বঙ্গমাতার সাহস ও ত্যাগের দৃষ্টান্ত অনুসরণীয় : প্রধানমন্ত্রী

2

পূর্বদেশ ডেস্ক

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পাশে থেকে মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাওয়া বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের সাহস ও ত্যাগের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কেবল দেশের নারীরা নয়,পৃথিবীর অনেক দেশের নারীরাও দৃষ্টান্ত হিসেবে অনুসরণ করতে পারেন। গতকাল রোববার সকালে ‘বঙ্গমাতা: এ প্যারাগন অব উইমেনস লিডারশিপ অ্যান্ড ন্যাশন-বিল্ডিং ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
জাতি গঠনে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের অবদান ও জীবন দর্শন নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবন অডিটোরিয়ামে আয়োজিত দুই দিনব্যাপী এ আন্তর্জাতিক সম্মেলনে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী। আজ বঙ্গমাতার জন্মদিন উপলক্ষে সম্মেলনটির আয়োজন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা সেন্টার ফর জেন্ডার অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ। খবর বাংলানিউজ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আপনারা আজকে যে সুযোগটা দিয়েছেন এবং জেন্ডার সমতার কথা বলেছেন- আমার বাবার পাশে থেকে থেকে যেভাবে তিনি (বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব) সাহস দেখিয়েছেন আমি মনে করি আমাদের দেশের মেয়েরা শুধু না পৃথিবীর অনেক মেয়েরাই তার জীবনের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করতে পারবে। যে একজন মানুষ তার জীবনের সব কিছু ত্যাগ করেছেন একটি জাতির স্বাধীনতার জন্য, একটি দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য।
শোষিত বঞ্চিত মানুষের অধিকার আদায়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পাশে সব সংগ্রামে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব সব সময় সহযোগিতা করতেন জানিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, মার জীবনে কোন চাওয়া পাওয়া ছিল না। তিনি নিজের জন্য কোনদিন কিছু চাননি। আমরা শুনিনি আমার আম্মা কোন আবদার করেছেন। তার নিজের যে টুকু ছিল সবই তিনি বিলিয়ে দিতেন। দলের জন্য, মানুষের জন্য,গরীব আত্মীয় পরিবার পরিজনের জন্য।
১৫ আগস্টের নির্মমতা এবং বঙ্গমাতার সাহসিকতা ও ত্যাগের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, যখন আমার আব্বাকে গুলি করলো আমার মা কিন্তু জীবন ভিক্ষা চাননি। এ পরিস্থিতিতে সাধারণত মানুষ নিজের জীবন ভিক্ষা চায়। আমার মা ভিক্ষা চাননি। মা সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন- উনাকে যখন হত্যা করেছো আমাকেও হত্যা করো। তখন ঘাতকের বুলেট তাকে কেড়ে নেয়।
তিনি বলেন, ঘাতক করা? এরা তো আমাদের বাসায় অহরহ যেত। আমার মা সবাইকে আপ্যায়ন করতো। অথচ তারা ঘাতক হয়ে আসলো।
বঙ্গমাতার রাজনৈতিক দুরদর্শীতার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংসারের ব্যাপারে, রাজনীতির ব্যাপারে প্রতিটি ব্যাপারে তিনি যে সিদ্ধান্ত যখন দিয়েছেন সেটা যে আমাদের দেশের জন্য কত সঠিক আর শেষ পর্যন্ত নিজের জীবনটাও দিয়ে গেলেন।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, মাতৃভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতা সংগ্রাম, দেশের সব আন্দোলন-সংগ্রামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরাট অবদান রয়েছে। স্বাধীনতার পর দেশ গঠন এবং সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে। আজকে আমরা যে স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি, এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় অবদান এই বিশ্ববিদ্যালয়ের। আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী হিসেবে গর্ববোধ করি। আমার পরিবারের প্রায় সবাই এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন।