ছাদ দেখানোর কথা বলে ধর্ষণের পর হত্যা

103

ওয়ারীর বনগ্রামে শিশু সামিয়া আফরিন সায়মাকে (৭) ছাদ দেখানোর কথা বলে ভবনের ৯ তলার ফাঁকা ফ্ল্যাটে নিয়ে যায় ধর্ষক হারুন অর রশিদ। সেখানে শিশু সায়মাকে ধর্ষণ ও অমানসিক নির্যাতন চালায় সে। একপর্যায়ে সায়মা নিস্তেজ হয়ে পড়ে। মৃত ভেবে তার গলায় দড়ি পেঁচিয়ে টেনেহিচড়ে রান্নাঘরে নিয়ে সায়মাকে সিঙ্কের নিচে রেখে পালিয়ে যায় হারুন।
গতকাল রবিবার দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) আব্দুল বাতেন।
তিনি বলেন, ‘শুক্রবার (৫ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টা থেকে সাড়ে ৬টার মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। ওই দিন সাময়া তার মাকে বলে যায়, ‘ভবনের আট তলায় ফ্ল্যাট মালিক পারভেজের ছোট বাচ্চার সঙ্গে সে খেলবে।
ওই ফ্ল্যাটে গেলে পারভেজের স্ত্রী জানান, তার মেয়ে ঘুমাচ্ছে। এ কারণে সায়মা বাসায় ফিরে আসছিল।’
আব্দুল বাতেন বলেন, ‘ভবনের লিফটে করে নামার সময় সায়মার সঙ্গে পারভেজের খালাতো ভাই হারুনের দেখা হয়। হারুন সায়মাকে ছাদ দেখানোর কথা বলে লিফট থেকে ছাদে নিয়ে যায়। এরপর সে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা করলে সায়মা চিৎকার দেয়। এ সময় সে সায়মার মুখ চেপে ধরে এবং ধর্ষণ করে। পরে সায়মাকে নিস্তেজ দেখে তার গলায় দড়ি পেঁচিয়ে টেনে ফ্ল্যাটের রান্নাঘরে নিয়ে যায়। এরপর সায়মার লাশ সিঙ্কের নিচে রেখে হারুন পালিয়ে তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার তিতাস থানার ডাবরডাঙ্গায় চলে যায়।’
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘অভিযুক্ত আসামি হারুন ওই ভবনের ফ্ল্যাট মালিক পারভেজের খালাতো ভাই। গত দুই মাস ধরে পারভেজের বাসায় থাকতো।’ তিনি জানান, পুরান ঢাকায় পারভেজের রঙের দোকানে কাজ করতো হারুন।
শিশু ধর্ষণের ঘটনাকে মানবতাবিরোধী অপরাধ উল্লেখ করে অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) আব্দুল বাতেন বলেন, ‘এ ধরনের অপরাধীরা সাধারণত ধর্ষণের পর যখন মনে করে বিষয়টি জানাজানি হবে, বা নিজে রেহাই পাবে না, ঠিক তখনই ভুক্তভোগীকে হত্যা করে। মূলত অপরাধ ঢাকতে গিয়ে সায়মাকে হত্যা করেছে হারুন।’ তিনি বলেন, ‘সায়মাদের পরিবারের সঙ্গে পারভেজের পরিবারের ভালো সখ্য ছিল। তবে এই ঘটনায় অন্য কোনও কারণ বা কেউ জড়িত ছিল না। হারুন এটা একাই ঘটিয়েছে।’ বাতেন বলেন, ‘গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে আসামি হারুন ধর্ষণ ও হত্যার কথা স্বীকার করেছে। এখন আসামি হারুনকে আদালতে সোপর্দ করা হবে।’ খবর বাংলা ট্রিবিউনের
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার (৫ জুলাই) সন্ধ্যার পর থেকে শিশু সায়মার খোঁজ পাচ্ছিল না তার পরিবার। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে ভবনের ৯ তলার ফাঁকা ফ্ল্যাটের ভেতরে সায়মাকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান পরিবারের সদস্যরা। খবর পেয়ে রাত ৮টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে।
নিহত সায়মা তার পরিবারের সঙ্গে ওই ভবনের ছয় তলায় বসবাস করতো। শিশু সায়মার বাবা আব্দুস সালাম একজন ব্যবসায়ী। দুই ছেলে ও দুই মেয়ের মধ্যে সবার ছোট সায়মা। ওয়ারী সিলভারডেল স্কুলের নার্সারিতে পড়তো সে।