পেঁয়াজের বাজার দ্রুত নিয়ন্ত্রণ জরুরি

29

কুরবানের ঈদে পেঁয়াজের দাম পড়ে যে সকল ব্যবসায়ী এবং আড়তদার মাথায় হাত দিয়েছিল তারা পেঁয়াজের দাম বাড়ানোর পাঁয়তারা করেছে এমন অভিযোগ সাধারণ ক্রেতাদের। কুরবানের সময় যারা পেঁয়াজ মজুদ করেছিল দাম বাড়ার আশায় তাদের জন্য একটা শিক্ষা হয়ে গেছে গত কুরবানে। স্বভাবতই কুরবানের সময় পেঁয়াজ রসুন, আদার দাম বৃদ্ধি পায়। এ বছর কুরবান মৌসুমে অসাধু ব্যবসায়ীরা খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি। তারা স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চাচ্ছে। ভারতের কোথায় বন্যা হয়েছে, অতিবৃষ্টি হয়েছে তার জন্য পেঁয়াজের দাম কেজি প্রতি পাঁচ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে- এটা আসল বিষয় নয়। ভারতের মহারাষ্ট্র আর মধ্য-প্রদেশে অতিবৃষ্টির কারণে পেঁয়াজ খেত ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সমগ্র ভারতের পেঁয়াজ উৎপাদন ব্যাহত হয় নি। পেঁয়াজ রসুনের আড়তদার ও প্রশাসনকে বোকা বানাতে অনেক ধরনের অজুহাত অসাধু ব্যবসায়ীরা দাঁড় করায়। ভারতের মহারাষ্ট্র এবং মধ্য-প্রদেশের পেঁয়াজ উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় ৫ টাকা অতিরিক্ত দাম দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করতে হচ্ছে মানলাম। সে পেঁয়াজ পরিবহন খরচসহ না হয় ১০ টাকা বাড়তে পারে। ২৮ টাকায় বিক্রি হওয়া পেঁয়াজ ৩৮ টাকা। পেঁয়াজের দাম বাড়ানো সিন্ডিকেট কর্মকান্ডই। সবসময় তারা চাক্তাই খাতুনগঞ্জে মূল্য বৃদ্ধি করে সাধারণ ক্রেতাদের হয়রানি করতে দেখা গেছে। ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানী বন্ধ হওয়ার পর দেখা গেছে ১৫ টাকার পেঁয়াজ ২০০ টাকায় বিক্রি করতে। বলা হলো পেঁয়াজ নাই দেশে। ভারত ছাড়া বহু দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানী করতেও দেখা গেছে। অথচ আমরা দেখলাম আড়তদাররা ট্র্যাকে ট্র্যাকে পেঁয়াজ কর্ণফুলী নদীতে ফেলে দিয়েছে। অহেতুক দাম বৃদ্ধির পাঁয়তারা অসাধু ব্যবসায়ীরা সবসময় করে থাকে।
প্রশাসন এবং সাংবাদিকদের কাছে তারা ঠুঙ্কু অজুহাত দেখিয়ে পার পেয়ে যায়। এ সকল অসাধু ব্যবসায়ীদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দেয়া হয়নি। শাস্তি দেয়া হলেও তা তাদের আঁতে লাগেনি কখনো। কুরবানের মৌসুমে যে পরিমাণ পেঁয়াজ মজুদ করেছিল আড়তদার এবং সুযোগ সন্ধানী অসাধু ব্যবসায়ীরা তা এখনো বিক্রি শেষ হয় নি। আমাদের জানা মতে অনেক গুদামজাত ব্যবসায়ীর আড়তে টনকে টন পেঁয়াজ এখনো পঁচে যাচ্ছে। তারা যে সুযোগের অপেক্ষায় পেঁয়াজ মজুদ করেছে তা গত কুরবানে সফল হয়নি। এখন মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আমদানী বন্ধ, ভারতের মহারাষ্ট্র ও মধ্যপ্রদেশে পেঁয়াজ উৎপাদন ব্যাহত- এসব কথার কথা মাত্র। আসল কথা হলো রাতারাতি জনগণের কাছ থেকে কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা ব্যর্থ হওয়ায় নতুন অপকৌশলে জনগণের মধ্যে পেঁয়াজ আতঙ্ক সৃষ্টির পাঁয়তারা মাত্র। চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকের সক্রিয় সহযোগিতায় পেঁয়াজ, রসুন, আদার বেপারীদের শায়েস্তা করার পক্ষে সমগ্র চট্টগ্রামের ক্রেতা সাধারণ।
পেঁয়াজের অসাধু চক্রকে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী শক্ত হাতে শায়েস্তা করুক এমন দাবি ক্রেতা সাধারণের।