পণ্যমূল্য বৃদ্ধিতে সিন্ডিকেট অপকৌশল পরাস্ত হোক

16

ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী

জনশ্রæতিমতে, দেশে অধিকাংশক্ষেত্রে বিচারহীনতার অপসংস্কৃতি-গুরুতর অপরাধে লঘু শাস্তি-যৎসামান্য অর্থ জরিমানায় দÐ লাঘব-অনৈতিক লেনদেনের মাধ্যমে অপরাধীদেরকে আড়াল করার কদর্য আচরণ পুরো সমাজকেই যারপরনাই পর্যুদস্ত করে চলছে। শিক্ষা-উচ্চশিক্ষা থেকে শুরু করে প্রায় সকল সরকারি বেসরকারি সংস্থা-প্রতিষ্ঠানে ঘুষ-দুর্নীতি-অনিয়ম-অপকর্ম এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে; রাষ্ট্রের সমগ্র জনগণ অতিশয় কাতরতায় বিধ্বস্ত। বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রাধনমন্ত্রীর নেতৃত্বে অদম্য অগ্রগতিতে এগিয়ে যাওয়ার বাংলাদেশে ভৌত অবকাঠামো-ডিজিটালাইজেশন-সড়ক-জনপথ-সেতু-জীবনমান উন্নয়নে গৌরবোজ্জ্বল অর্জন শুধুমাত্র কতিপয় দুষ্ট চক্রের সিন্ডিকেট কারসাজিতে ¤øান হতে পারেনা। মুক্তির মহানায়ক জাতির জনক বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানি হায়েনা কর্তৃক সম্পূর্ণ ধ্বংসপ্রাপ্ত স্বাধীন মাতৃভূমি পুনরুদ্ধারে সততা-নিষ্ঠা-প্রজ্ঞা ও দেশপ্রেমের আকাশচুম্বী অনুপ্রেরণায় দেশবাসীকে উদ্দীপ্ত করেছিলেন। ঘুষ-দুর্নীতি-কালোবাজার্রি-মুনাফাখোরি কুৎসিত সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে সামরিক-বেসামরিক আমলাসহ দেশের আপামর জনগোষ্ঠীকে রুখে দাঁড়ানোর আহŸান ছিল আশাজাগানিয়া প্রচÐ আবেগের বশবর্তী। নরপশুতুল্য অর্থলিপ্সু ঘৃণ্য এসব সিন্ডিকেট নানা অপকৌশল অবলম্বনে দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি শুধু অসহনীয় পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছে না; দেশে অরাজক-অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টিতেও এদের চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র জনগণকে অতিষ্ঠ করে তুলছে। কঠোর আইনের আওতায় এনে সত্য-বস্তুনিষ্ঠ বিচার বিভাগীয় নিগূঢ় তদন্তের মাধ্যমে এদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি গ্রহণ করা না হলে আগামী পবিত্র রমজান মাসকে কেন্দ্র করে বাজার পরিস্থিতি আরও অস্বস্তিকর অবস্থানে নিপতিত হবে।
নির্ভীক সাহসীকতায় দেশপ্রেমের মোহনিয়া পরিগ্রহে বঙ্গবন্ধু বারবার ঘুষখোর, দুর্নীতিবাজ, চোরাকারবারী, মুনাফাখোর, দেশের সম্পদ পাচারকারী, মজুদদার এবং অর্থ-ক্ষমতার মোহে পাগলপ্রায় মানুষ সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করেছেন এবং বাংলার দু:খী মানুষের সুখ-শান্তি ও দু’বেলা পেট ভরে খাওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানিয়েছেন। ১৯৭৫ সালের ১১ জানুয়ারি কুমিল্লা সেনানিবাসে অস্থায়ী বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি প্রাঙ্গণে ব্যাচ পাসিং আউট প্যারেডে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘এত রক্ত দেওয়ার পরে যে স্বাধীনতা এনেছি, চরিত্রের পরিবর্তন অনেকের হয় নাই। এখনো ঘুষখোর, দুর্নীতিবাজ, চোরাকারবারি, মুনাফাখোরি বাংলার দুঃখী মানুষের জীবনকে অতিষ্ঠ করে তুয়েছে। দীর্ঘ তিন বছর পর্যন্ত আমি এদের অনুরোধ করেছি, আবেদন করেছি, হুমকি দিয়েছি, চোরা নাহি শোনে ধর্মের কাহিনি।….. এবার আমি প্রতিজ্ঞা করেছি, যদি ২৫ বছর এই পাকিস্তানি জালেমদের মধ্যে জিন্নাহ থেকে প্রারম্ভ করে গোলাম মোহাম্মদ. চৌধুরী মোহাম্মদ আলী, আইয়ুব খান, ইয়াহিয়া খানের মধ্যে বুকের পাটা টান করে সংগ্রাম করতে পারি আর আমার ত্রিশ লক্ষ লোকের জীবন দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করতে পারি; তাহলে পারব না? নিশ্চয় ইনশাআল্লাহ পারব। এই বাংলার মাটি থেকে এই দুর্নীতিবাজ, এই ঘুষখোর, এই মুনাফাখোরি, এই চোরাকারবারিদের নির্মূল করতে হবে। আমিও প্রতিজ্ঞা নিয়েছি, তোমরাও প্রতিজ্ঞা নাও, বাংলার জনগণও প্রতিজ্ঞা গ্রহণ করুক।’
আমাদের সকলের জানা, দেশে চলমান নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় চলতি মাসের শুরু থেকেই অস্থির ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের দাম। ১০ ফেব্রæয়ারি ২০২৩ গণমাধ্যমে প্রকাশিত সূত্রমতে, ব্রয়লার মুরগির দাম প্রতি কেজি এখন ২০০-২১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। দেশি মুরগির দাম চাওয়া হচ্ছে কেজি ৪৫০-৫২০ টাকা। অন্যদিকে ফার্মের মুরগির ডিমের দাম ডজনপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ১৩৫-১৪০ টাকা দরে। পাড়া-মহল্লার দোকানগুলোতে বিক্রি হচ্ছে আরও ৫-১০ টাকা বেশি দামে। কোথাও কোথাও প্রতি হালি ডিম ৫০ টাকা দরেও বিক্রির সংবাদ পরিবেশিত হয়েছে। প্রাসঙ্গিকতায় গণমাধ্যমে দেওয়া ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ‘ডিমের বাজারে সিন্ডিকেটের বিষয়টি পরিষ্কার। কারণ যখন আগস্টে জ্বালানি তেলের দাম বাড়লো তখন একটি ডিমের দাম পাঁচ টাকা পর্যন্ত বাড়ানো হলো। সে সময় আমরা মাঠে নামলাম। নিলামের নামে একটি সাজানো ঘটনার মধ্য দিয়ে ডিমের দাম বাড়ানোর প্রমাণ মিলল। যে কোম্পানি দাম বাড়ালো তার সংবাদ সারা দেশে ছড়িয়ে গেলো। এরপর যখন অভিযান চলছে তখন ডিম আমদানি করার ঘোষণা হলো। তখন আবার তিনদিনের মধ্যে স্বাভাবিক গয়ে গোলো বাজার। কিন্তু এরমধ্যে একটি টাকাও বাড়তি দাম পেলো না প্রান্তিক খামারিরা। ভোক্তার প্রায় ৫০০ কোটি টাকা নিয়ে গেলো সে সিন্ডিকেট।’
গণমাধ্যমে প্রকাশিত পরসংখ্যান পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত বছরে বাজারে চালের কোনো ধরনের সংকট না থাকা সত্তে¡ও মিল মালিকেরা অনেক সময় চালের দাম বাড়িয়েছে। ২০২২ সালের জুন মাসে মিলারদের যোগসাজসে চালের দাম হু হু করে বাড়তে থাকে। নভেম্বরে চাল তৈরিতে খরচ বাড়ার অজুহাতে ভরা আমন মৌসুমে প্রতি কেজি চালের দাম ৮-১৫ টাকা বেশি দরে বিক্রি হয়েছে। নভেম্বর থেকে বেড়েছে আমদানিনির্ভর পণ্য সব ধনের ডালের দাম। খুচরা বাজারে বিভিন্ন ডালের দাম ২০ থেকে ৩০ টাকা বাড়তি বিক্রি হচ্ছে। ডিসেম্বর মাসে প্রতি কেজি মুসর ডাল মানভেদে বিক্রি হয়েছে ১১০ থেকে ১৪০ টাকা যা ২০২২ সালের শুরুতে ছিল ৯০ থেকে ১১ টাকা পর্যন্ত। বিভিন্ন সময় দাম বাড়ানোর জন্য চিনির সরবরাহ বন্ধ রেখে সংকট সৃষ্টি করেছিল কোম্পানিগুলো। সরকার কর্তৃক বারবার দাম বেঁধে দিলেও অধিকাংশক্ষেত্রে তা কার্যকর হয়নি। সম্প্রতি সরবরাহ সংকটের কারণ দেখিয়ে প্রতি কেজি চিনি ১৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। পেঁয়াজের দাম কিছুটা স্থিমিত থাকলেও আদা-রসুনের দাম কেজিতে বেড়েছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা পর্যন্ত। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)’র ভাষ্যমতে, বছরের ব্যবধানে প্রতিকেজি আটা ৭০ শতাংশ এবং ময়দা ৫৭ শতাংশ বেড়েছে। বর্তমানে ৭০ থেকে ৭৫ এবং ৭৫-৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে যথাক্রমে প্যাকেটজাত আটা ও ময়দা। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুারোর (বিবিএস) তথ্য্যের ভিত্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গবেষণা অনুযায়ী মানুষের জীবনযাত্রায় ব্যবহৃত ১১টি নিত্যপণ্যসহ বিভিন্ন সেবার মূল্য এক বছরের ব্যবধানে সর্বনি¤œ ৭ থেকে সর্বোচ্চ ৩১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
বাজার বিশ্লেষকদের মতে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব এবং জ্বালানি তেল-ডলারের অব্যাহত মূল্যবৃদ্ধির অজুহাতে একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট কারসাজি এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যথাযথ তদারকির অভাবে বাজারে পণ্যমূল্যের উত্তাপ ছড়িয়েছে বেশি। যে কারণে ক্রেতাদের চাল-ডাল, ভোজ্যতেল, আটা-ময়দা, চিনি, লবন, মাছ-মাংস, সবজিসহ সব ধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য চড়া মূল্যে কিনতে হয়েছে। শুধু আমদানি পণ্য নয়, দেশে উৎপাদিত পণ্যের দামও ছিল আকাশছোঁয়া। ফলশ্রæতিতে বিগত বছর থেকে শুরু করে অদ্যাবধি সাধারণ ক্রেতা বিশেষ করে মধ্যবিত্ত ও নি¤œ-আয়ের মানুষদের সংসার পরিচালনায় হিমশিম খাচ্ছে। তাঁরা আরও বলেন, ‘কর্পোরেট মাফিয়াদের দাপটে কোণঠাসা সবাই, তাই হয়তো সরকার কঠোর হতে পারছে না। কিছুদিন আগে কারণ ছাড়াই বেড়েছে ডিম-মুরগির দাম। তারও আগে চলেছে ভোজ্যতেল ও চালের কারসাজি। অসাধু কিছু ব্যবসায়ীর কারণে বারবার দুর্ভোগে পড়ছে দেশের প্রায় ৪২ ভাগ নি¤œ আয়ের মানুষ। আইনের তোয়াক্কা না করে বছরের পর বছর তারা নিজেদের ইচ্ছামতো পণ্যের দাম বাড়াচ্ছেন এবং কমাচ্ছেন। কারসাজি চক্রের লাগাম টানতে সরকার মাঝেমধ্যেই অভিযানসহ নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে। তবুও থেমে নেই অসাধু চক্রের দাপট।’
১২ ফেব্রæয়ারি ২০২৩ আসন্ন পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে পণ্যের আমদানি, মজুত, সরবরাহ ও মূল্য পরিস্থিতি নিয়ে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন (এফবিসিসিআই) আয়োজিত মতবিনিময় সভায় ভোজ্যতেল-চিনির মূল্যবৃদ্ধির পেছনে মিল মালিক, পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা একে অপরকে দায়ী করেছেন। খুচরা বিক্রেতাদের মতে, পণ্যের গায়ে লেখা দামের চেয়ে বেশি দামে পণ্য বিক্রি করা হয় না বা করাও যায় না। পাইকারি ব্যবসায়ীদের অভিযোগ মিলগুলো তেল-চিনির রসিদ দিচ্ছে এক দরে আর টাকা নিচ্ছে অন্য দরে। মিল মালিকদের দাবি, রসিদ ছাড়া মিল গেট থেকে পণ্য বিক্রি হয় না। যারা পণ্য কিনছেন তারা রসিদ নিচ্ছেন। সংগঠনটির সভাপতি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ব্যবসায়ীদের প্রতি ‘কালো ব্যবসা’ বন্ধের আহŸান জানিয়েছেন। ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘পণ্য কেনাবেচার সময় রসিদ না দেওয়া কিংবা এক দামের রসিদ দিয়ে অন্য দাম নেওয়া – এগুলো ব্যবসায়ের কালো অধ্যায়। লাভ করবেন আর কাগজ দেবেন না, এটা হবে না। নীতি-নৈতিকতা নিয়ে ব্যবসা করতে হবে। খারাপ কিছু মানুষ থাকতে পারে, তাদের চিহ্নিত করতে হবে। অল্প কিছু ব্যবসায়ীর এমন আচরণে পুরো ব্যবসায়ী সমাজের দুর্নাম হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘গতবার সবাই প্রতিজ্ঞা করলেন, নিত্যপণ্যের দাম বাড়ানো হবে না। কিন্তু ঈদের দুই দিন আগে বাজার থেকে তেল হাওয়া হয়ে গেলো। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালিয়ে আবার বাসার খাটের নিচ থেকেও তেল উদ্ধার করেছে। এটা কীভাবে সম্ভব। এবার আমরা ঘোষণা দিতে চাই, রোজা এবং ঈদে অযৌক্তিকভাবে তেল-চিনির দাম বাড়াবেন না। ব্যবসায়ীরা শুধু মুনাফাখোর, উৎসব-পার্বণে পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়, এই তকমা থেকে এবার বেরিয়ে আসতে চাই।’ এটিও সত্য যে, পর্যাপ্ত চাহিদা মোকাবেলায় নিত্যপণ্য আমদানিতে ব্যাংকগুলোর আরোপিত বিভিন্ন শর্তের কারণে এলসি খুলতে ব্যাংকসমূহের সঠিক সহায়তা পাচ্ছেনা বলে ব্যবসায়ী পক্ষের অভিযোগ রয়েছে।
বিরাজিত বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যেও নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় বর্তমান সরকার ইতিমধ্যে নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। চালের বাজার স্বাভাবিক রাখতে গত বছরের জুলাই মাসে ১০ লাখ টন চাল আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। বাজার মনিটরিং জোরদারের সঙ্গে সঙ্গে দুদফায় আমদানি শুল্ক ৬২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে স্বল্পমূল্যে ওএমএস কার্যক্রমও নেওয়া হয়। ৪ জানুয়ারি ২০২৩ দ্রব্যমূল্য ও বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত টাস্কফোর্স কমিটির সভায় খাতসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী ও আমদানিকাররা রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের স্বাভাবিক সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি দাম নিয়ন্ত্রণহীন হওয়ার আশঙ্কা এড়াতে নিত্যপণ্য আমদানির এলসি খোলার ক্ষেত্রে ডলার সরবরাহে বিশেষ কোটা সুবিধা দেওয়ার প্রস্তাব করেছেন। উক্ত সভায় সম্মানিত বাণিজ্যমন্ত্রী তাদেরকে আশ্বস্ত করে বলেন, ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানিতে এলসি খোলার সুবিধার্থে নির্দিষ্ট পরিমাণ ডলার রাখার প্রস্তাবটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে পর্যালোচনা করা হবে। তবে নিত্যপণ্যের আমদানিতে যাতে কোনো অসুবিধা না হয়, তার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কেইস টু কেইস ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট আমদানিকারকের এলসি প্রক্রিয়া দ্রæত সম্পন্ন করার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জোরালো পদক্ষেপ নেবে। এর ফলে আমদানিকারকরা ক্ষেত্র বিশেষে এলসি ছাড়াই বিশেষ ব্যবস্থায় সুনির্দিষ্ট পণ্য আমদানি করতে পারবেন।’ ৮ ফেব্রæয়ারি ২০২৩ সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক উত্থাপিত আগামী রমজান উপলক্ষে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) জন্য ১৯৪ কোটি ৫৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা ব্যয়ে ১ কোটি ১০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল এবং ৭৩ কোটি ২৮ লাখ টাকায় আট হাজার টন মুসর ডাল ক্রয়ের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর ভাষণে ‘চোরা না শুনে ধর্মের কাহিনী’ বক্তব্যকে প্রাধান্য দিয়ে সিন্ডিকেট কারসাজির বিরুদ্ধে কোন নমনীয় দৃষ্টিভঙ্গি নয়; দেশ ও জনগণের সার্বিক স্বার্থ নিশ্চিতকরণে বর্তমান সরকারের সফলতা-সার্থকতার আকাশচুম্বী ভাবমূর্তি সুরক্ষায় কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ অতীব জরুরি মনে করি।

লেখক : শিক্ষাবিদ, সমাজ-অপরাধবিজ্ঞানী, সাবেক উপাচার্য চ.বি