তান জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংখ্যা গরিষ্ঠ আসনে জয়ী হয়। পরে ইতিহাস সর্বজন বিধিত। স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে নয় মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বীর বাঙালি স্বাধীনতা অর্জন করতে সক্ষম হয়। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বাঙালি জাতীয়তাবাদের ধারক বাহক হিসেবে বিশ্বে একটি আদর্শবাদী বৈপ্লবিক সংগঠন হিসেবে স্বগৌরবে প্রতিষ্ঠিত। সংগঠনের আদর্শ ও চেতনার ঐশ্বর্য্যই নানা চড়াই উৎরাই অতিক্রম করে বর্তমানে দেশের সরকার পরিচালনার মহান দায়িত্ব ভার অর্জন করতে সক্ষম হয়। ১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর নৃশংস হত্যাকাÐের মাধ্যমে ষড়যন্ত্রকারীরা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করার হুলিখেলায় মেতেছিল। কিন্তু ঐতিহ্যবাহী এ সংগঠনের নেতৃত্ব বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার করায়ত্ব হবার পর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ঘুরে দাঁড়িয়ে স্বাধীনতার চেতনা সমুন্নত রেখে জাতিকে অর্থনৈতিক মুক্তির রোল মডেলের শক্ত ভিতের উপর স্থাপনে সক্ষম হয়। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়িত হতে থাকে। রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিকসহ সর্বক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বে মধ্যপন্থী হিসেবে সাফল্য অর্জন করে। বর্তমানে বাংলাদেশ বিশ্বের দরবারে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ইতিহাস কুসুমার্ত্তীণ নয়। যথেষ্ট কণ্টকাকীর্ণ। তবু সত্য যে কঠিন, কঠিনেরে ভালো বেসে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মহান স্বাধীনতা অর্জনকারী সংগঠন হিসেবে দলীয় ঐতিহ্য সমুন্নত রেখেছে। বঙ্গবন্ধুর ইতিহাস ত্যাগের ইতিহাস, আওয়ামী লীগের ইতিহাসও ত্যাগে ভরা। আওয়ামী লীগের সভাপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দলটিকে সার্বিক সাফল্যের পথে এগিয়ে নিচ্ছেন।
দলের ঐক্য ও ঐতিহ্য ঠিক রাখার পাশাপাশি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২০২২ সালে পদ্মা সেতুর মতো প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ৭৪ বছরে পা দিয়ে স্বপ্নের পদ্মাসেতু বাস্তবায়ন, স্বাধীনতা পরবর্তী সংগঠন ও দেশের জন্য একটি বিশাল অর্জন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মেধা, শ্রম ও সুচারু পরিকল্পনাই পদ্মাসেতুর মতো স্বপ্নের মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন বাংলাদেশের পক্ষে সক্ষম করে তুলেছে।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মূল কাÐারী বঙ্গবন্ধু দেশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। তারই সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মাসেতু বাস্তবায়ন করেছেন। তারই ধারা বাহিকতায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দেশকে একটি উন্নত দেশে রূপান্তরের মহা প্রকল্প হাতে নিতে হবে। দলীয় আদর্শ ও ঐতিহ্যের প্রতি নিষ্ঠাবান হয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের এগিয়ে যেতে হবে সার্থকতার চরম শিখরে। আওয়ামী লীগের ভেতর বর্তমানে বহু হাইব্রীট ব্যক্তি ঢুকে পড়েছে। যারা দলের ইতিহাস ঐতিহ্যকে কলঙ্কিত করার অশুভ খেলায় মেতে উঠেছে। দল হতে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের পিঠে চুরিকাঘাতকারী হাই ব্রীটদের ব্যপারে প্রকৃত আদর্শের আওয়ামী নেতাকর্মীদের সদা সজাগ থাকতে হবে। ভোগ কিংবা ব্যক্তিস্বার্থ বঙ্গবন্ধুর আদর্শে কখনো ছিল না। বঙ্গবন্ধু সবসময় বাঙালি জাতির উন্নতি ও অগ্রগতির জন্য নিষ্ঠার সাথে কাজ করে গেছেন। সুশাসন ন্যায় বিচার, সামাজিক নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক মুক্তির লক্ষে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ত্যাগের মানসিকতায় এগিয়ে আসতে হবে। সারাদেশে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ২৩ জুন প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হবে। এ প্রতিষ্ঠাবাষিকীর মূল ¯েøাগান হোক ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে দলীয় নেতাকর্মীরা মাননীয় জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে আদর্শিক লড়াইয়ে অবতীর্ণ হোক।’ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বঙ্গবন্ধু ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশিত পথে দৃঢ়পদ থেকে ঐতিহ্যবাহী এ সংগঠনের কল্যাণমুখী কার্যক্রমকে এগিয়ে নেয়ার শপথে উজ্জীবিত হলে দেশ প্রকৃত স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিণত হবে।