দুর্যোগে অসহায়দের পাশে আলোর আশা ফাউন্ডেশন

111

প্রাণসংহারী নভেল করোনা (কভিড-১৯) ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ও খাদ্য সংকট মোকাবেলায় সুবিধাবঞ্চিত ও মধ্যবিত্ত অসহায় পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে আলোর আশা যুব ফাউন্ডেশন। এই ফাউন্ডেশনের সদস্যবৃন্দ করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে প্রচার চালানোর অংশ হিসেবে প্রায় ১,০০০ সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের মাঝে জীবানু নাশক সাবান ও বিনামূল্যে হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ করেছে। পাশাপাশি ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ও নির্দিষ্ট কিছু সামাজিক শিষ্টাচার পালনের মাধ্যমে সংক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে পথচারি ও বিভিন্ন বস্তীতে ভাইরাস প্রতিরোধে লিফলেট, হ্যান্ড গøাভস ও মাস্ক বিতরণ ও করেছে। এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে আলোর আশা যুব ফাউন্ডেশন এর প্রধান নির্বাহী পরিচালক মুহাম্মদ আনোয়ার এলাহি ফয়সাল বলেন, করোনা যেহেতু সাধারণ মানুষের জন্য নতুন ও অনাকাঙ্খিত একটি বিষয় তাই এ সংকট মোকাবেলায় আমাদের সদস্যরা বিভিন্ন স্থানে যেমনঃ রেল স্টেশন, বস্তি ও মসজিদে সাধারণ মানুষের নিকট সচেতনতার বিষয়গুলো তুলে ধরেন। সংক্রমণ মোকাবিলায় সরকারের গৃহীত পরিকল্পনাকে সাধুবাদ জানিয়ে তিনি আরও বলেন আমরা একদম মাঠ পর্যায়ে থেকে কাজ করছি। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে লক ডাউন দেয়ায় বিপাকে পড়েছে সাধারণ মানুষ। অনেকের ঘরে নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য দূর্যোগ দেখা দিয়েছে। অনেক অসহায় খেটে খাওয়া মানুষ না খেয়ে জীবন যাপন করছে কর্মহীনতার কারনে। তাই সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের জন্য প্রতিদিন একবেলা খাবার এবং মধ্যবিত্ত পরিবারের নিকট সাপ্তাহিক বাজার পৌঁছে দিতেই কাজ করছে আমাদের মানবতার সৈনিকরা। সংস্থার সিনিয়র সহ-সভাপতি মুরাদ শামসুল আলম খাঁন বলেন, করোনা ভাইরাস নিয়ে সবচেয়ে বড় ঝুঁকিতে ঘনবসতি বাংলাদেশ। এই দূর্যোগ মোকাবেলায় সর্বপ্রথম রক্ষা করতে হবে অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের। আমরা চেষ্টা করেছি স্বাস্থ্য সচেতনতার প্রসার ঘটাতে, পথশিশু সুরক্ষা নিশ্চিত করতে, খাদ্য সংকট মোকাবিলায় অসহায় সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের পাশে দাঁড়াতে। এ পর্যন্ত প্রায় ২০৩ পরিবারকে সাপ্তাহিক বাজার পৌঁছানো হয়, আলোর আশা সদস্যদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও আমাদের শুভাকাঙ্খীদের সহযোগীতার মাধ্যমে। সমাজের সকল বিত্তবান ও হৃদয়বান মানুষরা এগিয়ে আসলে সম্ভব হবে বাকি পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়ানোর। দেশের ক্রান্তিলগ্নে সবকিছু অচল অবস্থায় মধ্যবিত্তদের ঘরে ঘরে খাবার পৌঁছানো সম্ভব হতনা! যদি না এগিয়ে আসতো আগ্রবাদ রাইডারস গ্রæপের সকল সদস্যবৃন্দ। তারা আলোর আশার সদস্যদের সাথে একাত্ম হয়ে মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোর ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়েছে মধ্য বিত্তদের জন্য হাট বাজার উপহার। আলোর আশা যুব ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম বলেন, সারা শহরব্যাপী সচেতনতা বৃদ্ধির প্রাণপণ চেষ্টা করছি এবং সম্মিলিতভাবে সব ধরণের সহায়তা নিশ্চিত করছে আমাদের স্বেচ্ছাসেবীরা। শহরের বিভিন্ন স্থানে বিশেষ করে লোক সমাগমের স্থানে দিনব্যাপী জীবাণু নাশক স্প্রে করছি। এপেক্স বাংলাদেশ জেলা ০৩ এর সহযোগিতায় সবার কাছে পরিস্কারভাবে হাত ধোয়ার জন্য ৫ টি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পানির ড্রাম ও সাবানের ব্যবস্থা করেছি। বার্তা পৌঁছে দিয়েছি হাত ধোয়ার কোন বিকল্প নেই এ ভাইরাস প্রতিহত করতে। আমাদের রয়েছে সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের নিয়ে কাজ করার দীর্ঘ অভিজ্ঞতা, সে অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে এ সংক্রমণ প্রতিরোধে যাবতীয় নিয়ম মেনে আমরা মাঠ পর্যায়ে থেকে কাজ করছি এবং করোনা মোকাবেলায় আমাদের পাঁচটি ইউনিট তৈরী করা হয়েছে। সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের খাবার বিতরণে রয়েছে তৌফিকুর রহমান ইমন, মানিক আহমেদ, মোহাম্মদ কাইয়ূম। দূর দুরান্তে মধ্যবিত্ত পরিবারের ঘরে ঘরে বাজার পৌঁছাতে কাজ করছে- জোবায়েদ হোসেন, কুতুব উল্ল্যাহ শাহ সোহেল, মোরশেদ আহমেদ শান্ত, সুমন দে, রহিম উল্ল্যাহ, মাহফুজুর রহমান সহ আরো অনেকে। এই দূর দুরান্তে বাজার পৌঁছে দিতে আমাদের বাইক সার্ভিস দিচ্ছে আগ্রাবাদ রাইডারস গ্রূপের সকল সদস্যবৃন্দ। এছাড়াও মধ্যবিত্ত পরিবারের সার্বিক অবস্থা যাচাই করছে শাহরিয়ার পিপলু ও রিশাত।
এছাড়া তথ্য ও ফাইনান্স বিষয় নিয়ন্ত্রণ করছে ওমর ফারুক বিপ্লব, আব্দুল্লাহ আল নোমান, নওশাদ হাসান রাজু ও তৌফিক রবিন। প্যাকিং কার্যক্রমে রয়েছে ত্রাণ ও দূর্যোগ বিষয়ক সম্পাদিকা কামরুন নাহার ও মুক্তা শিকদারের নেতৃত্বে আলোর আশার অন্যান্য সদস্যবৃন্দ। বিজ্ঞপ্তি