ফের পিছিয়ে গেলো অযোধ্যা মামলার শুনানি

33

অযোধ্যা মামলার (রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদ বিতর্ক) শুনানি আবারও পিছিয়ে দিয়েছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। তুমুল বিরোধিতার মুখে বিচারপতি ইউ ইউ লোলিত এই মামলা থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার পর শুনানি পিছিয়ে যায়। আদালত জানিয়েছে, ২৯ জানুয়ারি এ নিয়ে নতুন করে শুনানি হবে। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদন থেকে এসব কথা জানা গেছে।
উত্তরপ্রদেশের ফৈজাবাদে বাবরি মসজিদের অবস্থান। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের একাংশের দাবি, যেখানে মসজিদ গড়ে তোলা হয়েছে সেই জায়গাটি ছিল রামের জন্মভূমি, তা ভেঙে মসজিদ বানানো হয়। এ নিয়ে হিন্দু-মুসলিম বিরোধ বহুদিনের।
১৯৯২ সালে বিজেপি সরকার ক্ষমতাসীন থাকার সময়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় বাবরি মসজিদ। একে কেন্দ্র করে সৃষ্ট সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় প্রাণ হারায় অন্তত ২ হাজার মানুষ। ভারতের প্রাচীন শহর অযোধ্যার ওই বিতর্কিত স্থানটি কোন সম্প্রদায়ের দখলে থাকবে, তা নিয়ে মামলা চলছে ৬০ বছর ধরে। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে গঠিত পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চে এই মামলার শুনানি শুরুতে একবার পিছিয়ে যায়।
১০ জানুয়ারি নতুন করে মামলার শুনানি হওয়ার কথা ছিল। সেই বেঞ্চে প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ ছাড়াও ছিলেন বিচারপতি এস এ বোবদে, এন ভি রামানা, ইউ ইউ ললিত এবং ডি ওয়াই চন্দ্রচুড়। তবে শেষপর্যন্ত আবারও শুনানি স্থগিত করা হয়েছে। বেঞ্চে বিচারপতি ললিতের উপস্থিতি নিয়ে আপত্তি জানায় মুসলিম সংগঠনের আইনজীবীরা। আপত্তির মুখে বেঞ্চ থেকে সরে দাঁড়ান ললিত। এমন পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবান বিচারপ্রক্রিয়া মুলতুবি করতে বাধ্য হন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ। পরবর্তী শুনানি হবে ২৯ জানুয়ারি। বিচারপতি ললিত সরে যাওয়ায় নতুন করে তৈরি হবে সাংবিধানিক বেঞ্চ।
কয়েকটি ধর্মীয় সংগঠন চায় রাম মন্দির নির্মাণ করতে অর্ডিন্যান্স নিয়ে আসুক সরকার। বিজেপি এবং তাদের সহযোগী দলেরও অনেকেই সেটা চায়। কিন্তু সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জানিয়েছেন বিচার প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত সেরকম কিছু করা যাবে না। ২০১০ সালের এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে যে ১৪টি আবেদন করা হয়েছিল, সেগুলির একযোগে শুনানি হওয়ার কথা সাংবিধানিক বেঞ্চে। ওই রায়ে বিতর্কিত জমির ২.৭৭ একর করে নির্মোহী আখড়া, সুন্নি সেন্ট্রাল ওয়াকফ বোর্ড এবং রামলাল বিরাজমনকে দিয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল।
গত ৪ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ এবং বিচারপতি এস কে কাউলের বেঞ্চ এই মামলার শুনানির দিন ১০ জানুয়ারি ধার্য করে দেয়। গত বছরের ২৯ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার দ্রুত শুনানির আবেদন জানায় অখিল ভারত হিন্দু মহাসভা। সে আবেদন খারিজ করে দিয়েছিল শীর্ষ আদালত।