চসিকের ‘ম্যাজিক বয়’ ও মেয়রের প্রথম সাধারণ সভা

36

সুরেশ কুমার দাশ

চট্টগ্রামকে সুন্দর নগরী গড়ার প্রতিশ্রুতি দীর্ঘদিনের। মেয়র আসছেন, মেয়র যাচ্ছেন। এক একজন মেয়র এই প্রতিশ্রুতি বা আশা দিয়েই যাচ্ছেন। চট্টগ্রামের মেয়র হওয়া মানে যেন শুধু চট্টগ্রামকে সুন্দর করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া। তার সভাসদসহ এই প্রতিশ্রæতি দিয়ে যান। সব মেয়র যদি শুধু গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েই যান, তাহলে গড়া শেষ হবে কবে? আখের পর্যন্ত সৌন্দর্য ও পরিকল্পিত চট্টগ্রাম নগর নিশ্চিত করা যাবে কিনা আদৌ কেউ জানে না।
এই কথা থেকে প্রমাণ হচ্ছে- যিনি মেয়র হয়ে মেয়াদ শেষ করছেন তার সময়ের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন হচ্ছে না। সেই একই প্রতিশ্রুতি। একই কথা। এভাবে তারা বার বার পার পেয়ে যাচ্ছেন। তার মানে পাঁচ বছর ধরে মেয়ররা কি করেন। পাঁচ বছরে নগরের কি পরিবর্তন হচ্ছে। কি পরিবর্তন আসে এখানে। মেয়র না থাকলে কেমন হতো এই নগর। মেয়র থাকলেই বা কি হচ্ছে। এমন প্রশ্ন করলে নগরবাসীর কাছে ধাঁধাঁর মত লাগতে পারে। সকালের সূর্য দেখে- দিনের বার্তা আঁচ করা যায়। এমন অশায় বর্তমান মেয়র ১০০ দিনের একটি কর্মসূচী হাতে নিয়েছেন- নগর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করতে। আর মশা মারতে। কিন্তু শুরুতেই এই মশার ঔষধ নিয়ে সন্দেহ মেয়র- কাউন্সিলর সকলের। নগরবাসী অনেকদিন ধরে এই সন্দেহ করে আসছিলেন। সাধারণ সভায় মেয়র-কাউন্সিলর সকলেই এই মশার ঔষধ নিয়ে নাখোশ ছিল। বলা হচ্ছে – মশার ঔষধ মানসম্পন্ন নয়, ফগার মেশিন কাজ করছে না। তাহলে কিভাবে তার ১০০ দিনের কর্মসূচী বাস্তবায়ন করবেন। সকালের সূর্যটা কি আভাস দিচ্ছে। যদিও আমরা পূর্বাভাসে হতাশ হতে চাইনা।
হয়তো এই কারণে সাধারণ সভায়- একজন কাউন্সিলর(জনাব মোবারক আলী) মেয়রের ১০০ দিনের কর্মসূচি নিয়ে বলেছেন- মেয়রের ১০০ দিনের কর্মসূচি দেওয়ার আগে ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের সঙ্গে বসে আলোচনা করা উচিত ছিল। এটা শুধু উচিত ছিলই নয়, উচিত কথাও। সবগুলো ওয়ার্ড নিয়ে নগর। সুতরাং ওয়ার্ড কাউন্সিলদের মতামত এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ওয়ার্ডে বিচরণকারী প্রতিনিধি তারাই। ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের মতামত মানে নগরবাসীর মতামত।
২৩ ফেব্রুয়ারি রেজাউল সাহেবের প্রথম সাধারণ সভায় কথা উঠেছে পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের নিয়ে। ঝাড়ুদারদের নিয়ে। নালা নর্দমা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাকারীদের নিয়ে। যাদের সহজে কেউ দেখেনা নগরীর ড্রেন-নর্দমা পরিষ্কার করতে। ৮ ঘণ্টার জায়গায় বড়জোর ২/৩ ঘণ্টা। তাও ড্রেনের ময়লা তুলে ড্রেনের পাশে ফেলে উধাও। এসব আবর্জনা আবার ওই ড্রেনেই গিয়ে পড়ে। বর্ষা হলে তো কথাই নেই। তাদের নালা-ড্রেন পরিষ্কার করার বিষয়টা একটা ম্যাজিকের মত। প্রথম সাধারণ সভায় এই ‘ম্যাজিক বয়’দের ম্যাজিক নিয়ে বেশ আলোচনা হয়।
দেখা গেছে – গত মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের সময়ে। তখন মেয়র হওয়ার পর উনার ‘গ্রিন সিটি, ক্লিন সিটি’র প্রচারণা তুঙ্গে। যেদিন যে জায়গায় মেয়র নালা-ড্রেনের ময়লা পরিষ্কার করা হবে সেখানে মেয়র যেতেন উদ্বোধন করার জন্য। তার আগে থেকে মাইকে সিটি কর্পোরেশনের চারপাশে তুমুল পাবলিসিটি। আর দু’চারজন পরিচ্ছন্নতাকর্মির মহড়া। মেয়র সাহেব তো তার রাজনৈতিক কর্মী-সমর্থক দিয়ে ঘেরা। তিনি গেলেন- পরিষ্কার কার্যক্রম উদ্বোধন করলেন। মেয়র আ জ ম নাছির চলে আসলেন। তারপর পরিচ্ছন্নতা কর্মিরা উধাও। বিশেষ করে নালা-ড্রেন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ক্ষেত্রে এটা ছিল সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতা বিভাগের ম্যাজিক। ম্যাজিকের চাবি পরিচ্ছন্নতা বিভাগের হাতে। আর সেবকরা হচ্ছে – ম্যাজিকের কুশীলব।
পত্রপত্রিকায় সাধারণ সভার কিছু কথা দেখা গেছে একটু ভিন্ন মাত্রায়। ঠিক উস্কানিমূলক নয়, বিভ্রান্তি ছড়ানো। মানে বিভ্রান্ত করার জন্য। কারণ যেন তারাও ম্যাজিক জানে। বিভ্রান্তিটা টিকিয়ে রাখা সম্ভব হলে – নগরের কি উন্নয়ন হয়েছে সেটা বড় কথা নয় তারা অনেকে লাভবান হওয়াটা সহজ হবে।
গত মঙ্গলবারের সাধারণ সভা আর মেয়রের আ জ ম নাছিরের সাধারণ সভার মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে এটাই- মেয়র আ জ ম নাছিরের সাধারণ সভায় নগরীর সেবা প্রতিষ্ঠানের প্রধান তথা সরকারের প্রায় প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন। কথা তারাই বলেছেন। আর তখন নাছির সাহেবের বেশ ভালোই গø্যামার। কারণ তিনি এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীকে দলের মনোনয়নে টপকে মেয়র হয়েছিলেন। তখন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সদ্য সাধারণ সম্পাদক। তিনি একজন কর্মিবান্ধব নেতা। সুতরাং মেয়র হওয়ার পর আ জ ম নাছিরের সাধারণ সভায় সমঝদা তথা প্রতিনিধিদের সকলের উপস্থিতি ভালো থাকবে সেটা স্বাভাবিক বটে। এত উপস্থিতি থাকার অর্থ মানুষের বিশাল আগ্রহ ছিল আ জ ম নাছিরকে নিয়ে। রাজনীতিবিদ হিসাবে যেমন সফল তেমনি একজন প্রশাসক হিসাবেও তাকে সফল দেখতে চেয়েছিলেন সকলে। চেয়েছিলেন তাকে একজন যোগ্য, সক্ষম নগরপিতা হিসাবে দেখতে। সেটা কেউ দেখেছে কিনা জানি না। এই দেখা না দেখার হতাশা নগরবাসীর আছে।
হতাশ হতে হতে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নিয়ে মানুষের আর বেশি কোনো আকাক্সক্ষাও নেই। এটা নিয়ে কারো তেমন উৎসাহ নেই। কোনো শোরগোল নেই। নেই কোনো আলোচনাও। আর রাজনৈতিক পরিবেশ-পরিস্থিতির কারণে উৎসাহ-উদ্দীপনাও থমকে পড়েছে। কর্পোরেশনের কাছে নাগরিক প্রত্যাশা কি সেটাও যেন মানুষ ভুলে গেছে। যে কারণে মেয়র রেজাউল করিমের সাধারণ সভায় প্রকৌশলীরা সেই হতাশা নিয়ে বের হয়ে গেছেন কিনা, এটা বিশেষ কোনো গুরুত্ববহ খবর নয়। যেখানে পুরো নগরবাসী হতাশ। মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর পর থেকে এই নগরের মানুষ- হতাশার চৌহদ্দি থেকে বের হতে পারেনি।
তবে এবার প্রথম সাধারণ সভায় ভালো ফ্লোর নিয়ে কথা বলা সুযোগ পেয়েছেন- নবনির্বাচিত কাউন্সিলরবৃন্দ। সেখানে নবনির্বাচিত কাউন্সিলররা যেমন ছিলেন, তেমনি ছিলেন পুরনোদের মধ্যে অনেকে। যারা পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন। তবে এ ধরনের সভায় সদ্য প্রাক্তন কাউন্সিলরদের রাখাটাও প্রয়োজন। সভায় – যারা কাউন্সিলর ছিলেন এর আগের বার তারা যেমন তাদের অভিজ্ঞতাগুলো শেয়ার করেছেন, তেমনি নতুন কাউন্সিলর, যারা সাধারণ নাগরিক হিসাবে সিটি কর্পোরেশনের কাজ দেখেছে- এর আগে, তারা প্রায়ই সরব ছিলেন। অর্থাৎ মেয়র যাদের নিয়ে কাজ করবেন তাদের কথা কথাগুলো শুনেছেন। এ রকম শোনাশুনির মধ্যেই নালা-ড্রেন পরিষ্কারকারী ‘ম্যাজিক বয়’দের কথা বার বার এসেছে। আট ঘণ্টার জায়গায় দু’ ২/৩ ঘণ্টা কাজ করে উধাও হয়ে যাওয়া। হালকা পাতলা ড্রেনের বর্জ্য তুলে ড্রেনের পাড়ে ফেলা। পরে এসব ময়লা আবার ড্রেনেই গিয়ে পড়েই। বর্ষাকালে তো পড়েই পড়ে। এসবের দায় বর্তেছে – প্রধান পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তার উপর। জবাবে তিনি বললেন- তার যথাযথ জনবল না থাকার কথা। কিন্তু ২/৪ ঘণ্টা কাজ করে এরা কোথায় উধাও হয়ে যায় ‘ম্যাজিক বয়রা’ সেই কথার কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি। আর সিটি কর্পোরেশনের ঝাড়ুদাররা যে নগর ঝাড়– দিতে দিতে ময়লা নালায় ফেলছে সেই কথাও এসেছে সেখানে।
এই ঝাড়–দার অর্থাৎ এক সময় যাদের মেথর, সুইপার বলা হত। তাদের চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরী ‘সেবক’ পরিচয়ে ড্রেস দিয়ে সম্মানিত করেছিলেন। মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরী কাউকে সম্মান যেমন দিতেন তেমনি শাসনও করতেন। কাজ আদায় করতেন। এসব বলা মানে ‘সেই রামও নেই সেই অযোধ্যাও নেই’ এর গল্প বলা।
তাদের কথা বলতে বলতে ‘মহামান্য জনগণ তথা সম্মানিত নগরবাসীর’ কথাও উঠেছে সেখানে। যারা ঝাড়–দারদের মত ময়লা-আবর্জনা ড্রেনে ফেলে আসছে। যেখানে সম্মানিত নগরবাসী আর এই ঝাড়ুদার তথা সেবকদের চরিত্রে ইতর বিশেষ পার্থক্য নেই। এই নগরবাসী যদি সচেতনভাবে ময়লাগুলো নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলার ব্যবস্থা করত তাহলে ময়লা নিয়ে এত দক্ষযজ্ঞের কথা আসত না। সিটি কর্পোরেশনের ঘুম হারাম হত না। ময়লার ব্যবসা হতো না। যদিও এখন কিছুটা ব্যবস্থাপনায় এসছে গৃহস্থালী বর্জ্য। কিন্তু ফুটপাতওয়ালা ব্যবসায়ী, দোকানদার সকলে ময়লা-আবর্জনা ড্রেনে ফেলে। শহরে দোকানদার আর ব্যবসা ছাড়া আছে কি। তাদের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কথা বেশি বলতে হবে। আর স্থাপনা ভাঙাভাঙি, নির্মাণের বর্জ্য তো আছেই। ওয়াসার সড়ক কাটাকাটির মাটি, বর্ষায় নেমে আসা পাহাড় কাটার মাটি। এসব নিয়ে কোথাও কোনো ব্যবস্থাপনা নেই।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের মেয়র হিসাবে সবচেয়ে সফলতার গল্প হচ্ছে – তিনি ময়লা ফেলার জন্য সবার ঘরে ঘরে ২০/৩০ টাকা দামের একটা ঝুড়ি পৌঁছে দিয়েছিলেন। দোকানে দোকানেও দিয়েছিলেন। তখন পরিচ্ছন্নতার প্রচারণাটা জনগণের কাছে পৌঁছে যাচ্ছিল, কিছুটা সাড়াও পড়েছিল। তখন এই কথাও তিনি কোথাও কোথাও বলছিলেন ড্রেনে ময়লা ফেললে শাস্তি পেতে হবে। মোবাইল কোর্ট হবে। তখন অনেক মার্কেটের চারপাশ সাফসুতরো করে ফেলছে। কিন্তু হঠাৎ তিনি বেঁকে বসলেন- তিনি বলতে লাগলেন- আমাকে অনেকে বলছেন- শুধু শুধু মানুষের শত্রু হওয়ার কোনো দরকার নেই। এভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে শাস্তি দেওয়া বা মোবাইল কোর্ট চালনার জায়গা থেকে তিনি সরে গেলেন। তিনি পিছটান দিলেন এমন সময়ে যখন নগরী পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে মানুষের মনে একটু দোলা দিয়েছির। তার চুপসে যাওয়ায় সেটা ভেস্তে গেল। মানুষের মধ্যে একটা প্রস্তুতি শুরু হয়েছিল, সেটা আর থাকল না। এরপর ড্রেনের দিকে ফিরে তাকানোর কোনো গরজ বোধ করেনি সিটি কর্পোরেশন। আসলে সিডিএ-কে জলাবদ্ধতার প্রকল্পের দায়িত্ব দেওয়ায় তিনি মনোক্ষুণ্ন ছিলেন। কিন্তু রেজাউলের এই সাধারণ সভায় কাউন্সিলরা স্বীকার করেছেন সিডিএ যতই কাজ করুক জলাবদ্ধতা নিয়ে, কিন্তু এরপরও সিটি কর্পোরেশনের দায়িত্ব এড়াতে পারে না। কারণ জনগণের কাছে তাদেরই জবাবদিহি করতে হয়।
জলাবদ্ধতার প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প পেয়ে বেশ চনমনে হয়ে উঠেছিলেন তখনকার সিডিএ চেয়ারম্যান। তখন বাধ্য হয়েই তাকে বলতে হচ্ছে ড্রেন, নর্দমা ও খাল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার কথা। তিনি কোথা কোথাও বলতে শুরু করলেন, যারা খালের পাড়ে বসত করে তাদের দ¦ারে দ্বারে গিয়ে করজোরে বলব, যাতে খালে ময়লা আবর্জনা না ফেলে। তিনি সেজন্য প্রস্তুত।
সমস্যা হচ্ছে এখানে পদ পদবী ছাড়া জনসেবা বলতে আমরা যা বুঝি তা সামান্যই। কিন্তু মানুষকে বোঝানোর, প্রচারণার এবং শেষ পর্যন্ত শাস্তি দেওয়ার ব্যবস্থা না করলে নগর পরিষ্কার রাখার দায়িত্ব কেউ বুঝবে না। একজন কাউন্সিলর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন নগরী গড়ার ক্ষেত্রে বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী, এলাকার যুবকদের সংগঠিত করার কথাও বলেছেন। এটাও এক ধরনের মোটিভেশন। অন্তত তাদের মাধ্যমে একটা বার্তা ঘরে ঘরে পৌঁছাতে পারে।
মেয়র মঞ্জুর আলমের সময় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান একবার ডাস্টবিন পরিষ্কার করেছিলেন। এতে সিটি কর্পোরেশন কিংবা নগরবাসীরা কেউ লজ্জাবোধ করেনি। আর দায়িত্বে নিয়োজিতরা কেউ ভুলেও তাকে বাহবা দেননি। তাকে অনুসরণ করা তো দূরের কথা।
শুধু পরিচ্ছন্নতাকর্মী বা তাদের বিভাগকে দায়ি করলে কারো দায়িত্ব শেষ হয় না। নগর পরিকল্পনা ও প্রকৌশল বলে কিছু বিষয় থাকতে পারে। যেসব ড্রেন পরিষ্কার কথা বলা হচ্ছে সেসব ড্রেন কোন পরিকল্পনায় তৈরি করা হয়েছে- সে প্রশ্ন আসে। ড্রেনের উপর স্ল্যাব বসানো। তাও এমন ¯স্ল্যাব , সেগুলো আবার সরানোর জন্য আলাদা মানুষ ছাড়া উপায় নেই। কেনো কোনো জায়গায় দেখা গেছে – ড্রেন পরিষ্কার করতে গেলে স্ল্যাব ভাঙ্গতে হচ্ছে। আবার শুধুই স্ল্যাব নয়, ড্রেনের উপর স্ল্যাব , তার উপর আবার টাইলস বসানো হয়েছে। যতবার ড্রেন পরিষ্কারের কথা আসছে কোথাও কোথাও স্ল্যাব আর টাইলস ভাঙ্গতে হচ্ছে। জনগণের এত ঘাম-শ্রমের টাকা অপচয় করতে বিন্দুমাত্র বিবেকবোধ কাজ করে না চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনওয়ালাদের। আর ড্রেনের উপর স্ল্যাব বসিয়ে ফুটপাত তৈরি করা কোনো নগর পরিকল্পনার অংশ নয়- এটা একজন প্রকৌশলী লেখা পড়ে জেনেছিলাম। আমাদের উন্নত দেশের লোভ দেখানো হয়- সেসব দেশে বন্দর শহরে কি ড্রেনের উপর স্ল্যাব দিয়ে ফুটপাত বানানো হয়েছে। আর ধান্ধা করার ইচ্ছা হলেই – স্ল্যাব ভেঙে, নালায় ভাঙাভাঙির এসব আবর্জনা ফেলে বিশাল দক্ষযজ্ঞ সৃষ্টি করে ড্রেন পরিষ্কার করা হয়। তাও দু’তিন বছর পর পর। আসলে সে প্রসঙ্গে যাওয়ার কোনো ইচ্ছে নেই। যেটুকু স্বপ্নের চট্টগ্রাম নগরের লোভ দেখানো হয়- সেটা কোনো রকমে জোড়াতালি দিয়ে লজ্জা ঢাকার আকুতি ছাড়া কিছুই নয়।
লেখক : সাংবাদিক