তুমব্রু গ্রামে আশ্রয় নেয়া ১২১০ রোহিঙ্গাকে ক্যাম্পে স্থানান্তর

13

নাইক্ষ্যংছড়ি প্রতিনিধি

চতুর্থ ধাপে ৪৮৩ জনসহ গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ১২১০ রোহিঙ্গাকে স্থানান্তরিত করা হয় কুতুপালং সংলগ্ন ঘুমধুম ট্রানজিট ক্যাম্পে। পঞ্চম ধাপে আগামী রবিবার নেয়া হবে একশত পরিবারের ৪৩৯ রোহিঙ্গাকে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জাহাঙ্গির আজিজ।
তিনি বলেন, এসময় কক্সবাজারস্থ শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন অফিসের অতিরিক্ত কমিশনার শামছুদৌজ্জা ও কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের ৫ নম্বর ক্যাম্পের সিআইসি (নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট) প্রীতম সাহা এসব তদারকি করেন।
চেয়ারম্যান আজিজ বলেন, তিনি তাদের শুরু থেকে এ পর্যন্ত সহায়তা করে আসছিলেন। গতকাল বৃহস্পতিবারও তিনি তুমব্রু গ্রাম থেকে শূন্যরেখার রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর কার্যক্রমে সার্বিক সহায়তা দেন। তিনি বলেন, গত ২২ দিন ধরে সীমান্ত গ্রাম তুমব্রুতে রোহিঙ্গারা ত্রিপলের তাবুতে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছিলেন। এরই মধ্যে আরআরআরসি ও ইউএনএইচসিআরের হস্তক্ষেপে তাদের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাঠানো হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, তাদের উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩টি শিবিরে আশ্রিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সদস্যদের আদলে আশ্রয় দিতে প্রাথমিকভাবে ট্রানজিট ক্যাম্পে নেয়া হচ্ছে। পরে বিভিন্ন ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেয়া হবে।
একাধিক বিশ্বস্থ সূত্রে জানা যায়, তারই ধারাবাহিকতায় চতুর্থ দফায় তুমব্রু অস্থায়ী শিবির থেকে ৪৮৩ রোহিঙ্গাকে কুতুপালং সংলগ্ন ঘুমধুম ট্রানজিট ক্যাম্পে ঠাঁই দেয়া হয়। ২টি বাসে করে সকাল ৯টা থেকে তাদের পাঠানো হয়। এ সময় গাড়িতে উঠানোর সময় তদারকিতে ছিলেন আরআরআরসি ও ইউএনএইচসিআরের কর্মকর্তারা।
এসব রোহিঙ্গারা আশ্রয় নিয়েছিল তুমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায়। গত ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে তাদের ঘুমধুমস্থ ট্রানজিট ক্যাম্পে নেয়া হচ্ছিলো। গতকাল বৃহস্পতিবার ছিল স্থানান্তরের চতুর্থ দিন। এদিন ৯৯ পরিবারের ৪৮৩ রোহিঙ্গাকে ট্রানজিট ক্যাম্পে পাঠানো হয়।
দায়িত্বরত শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, বৃহস্পতিবারের পর ২দিন সরকারি ছুটির দিন। আগামী রবিবার পঞ্চম পর্বে ১শত পরিবারের ৫৩৯ জন রোহিঙ্গাকে ঘুমঘুম ট্রানজিট ক্যাম্পে স্থানান্তরের জন্য কার্ড দেয়া হচ্ছে।
উল্লেখ্য, তুমব্রু কোনার পাড়া জিরো লাইনে দুই রোহিঙ্গা স্বশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের জের ধরে গত ১৮ জানুয়ারি বিকেলে তুমব্রু গ্রামে আশ্রয় নেন সোয়া ৪ হাজার রোহিঙ্গা। যারা টানা ১৭ দিন এখানে অবস্থান করেন। ১৮ দিনের মাথায় ৫ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ১১টা থেকে তাদের ট্রানজিট ক্যাম্পে সরানো শুরু হয়।
জানা যায়, শূন্যরেখা থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে তুমব্রু গ্রামে এতদিন অবস্থান করছিল ৫৫৮ পরিবারের ২৯৭০ জন রোহিঙ্গা। যাদের মধ্যে ৩৭৭ পরিবারের ২ হাজার ৯৮ জন রোহিঙ্গা নিবন্ধিত। বাকী ১৭৯ পরিবারের ৮৭২ জন রোহিঙ্গা অনিবন্ধিত। এদের মধ্যে কিছু অপরাধীও রয়েছে। যাদের বিষয়ে আইন-শৃংখলা বাহিনী সিদ্ধান্ত নেবেন বলে সংশ্লিষ্টরা সূত্রে জানা গেছে।