দক্ষিণ চট্টগ্রামে পদে পদে যানজট ও ভাড়ানৈরাজ্য

48

আবেদ আমিরী, পটিয়া

রোজা শেষে প্রায় ৯ দিনের ছুটিতে গ্রামমুখী কর্মজীবী মানুষের ঢল নেমেছে। ২৬ রোজার পর থেকেই মানুষের স্রোত বাড়তে থাকে। আর এ সুযোগকে কাজে লাগাচ্ছে পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা। ট্রাফিক পুলিশসহ সংশ্লিষ্টদের নজরদারি না থাকায় গ্রামমুখী যাত্রীদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। বাস মালিক ও শ্রমিকদের মর্জিতে যানবাহন চলাচল করায় ভেঙে পড়েছে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা। গত বৃহস্পতিবার ২৬ রোজা থেকে বাসচালক ও মালিকদের যেন প্রতিদিন চাঁদ রাত। তাদের মর্জির উপর ভরসা করে যানবাহন চলাচল করায় নগরীর শাহ আমানত সেতুর গোলচত্ত¡র, পিএবি সড়ক, শান্তির হাট, দোহাজারী ও কেরানী হাটে সবচেয়ে বেশি যানজট হচ্ছে। দক্ষিণ চট্টগ্রামের যাত্রীদের নগরী থেকে বের হওয়ার মুখেই শাহ আমানত সেতুর নগরী প্রান্তে গোলচত্ত্বরে ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে প্রতিনিয়ত। দক্ষিণ চট্টগ্রামের যাত্রীদের অভিযোগ গোলচত্ত্বর এলাকায় গত কয়েক মাস ধরে যানবাহন চলাচলে কোন ধরনের শৃঙ্খলা না থানায় দিনভর যানজটের সৃষ্টি হয়। গতকাল যানজটের সারি শাহ আমানত সেতুর উপর দিয়ে নদীর দক্ষিণ পর্যন্ত ছাড়িয়ে যেতে দেখা যায়।
জানা গেছে, বিশেষ দিন ছাড়াও সপ্তাহে তিনদিনকে দক্ষিণ চট্টগ্রামের বাসচালক ও মালিকরা চাঁদরাতের মত মনে করেন। তাই যাত্রীদের জিম্মি করেই সিট ক্যাপাসিটির নামে বাসের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে আদায় করা হয় নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি ভাড়া। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার নগরী থেকে ফিরতি পথে এবং শনিবার বিকাল এবং রবিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চলে যাত্রী জিম্মি করার প্রতিযোগিতা। শুধু তিনদিনই নয়, প্রতিদিন সন্ধ্যার পর থেকেই যাত্রীদের জিম্মি করে তিনগুণ পর্যন্ত ভাড়া আদায় এখন নৈমিত্যিক ঘটনা। কিন্তু এর প্রতিকার মিলছে না কোথাও। কয়েকদিন পর ঈদ উল ফিতর। তাই গত বৃহস্পতিবার থেকে গ্রামমুখী যাত্রীদের অন্যদিনের চেয়ে আরো বেশি চাপ তৈরি হয়। আর তাতেই অন্য বৃহস্পতিবারে যেখানে দ্বিগুণ, তিনগুণ ভাড়া আদায় করা হতো, সেখানে গত বৃহস্পতিবার থেকে ভাড়া আদায়ে কোন নির্দিষ্ট সীমা ছিলো না। চরম দুর্ভোগের মাঝে যাত্রীরা ভাড়া কত টাকা নেবে সেদিকে না তাকিয়ে যে যেভাবে পেরেছে বাস, ট্রাকসহ যানবাহনের দিকে গাড়িতে উঠার জন্য প্রতিযোগিতা করেছে। একই অবস্থা হয় সরকারি ছুটি ও বিশেষ দিবসের আগে ও পরের দিনগুলোতেও। এ সময় বাড়তি ভাড়ার ফাঁদে যাত্রীরা অসহায় হয়ে পড়ে। অনেক সময় অতিরিক্ত ভাড়া দিয়েও মেলে না বাস। যাত্রীদের কাছে বাস যেন সোনার হরিণ হয়ে উঠে। বিভিন্ন সময় ক্ষুব্ধ জনতার সঙ্গে পুলিশ, চালক ও মালিকদের সংঘাতের ঘটনাও ঘটে।
যাত্রীরা অভিযোগ করেন, বিশেষ দিবসে সড়কে নামলেই গাড়ি নেই। বেশি ভাড়া দিয়েও গাড়ি পাওয়া যায় না। আবার দেখা যায় এক ঘণ্টার পথ পাঁচ ঘণ্টায় পাড়ি দিতে হয়। এ ব্যাপারে প্রশাসন সম্পূর্ণ নীরব থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন এ সড়কের যাত্রী সাধারণ। সরকারি যে কোন বন্ধ ও উৎসবের সুযোগে দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ ভাড়া আদায় করছে বাস, হাইচ, মাইক্রোর চালক ও হেলপাররা।
এ বিষয়ে কথা বলতে পটিয়া ক্রসিং হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোজাফ্ফরকে ফোন দেয়া হয়। কিন্তু তিনি ফোন না ধরায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।