প্রক্টর প্রভোস্টসহ ১৬ জনের পদত্যাগ

23

চবি প্রতিনিধি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভুঁইয়াসহ ১৬ জন প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদত্যাগ করেছেন। তারা ১৮টি পদে কর্মরত ছিলেন। গতকাল রবিবার তারা রেজিস্ট্রার বরাবর পদত্যাগপত্র জমা দেন। তাদের মধ্যে প্রক্টরিয়াল বডির ৬ জন, বিভিন্ন হলের আবাসিক শিক্ষক ৯ জন ও অপর একজন একটি পর্ষদের অতিরিক্ত পরিচালক।
প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া প্রক্টরের পাশাপাশি শহীদ আব্দুর রব হলের প্রভোস্টের পদ থেকে পদত্যাগ করেন। এছাড়া বাকি পদত্যাগকারীরা হলেন সহকারী প্রক্টর ড. শহীদুল ইসলাম, এসএএম জিয়াউল ইসলাম, ড. রামেন্দু পারিয়াল, গোলাম কুদ্দুস লাবলু, মোহাম্মদ শাহরিয়ার বুলবুল তন্ময়, ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি এস্যুরেন্স সেলের (আইকিউএসি) অতিরিক্ত পরিচালক ড. মোহাম্মদ ওমর ফারুক, এএফ রহমান হলের আবাসিক শিক্ষক আনাবিল ইহসান, প্রীতিলতার হলের আবাসিক শিক্ষক ফারজানা আফরিন রূপা, শহীদ আব্দুর রব হলের আবাসিক শিক্ষক ড. এইচএম আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, শহীদ আব্দুর রব হলের আবাসিক শিক্ষক রমিজ আহমেদ সুলতান, শামসুন নাহার হলের আবাসিক শিক্ষক শাকিলা তাসমিন, খালেদা জিয়া হলের আবাসিক শিক্ষক ড. মো. শাহ আলম, নাসরিন আক্তার ও উম্মে হাবিবা ও আলাওল হলের আবাসিক শিক্ষক ঝুলন ধর। এর মধ্যে শাহরিয়ার বুলবুল তন্ময় শাহজালাল হলের আবাসিক শিক্ষকের পদ থেকেও সরে দাঁড়িয়েছেন। এর আগে গত ৭ মার্চ সহকারী প্রক্টরের পদ থেকে মরিয়ম ইসলাম (লিজা) পদত্যাগ করেছিলেন। জানা গেছে, উপাচার্য ড. শিরীণ আখতারের সাথে প্রক্টর রবিউল হাসান ভূঁইয়ার দীর্ঘদিন ধরে নানা বিষয় নিয়ে দ›দ্ব চলছিল।
এ বিষয়ে উপাচার্য বলেন, তারা ৩ মাস আগে থেকেই বিভিন্ন জায়গায় মিটিং করছেন। বিভিন্ন জায়গায় প্রশাসন বিরোধী কথা বলছেন। তারা যা বলছে, সব মিথ্যা।
তিনি বলেন, তারা আমার কাছে কিছু দাবি করেছিলেন। তাদের দুই-একজনের ব্যক্তিগত কিছু চাওয়া পাওয়া ছিল। এছাড়া নিয়োগ সংক্রান্তও কিছু দাবি ছিল, তা এখন বলবো না। আমি তাদের কথায় সায় দিতে পারিনি। তাদের এসব দাবি পূরণ না হওয়ায় তারা এমনটা করেছেন। তারা আমাকে ‘দেখে নেবে’ এ কথাও বলেছিলেন।
উপাচার্য আরও বলেন, আমি জানতাম এমন কিছু ঘটতে পারে। তাই ভেতরে ভেতরে আমিও তাদের বিকল্প তৈরি করে ফেলেছি।
পদত্যাগকারীদের দাবিদাওয়ার বিষয়ে উপাচার্য খোলাসা করে কিছু না বললেও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পদত্যাগকারী প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভুঁইয়া তার স্ত্রীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজিক্যাল এডুকেশন এন্ড স্পোর্টস সায়েন্স বিভাগের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিতে চেয়েছিল। উপাচার্য তাতে রাজি না হওয়াই দুইজনের মধ্যে মূলত দ›েদ্বর সৃষ্টি হয়। একই বিষয় নিয়ে সিন্ডিকেট সদস্য ড. খাইরুল ইসলামের সাথেও তিনি দ›েদ্ব জড়ান বলে জানা গেছে।
তবে বিষয়টিকে সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করছেন ড. রবিউল হাসান ভুঁইয়া। তিনি বলেন, আসলে চেয়ার ছেড়ে দিলে অনেকে অনেক কথাই বলে। মূলত শিক্ষক সমিতির ২০২২-২৩ কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচনের আগে শিক্ষকরা আমাদের কিছু যৌক্তিক দাবি জানিয়েছিল। নির্বাচনের পরে আমরা তা পূরণে কাজ করব বলে আশ্বাস দিয়েছিলাম। কিন্তু প্রশাসন তা করতে পারেনি। আমি তখনই পদত্যাগ করতে চেয়েছিলাম। পরবর্তীতে ২০২৩-২৪ কার্যনির্বাহীর নির্বাচনের সময় একই বিষয়গুলা নিয়ে উপাচার্যের সাথে কথা বলি। সেখান থেকেই মূলত দূরত্ব তৈরি হয়।
এদিকে প্রক্টর ড. রবিউল হাসানের পদত্যাগের আধা ঘণ্টার মধ্যেই নতুন প্রক্টর নিয়োগ দেয়া হয়েছে। নতুন প্রক্টর হয়েছেন ইনস্টিটিউট অব মেরিন সায়েন্সের সহযোগী অধ্যাপক ড. নূরুল আজিম সিকদার।
গতকাল রবিবার দুপুর দুইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) কেএম নূর আহমদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ নিয়োগ দেয়া হয়। যাবতীয় বেতন ভাতা ও অন্যান্য সুবিধাসহ পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এ নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এছাড়া আরো দুইজন সহকারী প্রক্টর নিয়োগ দেয়া হয়। তারা হলেন মো. রোকন উদ্দিন ও সৌরভ শাহা জয়।